বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য প্রাক্তন বিচারপতি!– প্রতিবাদ এআইডিএসও-র

   

রবীন্দ্রভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য হিসেবে প্রাক্তন বিচারপতিকে নিয়োগের তীব্র বিরোধিতা করে এআইডিএসও-পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য কমিটির সম্পাদক বিশ্বজিৎ রায় এক বিবৃতিতে বলেন–রাজ্যপাল কয়েকদিন আগে ঘোষণা করেছিলেন, ছাত্ররাও অন্তর্বর্তীকালীন উপাচার্য হতে পারবেন। ৫ জুলাই রাজ্যপাল প্রাক্তন বিচারপতিকে রবীন্দ্রভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ের অস্থায়ী উপাচার্য হিসেবে নিয়োগের কথা বলেছেন। গোটা রাজ্যে প্রায় ১৮টি বিশ্ববিদ্যালয়ে স্থায়ী উপাচার্য নেই। রাজ্য সরকার কিংবা রাজ্যপাল উভয়েই কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়ের সামগ্রিক পঠন-পাঠনের কথা ভেবে স্থায়ী উপাচার্য নিয়োগের বিষয়টি গুরুত্ব দিয়ে দেখছেন না।

এই অবস্থায় অস্থায়ী উপাচার্য হিসেবে যাঁদের নিয়োগ করা হচ্ছে তাঁদের নিয়েও নানা রকমের জটিলতা দেখা দিচ্ছে। রবীন্দ্রভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য হিসেবে রাজ্যপাল যাঁকে মনোনীত করেছেন তিনি যে বিজেপি এবং আরএসএস ঘনিষ্ঠ, তা কর্ণাটক হাইকোর্টের বিচারপতি থাকা অবস্থায় প্রমাণিত হয়েছে। সেই বিচারপতিকে রবীন্দ্রভারতীর উপাচার্য হিসাবে নিয়োগ করে কেন্দ্রীয় সরকার একদিকে উপাচার্যের মতো উচ্চশিক্ষার গুরুত্বপূর্ণ জায়গাটিকে যেমন লঘু করছেন, তেমনি অন্যদিকে বিশ্ববিদ্যালয়কে মুক্ত ও স্বাধীন চিন্তার পরিবর্তে হিন্দুত্ব প্রচারের ক্ষেত্র হিসেবে ব্যবহার করতে চাইছেন। এ রাজ্যের বহু বিশ্ববিদ্যালয়ে যোগ্য অধ্যাপক থাকা সত্ত্বেও তাঁদের মধ্য থেকে উপাচার্য নিয়োগ না করে প্রাক্তন বিচারপতিকে উপাচার্য হিসেবে নিয়োগ কোনও ভাবেই মানা যায় না। যখন বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে স্থায়ী উপাচার্য না থাকায় প্রশাসনিক কাজ সঠিক সময়ে হচ্ছে না, পরীক্ষার মূল্যায়ন ও ফলাফল প্রকাশ সহ অন্যান্য বিষয়গুলোর ক্ষেত্রে খুবই অবহেলিত হচ্ছে তখন প্রয়োজন ছিল স্থায়ী উপাচার্য নিয়োগ করা। শুধু তাই নয়, বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে উপাচার্য নিয়োগের ক্ষেত্রে ইউজিসি-র যে গাইডলাইন তাতে বলা হয়েছে উপাচার্য হতে গেলে কমপক্ষে ১০ বছরের অধ্যাপনার অভিজ্ঞতা থাকতে হবে। যোগ্যতা এবং অভিজ্ঞতা সম্পন্ন অধ্যাপকরাই অতীতে উপাচার্য হিসেবে বিবেচিত হয়েছেন। রাজ্যপালের এই বিবৃতি ইউজিসির সেই গাইডলাইন বিরোধী, এতে বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে শিক্ষার মানোন্নয়ন এবং উৎকর্ষতা বৃদ্ধির ক্ষেত্রে খুবই ক্ষতি হবে এবং শিক্ষার পরিবেশ বিঘ্নিত হবে।