রাষ্ট্র ও বিপ্লব (৮)— ভি আই লেনিন

 

এ বছরটি বিশ্বসাম্যবাদী আন্দোলনের মহান নেতা ও রুশ বিপ্লবের রূপকার কমরেড লেনিনের মৃত্যুশতবর্ষ। এই উপলক্ষে দলের পক্ষ থেকে বর্ষব্যাপী নানা কর্মসূচি গ্রহণ করা হয়েছে। তারই অঙ্গ হিসাবে ভি আই লেনিনের ‘রাষ্ট্র ও বিপ্লব’ রচনাটি ধারাবাহিক ভাবে প্রকাশ করা হচ্ছে। অনুবাদ সংক্রান্ত যে কোনও মতামত সাদরে গৃহীত হবে। এ বার অষ্টম কিস্তি।

ধ্বংসপ্রাপ্ত রাষ্ট্রযন্ত্রের স্থান পূরণ হবে কী দিয়ে

১৮৪৭ সালে কমিউনিস্ট ম্যানিফেস্টোতে, এই প্রশ্নে, মার্ক্সের উত্তর ছিল একেবারে বিমূর্ত ধরনের। বা আরও সঠিকভাবে বলতে গেলে, এই উত্তর কর্তব্যের প্রতি অঙ্গুলি নির্দেশ করেছে, কিন্তু কী ভাবে তা সম্পন্ন করা যাবে সেই বিষয়ে কোনও কথা বলেনি। কমিউনিস্ট ম্যানিফেস্টোতে যে উত্তর দেওয়া হয়েছে তা হল, এই রাষ্ট্রযন্ত্রের স্থান পূরণ হবে গণতন্ত্রের সংগ্রামে জয়ী হওয়ার মধ্য দিয়ে শাসক শ্রেণি হিসাবে সংগঠিত সর্বহারা শ্রেণির দ্বারা।

কল্পনাবিলাসকে প্রশ্রয় না দিয়ে মার্ক্স আশা করতেন শাসক শ্রেণি হিসাবে সর্বহারার সংগঠন কী রূপ ধারণ করবে এবং ‘গণতন্ত্রের যুদ্ধ জয়ের’ সাথে এই সংগঠনের সর্বাধিক পরিপূর্ণ ও সামঞ্জস্যপূর্ণ সংযোগ কী ভাবে সাধিত হবে, সেই প্রশ্নের উত্তর গণআন্দোলনের অভিজ্ঞতা থেকেই পাওয়া যাবে।

প্যারিস কমিউনের অভিজ্ঞতা যত অল্পই হোক, মার্ক্স সেই অভিজ্ঞতাকে অত্যন্ত যত্ন সহকারে তাঁর ‘দ্য সিভিল ওয়ার ইন ফ্রান্স’ (‘ফ্রান্সে গৃহযুদ্ধ’) গ্রন্থে বিশ্লেষণ করেছিলেন। এই গ্রন্থের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ অনুচ্ছেদের উদ্ধৃতি দেওয়া যাক।

‘‘মধ্যযুগে সৃষ্টি হয়ে ঊনবিংশ শতাব্দীতে কেন্দ্রীভূত রাষ্ট্রশক্তি বিকশিত হয়, গঠিত হয় ‘স্থায়ী সেনাবাহিনী, পুলিশ, আমলাতন্ত্র, যাজকতন্ত্র, ও বিচারবিভাগ সহ এর সর্বব্যাপক যন্ত্রগুলি। পুঁজি ও শ্রমের মধ্যে শ্রেণিবিরোধ যতই বাড়তে থাকে ততই রাষ্ট্রশক্তি শ্রেণি শাসনের হাতিয়ার হিসাবে শ্রমিক শ্রেণিকে দমনের জন্য পুঁজির একটা জাতীয় শক্তির আকার ধারণ করতে থাকে। রাষ্ট্র হয়ে পড়তে থাকে সমাজকে দাসত্বের নিগড়ে আবদ্ধ করার একটা সেনাবাহিনী, শাসক শ্রেণির স্বৈরাচারী শাসনের চালিকা শক্তি। প্রতিটি বিপ্লবই শ্রেণি সংগ্রামের অগ্রগতির পর্যায় সূচিত করে। কিন্তু এই বিপ্লব সৃষ্ট রাষ্ট্র নিজের দমনমূলক চরিত্রকে ক্রমাগত স্পষ্ট থেকে স্পষ্টতর করে দিতে থাকে। ১৮৪৮-৪৯ সালের বিপ্লবের পর রাষ্ট্রশক্তি শ্রমের বিরুদ্ধে পুঁজির লড়াইয়ের একটা জাতীয় যুদ্ধবাহিনীতে পরিণত হয়েছিল। দ্বিতীয় সাম্রাজ্য একে আরও সংহত করেছিল।’’ সাম্রাজ্যের সরাসরি বিপরীত হল কমিউন। কমিউন ছিল এমন এক প্রজাতন্ত্রের সুনির্দিষ্ট রূপ যা শ্রেণি-শাসনের রাজতান্ত্রিক রূপকেই শুধু খতম করে দিতে পারত না, খতম করে দিতে পারত সব ধরনের শ্রেণি শাসনকেই।”

সর্বহারা, সমাজতান্ত্রিক প্রজাতন্ত্রের ‘সুনির্দিষ্ট’ রূপ কী? কী ধরনের রাষ্ট্র সে সৃষ্টি করতে শুরু করেছিল?

‘‘…কমিউনের প্রথম ডিক্রি ছিল স্থায়ী সেনাবাহিনীকে দমন করা এবং সশস্ত্র জনগণের শক্তি দিয়ে তাকে প্রতিস্থাপিত করা।’’

নিজেদের সমাজতন্ত্রী হিসাবে দাবি করে, এমন প্রতিটি পার্টির কর্মসূচিতেই আজকাল এই দাবিটি দেখতে পাওয়া যায়। কিন্তু সোসালিস্ট রেভোলিউশনারি ও মেনশেভিকদের কর্মসূচির যথার্থ চরিত্র আমরা তখনই বুঝতে পারব, যখন দেখব, ২৭ ফেব্রুয়ারির বিপ্লবের ঠিক পরে পরেই তারা প্রকৃতপক্ষে এই দাবিটি বাস্তবায়িত করতে অস্বীকার করল।

‘‘মিউনিসিপ্যালিটির কাউন্সিলরদের নিয়ে কমিউন গঠিত হয়েছিল। এই কাউন্সিলররা নির্বাচিত হয়েছিলেন প্যারিস শহরের নানা ওয়ার্ডের মানুষের সার্বজনীন ভোটাধিকারের ভিত্তিতে। তাঁরা ছিলেন নির্বাচকদের কাছে দায়বদ্ধ এবং যে কোনও সময় এঁদের দায়িত্ব থেকে সরিয়ে দেওয়া যেত। স্বাভাবিকভাবেই, এই সদস্যদের অধিকাংশই ছিলেন শ্রমিক অথবা শ্রমিক শ্রেণির নির্বাচিত প্রতিনিধি। … সরকারের যন্ত্র হিসাবে কাজ করার পরিবর্তে তৎক্ষণাৎ পুলিশের রাজনৈতিক পরিচয় বাতিল করে দেওয়া হয়েছিল। এইভাবে পুলিশকে কমিউনের প্রতি দায়বদ্ধ ও যে কোনও সময় পদ থেকে সরিয়ে দেওয়া যায় এমন কর্মচারীতে পরিণত করা হয়েছিল। প্রশাসনের অন্যান্য বিভাগের কর্মচারীদের ক্ষেত্রেও একই ব্যাপার করা হয়েছিল। কমিউনের সদস্য থেকে শুরু করে নিচুতলা পর্যন্ত সরকারি কাজে নিযুক্ত প্রত্যেক কর্মীকে ‘শ্রমিকের মজুরি’ নিয়ে কাজ করতে হত। রাষ্ট্রের বিশিষ্ট উচ্চ পদাধিকারীদের বিলোপের সঙ্গে সঙ্গেই তাদের বিশেষ অধিকার ও বিশেষ সাম্মানিক বিলুপ্ত করা হয়েছিল।

…পুরনো সরকারের দমনের যন্ত্র স্থায়ী সেনাবাহিনী ও পুলিশের হাত থেকে মুক্তি পাওয়ার ফলে কমিউন আধ্যাত্মিক দমনশক্তি, যাজকতন্ত্রকে ভাঙার কাজে আত্মনিয়োগ করে। বিচার বিভাগের কর্তারা তাদের মেকি স্বাধীনতা হারায়। …তাদের নির্বাচিত হয়ে আসা, কমিউনের প্রতি দায়বদ্ধ থাকা এবং যে কোনও সময় তাদের ফিরিয়ে আনা যাবে– এমন ব্যবস্থা হয়।

এইভাবে স্থায়ী সেনাবাহিনীর অবলুপ্তি ঘটিয়ে, সমস্ত সরকারি কর্মচারীদের নির্বাচিত হওয়া এবং তাদের অপসারিত করার ব্যবস্থা চালু করে কমিউন ধ্বংসপ্রাপ্ত রাষ্ট্রযন্ত্রটির পরিবর্তে ‘কেবলমাত্র’ পূর্ণতর গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করেছিল। যদিও বাস্তবে, এই ‘কেবলমাত্র’ কথাটির তাৎপর্য কোনও প্রতিষ্ঠানকে মৌলিকভাবে আলাদা প্রতিষ্ঠানদ্বারা বিরাট আকারে বদলে ফেলা। ‘পরিমাণগত পরিবর্তনকে গুণগত পরিবর্তনে রূপান্তরিত করা’-র এ হল একটা আদর্শ উদাহরণ। যতটা উপলব্ধি করা যায়, এই হল গণতন্ত্রের পূর্ণতর সুসমঞ্জস রূপ। এখানে বুর্জোয়া গণতন্ত্র সর্বহারা গণতন্ত্রে রূপান্তরিত হয়, রাষ্ট্র (একটা নির্দিষ্ট শ্রেণিকে দমনের বিশেষ শক্তি) রূপান্তরিত হয় এমন একটা কিছুতে যা প্রচলিত অর্থে আর রাষ্ট্র নয়।

বুর্জোয়াদের দমন করা এবং তাদের প্রতিরোধ চূর্ণ করা এখনও প্রয়োজন। কমিউনের জন্য বিশেষ করে এর প্রয়োজন ছিল। এবং কমিউনের পরাজয়ের অন্যতম কারণ, বুর্জোয়াদের দমনের কাজটা তারা যথেষ্ট দৃঢ়তার সাথে করেনি। এর আগে দাস ব্যবস্থায়, সামন্ততন্ত্রে ও মজুরি-দাসত্বের সময়ে সংখ্যালঘুরাই দমনের যন্ত্র হিসাবে কাজ করেছে। কিন্তু, এখন সংখ্যালঘুরা নয়, দমনের যন্ত্র হিসাবে কাজ করছে জনগণের সংখ্যাগরিষ্ঠ অংশ। যেহেতু জনগণের সংখ্যাগরিষ্ঠ অংশ নিজেরাই তাদের নিপীড়কদের দমন করছে, তাই দমনের ‘বিশেষ বাহিনীর’ আর কোনও প্রয়োজন থাকছে না। এই অর্থে রাষ্ট্র বিলুপ্ত হতে শুরু করে। সুবিধাভোগী সংখ্যালঘুর (সুবিধাভোগী আমলাতন্ত্র, স্থায়ী সেনাবাহিনীর প্রধানরা) বিশেষ প্রতিষ্ঠান ছাড়াই, সংখ্যাগুরুরা নিজেরাই সরাসরি এই সব কাজ করতে পারে। যতই রাষ্ট্রযন্ত্রের সব কাজ সামগ্রিকভাবে জনগণ নিজেই করতে থাকে ততই এই বিশেষ শক্তির অস্তিত্বের প্রয়োজনীয়তা কমে যেতে থাকে।

এই প্রসঙ্গে কমিউনের যে সব কাজকে মার্ক্স গুরুত্ব দিয়েছিলেন, তা বিশেষভাবে প্রণিধানযোগ্য। এই সব কাজ হল, সমস্ত প্রতিনিধি ভাতার অবলুপ্তি, সরকারি কর্তাদের আর্থিক সুবিধার বিলোপ, রাষ্ট্রের সমস্ত কর্মচারীদের বেতন কমিয়ে ‘শ্রমিকদের মজুরি’-র সমান করে দেওয়া। এখানে পরিষ্কার দেখা যায়, বুর্জোয়া গণতন্দ্রের থেকে সর্বহারা গণতন্ত্রের দিকে, নিপীড়কদের গণতন্ত্র থেকে নিপীড়িত শ্রেণির গণতন্ত্রের অভিমুখে যাত্রা শুরু হয়েছে। একটা বিশেষ শ্রেণির নিপীড়নের যন্ত্র থেকে রাষ্ট্র সংখ্যাগরিষ্ঠ মানুষের, শ্রমিক-কৃষকের রাষ্ট্র হিসাবে নিপীড়ক শ্রেণিকে দমনের সাধারণ বাহিনীতে পরিণত হয়েছে। এই বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্নে, বোধ করি রাষ্ট্র সম্পর্কে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্নে, মার্ক্সের শিক্ষাকে পুরোপুরি ভুলে যাওয়া হয়েছে! মার্ক্সবাদের অসংখ্য সুলভ ভাষ্য প্রকাশিত হয়েছে, কিন্তু কোনওটিতেই মার্ক্সের এইসব কথার উল্লেখ নেই। এ যেন অতি সরল পুরনো কিছু কথা। তাই এ সম্পর্কে নীরব থাকাই শ্রেয়। ঠিক যেমন রাষ্ট্রধর্ম হিসাবে স্বীকৃতি পাওয়ার পর, খ্রিস্টানরা তাদের গণতান্ত্রিক বিপ্লবী শক্তিসম্পন্ন পুরনো সরল খ্রিস্টধর্মকে ভুলে গিয়েছিল– এও যেন ঠিক তেমন বিষয়।

মনে হতে পারে, উচ্চ পদাধিকারী রাষ্ট্রীয় আমলাদের বেতন কমিয়ে দেওয়া আদিম সরল গণতন্ত্রের দাবি। আধুনিক সুবিধাবাদের অন্যতম ‘প্রতিষ্ঠাতা’, প্রাক্তন সোসাল ডেমোক্র্যাট, এডোয়ার্ড বার্নস্টাইন বারবার ‘আদিম’ গণতন্ত্রকে স্থূল বুর্জোয়া ভাষায় ব্যঙ্গ-বিদ্রুপ করেছেন। সমস্ত সুবিধাবাদীদের মতো এবং বর্তমানের কাউটস্কিপন্থীদের মতো, তিনি একেবারেই বুঝতে পারেননি যে, প্রথমত, কিছুটা পরিমাণে ‘আদিম’ গণতন্ত্রের ফিরে না গেলে পুঁজিবাদ থেকে সমাজতন্ত্রের উত্তরণ অসম্ভব (কারণ, না হলে কেমন করে সংখ্যাগরিষ্ঠ জনগণ ও তারপর ব্যতিক্রমহীনভাবে সমগ্র জনগণ রাষ্ট্রের দায়িত্ব গ্রহণ করবে?)। দ্বিতীয়ত, পুঁজিবাদ ও পুঁজিবাদী সংস্কৃতির উপর দাঁড়ানো ‘আদিম গণতন্ত্র’ ও প্রাক-পুঁজিবাদী সময়ে বা প্রাগৈতিহাসিক যুগের আদিম গণতন্ত্র এক বস্তু নয়। পুঁজিবাদী সংস্কৃতি বৃহদায়তন শিল্প, কলকারখানা, রেলওয়ে, ডাক বিভাগ, টেলিফোন ইত্যাদি সৃষ্টি করেছে এবং এর উপর ভিত্তি করে পুরনো রাষ্ট্রযন্ত্রের প্রায় অধিকাংশ কাজকর্ম অত্যন্ত সহজ সরল হয়ে গেছে। এত সহজ সরল হয়ে গেছে যে, তা রেজিস্ট্রি করা, রেকর্ড করা ও যাচাই করার মতো সহজ কাজে পরিণত হয়েছে। এই কাজ শিক্ষিত যে কোনও মানুষ অত্যন্ত সহজে করতে পারে। সাধারণ শ্রমিকের মজুরিতেই এই কাজ করা সম্ভব। আর এই কাজের সাথে জড়িয়ে থাকা সুবিধাভোগের অধিকার ও পদমর্যাদা একেবারে ঝেঁটিয়ে বিদায় করা যায় (এবং তা করতেই হবে)।

ব্যতিক্রমহীন ভাবে সমস্ত সরকারি কর্মচারীকে নির্বাচিত হতে হবে, তাদের যে কোনও সময় ফিরিয়ে নেওয়া যাবে, তাদের বেতন কমিয়ে সাধারণ ‘মজুরির’ সমান করা হবে– এই সব সরল স্বতঃস্পষ্ট গণতান্ত্রিক পদক্ষেপ শ্রমিক ও অধিকাংশ কৃষকের স্বার্থকে সম্পূর্ণ ভাবে ঐক্যবদ্ধ করে তোলে এবং একই সাথে পুঁজিবাদ থেকে সমাজতন্ত্রের দিকে যাওয়ার সেতু রচনা করে। এই সব পদক্ষেপ রাষ্ট্রের পুনর্গঠনের প্রশ্নের সাথে এবং সমাজের যথার্থ রাজনৈতিক পুনর্গঠনের প্রশ্নের সাথে যুক্ত। কিন্তু অন্যের সম্পদ যারা জোর করে ভোগ দখল করছে, তাদের যখন অধিকারচ্যুত করা যাবে বা সেই কাজ চলতে থাকবে অর্থাৎ যখন উৎপাদনের উপকরণের উপর পুঁজিবাদী ব্যক্তি মালিকানার রূপান্তর ঘটিয়ে সমাজতান্ত্রিক মালিকানায় পরিণত করা যাবে, তখনই এর সম্পূর্ণ অর্থ ও তাৎপর্য স্পষ্ট হবে।

মার্ক্স লিখেছেন, ‘বুর্জোয়া বিপ্লবের সেই মনোহর প্রতিশ্রুতি, কম খরচে সরকার পরিচালনাকে কমিউন বাস্তবে রূপ দিয়েছে। সরকারি ব্যয়ের সবচেয়ে বড় দুটো উৎস– স্থায়ী সেনাবাহিনী ও আমলাতন্ত্রকে কমিউন ধ্বংস করে দিয়েছে।’

কৃষক ও অন্যান্য অংশের পেটিবুর্জোয়াদের মধ্য থেকে একটা নগণ্য অংশ ‘উপরে উঠতে পারে’, বুর্জোয়া অর্থে ‘সংসারে উন্নতি লাভ’ করতে পারে, অর্থাৎ তারা ধনী হয়ে বা বুর্জোয়া হয়ে, কিংবা সুবিধাভোগী আমলায় পরিণত হয়ে নিশ্চিন্ত জীবন যাপন করে। যে সব পুঁজিবাদী দেশে কৃষক আছে (প্রায় সমস্ত পুঁজিবাদী দেশেই আছে), সেই সব দেশে বিপুল সংখ্যাগরিষ্ঠ কৃষকদের সরকার নির্যাতন করে। কৃষকরা সেই সরকারকে উৎখাত করতে চায়, তারা চায় ‘কম খরচে পরিচালিত’ সরকার। সর্বহারা শ্রেণিই একমাত্র এই ধরনের সরকার দিতে পারে। সাথে সাথে এই ধরনের সরকার গঠন করে সর্বহারা শ্রেণি রাষ্ট্রের সমাজতান্ত্রিক পুনর্গঠনের দিকে এক ধাপ এগিয়ে যায়। (চলবে)