মতপ্রকাশের স্বাধীনতা ধ্বংস করতে তথ্যপ্রযুক্তি আইনের সংশোধনী তীব্র প্রতিবাদ এস ইউ সি আই (সি)-র

এস ইউ সি আই (কমিউনিস্ট)-এর সাধারণ সম্পাদক কমরেড প্রভাস ঘোষ ৯ এপ্রিল এক বিবৃতিতে বলেন, গত ৬ এপ্রিল বিজেপি পরিচালিত কেন্দ্রীয় সরকার তথ্যপ্রযুক্তি (ইন্টারমিডিয়ারি গাইডলাইন্স অ্যান্ড ডিজিটাল মিডিয়া এথিক্স কোড) আইন, ২০২১-এর যে সমস্ত সংশোধনী ঘোষণা করেছে, আমরা তার তীব্র বিরোধিতা করছি। এর ফলে কোনও সংবাদ ভুয়ো বা বিভ্রান্তিকর কিনা, তা নির্ধারণ করার নিরঙ্কুশ ক্ষমতা চলে যাবে সরকারের হাতে। এই সংশোধনীর ফলে সংবাদ যাচাইয়ের একমাত্র অধিকার পেতে চলেছে সরকার মনোনীত একটি গোষ্ঠী। এই গোষ্ঠীর হাতে কেন্দ্রের সঙ্গে সম্পর্কিত প্রতিটি বিষয়ের মধ্যে কোনটি ‘ভুয়ো অথবা মিথ্যা অথবা বিভ্রান্তিকর’ তা যাচাই করা এবং ‘ইন্টারনেট সার্ভিস প্রোভাইডার’, ‘সোশ্যাল মিডিয়া রেগুলেটর’ ইত্যাদির মতো মধ্যস্থতাকারীদের এই তথ্য ব্যবহার না করার নির্দেশ দেওয়ার ব্যাপক ক্ষমতা থাকবে। জানা গেছে, প্রেস ইনফর্মেশন বুরো থেকে এই তথ্য-পরীক্ষক গোষ্ঠী তৈরি করা হবে। ফলে সেটি সম্পূর্ণভাবে সরকারের নিয়ন্ত্রণে থাকবে। একটি সরকারি গোষ্ঠীর হাতে অনলাইন তথ্যগুলির সত্যতা যাচাইয়ের এরকম অবাধ ক্ষমতা দেওয়া হলে ন্যায়বিচারের নীতি লঙ্ঘিত হয় এবং আইনের চোখেও তা সঠিক হতে পারে না। স্পষ্টতই সংবাদমাধ্যমের কণ্ঠরোধ করে মতপ্রকাশের স্বাধীনতা নির্লজ্জভাবে ধ্বংস করার উদ্দেশ্যে এ হল কেন্দ্রীয় সরকারের নেওয়া আরও এক স্বৈরাচারী ফ্যাসিবাদী পদক্ষেপ। বাস্তবে, শাসক বিজেপির বিরুদ্ধেই অভিযোগ রয়েছে যে তারা নিজেদের স্বার্থে তাদের কুখ্যাত আইটি সেলের মাধ্যমে কখনও সাম্প্রদায়িকতার আগুন লাগাতে, কখনও বিরোধী রাজনৈতিক দল এবং সরকারবিরোধী ব্যক্তিদের সম্পর্কে মিথ্যা প্রচার করতে ভুয়ো সংবাদের বন্যা বইয়ে দিয়ে জনগণকে প্রতারিত করছে।

বিরোধী স্বর বা সমালোচনার কণ্ঠ রোধ করতে বিজেপি সরকারের এই স্বৈরাচারী পদক্ষেপের আমরা পুনরায় তীব্র নিন্দা করছি এবং সমস্ত গণতন্ত্রপ্রেমী মানুষ সহ বিবেকবান সাংবাদিক, আইনজীবী ও সমস্ত অংশের বুদ্ধিজীবীদের প্রতি এই ভয়াবহ পদক্ষেপের দৃঢ় প্রতিবাদে ঐক্যবদ্ধভাবে রুখে দাঁড়ানোর আহ্বান জানাচ্ছি।