মাশুল কমানোর দাবি বিদ্যুৎ গ্রাহকদের পুলিশের লাঠিচার্জ

বিদ্যুতের উৎপাদন ব্যয় গড়ে প্রতি ইউনিটে ১ টাকা ৩২ পয়সা। সেখানে বন্টন কোম্পানি গড়ে প্রতি ইউনিট ৭ টাকা ১২ পয়সা এবং সিইএসসি ৭ টাকা ৩২ পয়সা আদায় করে গ্রাহকদের কাছ থেকে। এই অন্যায় দাম অর্ধেক করার দাবি বিদ্যুৎ গ্রাহকরা দীর্ঘদিন তুলছেন। কিন্তু সরকার কান দিচ্ছে না।

বিদ্যুতের মতো অতিপ্রয়োজনীয় একটি পরিষেবার চড়া মাশুল ৫০ শতাংশ কমানো সহ ছ’দফা দাবিতে অ্যাবেকার আহ্বানে রাজ্যের বিদ্যুৎ গ্রাহকরা ২৩ জুন কলকাতার ডোরিনা ক্রসিং অবরোধ করে ব্যাপক বিক্ষোভ দেখান। সেখানে বিশাল পুলিশ বাহিনী নিরস্ত্র বিদ্যুৎ গ্রাহকদের উপর লাঠি হাতে ঝাঁপিয়ে পড়ে। পুলিশের আক্রমণে ১১ জন আহত হন। টেনে-হিঁচড়ে ২৯ জন বিক্ষোভকারীকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ লালবাজার সেন্ট্রাল লক-আপে নিয়ে যায়। অ্যাবেকার সাধারণ সম্পাদক সুব্রত বিশ্বাস সহ একজন প্রতিবাদী মহিলা গ্রাহককেও আটক করা হয়। সুব্রত বিশ্বাস বলেন, এদিন সহস্রাধিক বিদ্যুৎ গ্রাহক রামলীলা পার্কে সমবেত হয়ে সুসজ্জিত মিছিল করে ধর্মতলার দিকে এগিয়ে যাচ্ছিলেন দাবি সংবলিত স্মারকলিপি মুখ্যমন্ত্রীর কাছে পৌঁছে দিতে। ডোরিনা ক্রসিংয়ে পুলিশ মিছিল আটকায় এবং মুখ্যমন্ত্রীর উদ্দেশে তৈরি স্মারকলিপি তাদের হাতে দিয়ে দিতে বলে। গ্রাহকরা তা দিতে অস্বীকার করে পুলিশের অগণতান্ত্রিক ভূমিকার প্রতিবাদে ডোরিনা ক্রসিং অবরোধ করলে নেমে আসে নির্মম পুলিশি আক্রমণ।

কেন এই আক্রমণ? এলপিএসসি বাৎসরিক ২৪ শতাংশ থেকে কমিয়ে ব্যাঙ্ক রেটে করা, পাঞ্জাব, হরিয়ানা, অন্ধ্রপ্রদেশ, তামিলনাড়ূ, তেলেঙ্গানা রাজ্যের মতো এ রাজ্যের কৃষিতে বিনামূল্যে বিদ্যুৎ দেওয়া, ক্ষুদ্রশিল্পে ফিক্সড চার্জ নেওয়া বন্ধ করা, গার্হস্থে্য ব্যবহৃত বিদ্যুতের ১০০ ইউনিট বিনামূল্যে দেওয়ার দাবিতে এর আগে ডব্লুবিএসইডিসিএল, ডব্লুবিইআরসি-র চেয়ারম্যান, সিইএসসি কর্তৃপক্ষ এবং বিদ্যুৎমন্ত্রীর কাছে স্মারকলিপি দিয়ে আলোচনা হয়েছে। সকলেই মুখ্যমন্ত্রীর কাছে দাবি জানাতে বলেছেন।

তাই মুখ্যমন্ত্রীর কাছে দাবি পৌঁছে দিতে এদিন গ্রাহকদের ছিল স্মারকলিপি প্রদানের কর্মসূচি। সেই শান্তিপূর্ণ কর্মসূচিতে পুলিশ লেলিয়ে দিয়ে আলাপ-আলোচনার মাধ্যমে সমস্যা সমাধানের গণতান্ত্রিক রীতি দু-পায়ে মাড়িয়ে গেল রাজ্যের তৃণমূল কংগ্রেস সরকার। একচেটিয়া বিদ্যুৎ ব্যবসায়ীদের স্বার্থে রাজ্য সরকারের এই ন্যক্কারজনক ভূমিকাকে ধিক্কার জানিয়ে বিদ্যুৎগ্রাহকরা ২৪ জুন সারা বাংলা প্রতিবাদ দিবস পালন করেন। অ্যাবেকার সভাপতি অনুকূল ভদ্র গ্রাহকদের কাছে আন্দোলনকে তীব্র করতে এলাকায় এলাকায় গ্রাহক কমিটি গড়ে তোলার আহ্বান জানান।