বাইক ট্যাক্সি চালকদের আন্দোলনের জয়

ফাইল চিত্র

দীর্ঘ আন্দোলনের মধ্য দিয়ে লাইসেন্স ও পরিবহণ শ্রমিকের স্বীকৃতির দাবি আদায় করলেন কলকাতার বাইক ট্যাক্সি চালকরা।

ওলা, উবের রাপিডো ইত্যাদি বহুজাতিক সংস্থার বাইক-ট্যাক্সির কমার্সিয়াল লাইসেন্স, চালকদের পরিবহণ শ্রমিকের স্বীকৃতি ইত্যাদি কোনও দাবিই সরকার কিংবা কোম্পানিগুলি এতদিন ধরে মানছিল না। বহুজাতিক এই সংস্থাগুলি ভাড়ার ৩০ শতাংশেরও বেশি প্লাটফর্ম চার্জ হিসেবে কেটে নিচ্ছিল। এই বিপুল চার্জ ও তেলের মূল্যবৃদ্ধির ফলে বাইক ট্যাক্সি চালকরা প্রবল সমস্যায় পড়েন। প্রতিবাদ করলে বা সামান্য অভিযোগ এলেই চালকদের ‘আইডি’ ব্লক করে দেয় সংস্থা।

এআইইউটিইউসি অনুমোদিত কলকাতা সাবার্বান বাইক ট্যাক্সি অপারেটর্স ইউনিয়ন চালকদের দাবিগুলি নিয়ে বেশ কিছুদিন ধরে আন্দোলন করে আসছে। পরিবহণ মন্ত্রী, কলকাতার পুলিশ কমিশনার ও সার্ভিস প্রোভাইডার সংস্থার দপ্তরে বিক্ষোভ দেখিয়েছে ইউনিয়ন। ১৪ নভেম্বর ব্যাপক জমায়েতের মধ্য দিয়ে পরিবহণ মন্ত্রীকে স্মারকলিপি দিয়ে ইউনিয়ন ওলা, উবের, রাপিডোর জুলুমবাজি ও শ্রমিক শোষণের বিরুদ্ধে ত্রিপাক্ষিক আলোচনার দাবি জানায়।

২১ ফেব্রুয়ারি পরিবহণ মন্ত্রী তাঁর দপ্তরের ময়দান টেন্টে অ্যাপ ক্যাব নিয়ন্ত্রিত পরিবহণ ক্ষেত্রের শ্রমিক ইউনিয়ন ও ক্যাব সংস্থাগুলির ম্যানেজমেন্টকে নিয়ে সভা ডাকেন। কলকাতা সাবার্বান বাইক-ট্যাক্সি অপারেটর্স ইউনিয়নের সভাপতি কমরেড শান্তি ঘোষের নেতৃত্বে ইউনিয়নের সহ-সম্পাদক কমরেড দেবাশীষ মল্লিক ও সহ-সভাপতি কমরেড দীপক মালাকার সেখানে শ্রমিক ও সাধারণ যাত্রীদের স্বর্থের দাবিগুলি তুলে ধরেন। অন্যান্য সংগঠন তেলের মূল্যবৃদ্ধির জন্য ভাড়া বৃদ্ধির দাবি জানালেও এআইইউটিইউসি অনুমোদিত ইউনিয়ন প্ল্যাটফর্ম চার্জ কমানো এবং পরিবহণ ক্ষেত্রে ব্যবহৃত তেলের উপর সেস কমিয়ে যাত্রীদের ওপর বোঝা না চাপানোর দাবি করে। মন্ত্রী ঘোষণা করেন, যাত্রী পরিবহণে ব্যবহৃত বাইকের বাণিজ্যিক লাইসেন্স দিতে ক্যাম্প করা হবে, কোম্পানিগুলি যাত্রীদের থেকে আদায় করা ভাড়ার ৮০ শতাংশ তেল, গাড়ির ভাড়া ও চালকের মজুরি বাবদ দিতে বাধ্য থাকবে। আত্মপক্ষ সমর্থনের সুযোগ না দিয়ে কোনও আইডি বন্ধ কর়া যাবে না। বন্ধ আইডিগুলি অবিলম্বে খুলে দিতে হবে। দুর্ঘটনাজনিত ক্ষতিপূরণের বিষয়ে সরকার নজরদারি করবে। কোম্পানিগুলিকে ২৪ ঘন্টা অফিস খোলা রাখতে হবে। চালকদের পরিবহণ কর্মীর স্বীকৃতির দাবিও তিনি মানেন। কমরেড শান্তি ঘোষ বলেন, এটা সঠিক নেতৃত্বে আন্দোলনের জয়। ২০ মার্চ কলকাতার সুবর্ণ বণিক সমাজ হলে ইউনিয়নের প্রথম সম্মেলন অনুষ্ঠিত হবে।