কৃষিজমিতে প্রতিরক্ষা কারখানা! ক্ষতিপূরণের দাবিতে কৃষক-আন্দোলন তেলেঙ্গানায়

তেলেঙ্গানার জাহিরাবাদে প্রতিরক্ষা সামগ্রীর কারখানা করার জন্য সম্প্রতি ৫০০ একর কৃষিজমি জোর করে অধিগ্রহণ করেছে রাজ্যের কে চন্দ্রশেখর রাও সরকার। ন্যাশনাল ইনভেস্টমেন্ট অ্যান্ড ম্যানুফ্যাকচারিং জোন (এনআইএমজেড)-এর জন্য অধিগৃহীত এই জমিতে পাবলিক-প্রাইভেট পার্টনারশিপ (পিপিপি) পদ্ধতিতে প্রতিরক্ষা কারখানার জন্য কয়েক হাজার কোটি টাকা বিনিয়োগ হবে। রাজ্য সরকার কৃষকদের নামমাত্র ক্ষতিপূরণ দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়ে সাংগারেড্ডি জেলার ওই উর্বর জমি দান করেছে ভেম টেকনোলজি নামে এক বেসরকারি কোম্পানিকে। এই কারখানা হলে ওই অঞ্চলের বেশ কয়েকটি গ্রামের কৃষকদের উচ্ছেদ হতে হবে। অথচ সরকার জমি অধিগ্রহণ আইনের নিয়ম মেনে উপযুক্ত ক্ষতিপূরণ পর্যন্ত দিচ্ছে না।

জাতীয় সড়কের কাছে অবস্থিত এই জমির বর্তমান বাজারমূল্য যেখানে প্রতি একর ৩০ লাখ থেকে ১ কোটি, সেখানে সরকার নামমাত্র ক্ষতিপূরণ দেওয়ার মতলব করছে। অধিকাংশ কৃষক চাষের জন্য লাখ-লাখ টাকা ব্যাঙ্ক-ঋণ নিতে বাধ্য হয়েছেন। সরকারের এই পদক্ষেপ তাদের বিপদগ্রস্ত করেছে। স্বাভাবিক ভাবে এর বিরুদ্ধে তাঁরা আন্দোলনে নেমেছেন। ক্ষমতায় আসীন তেলেঙ্গানা রাষ্ট্রীয় সমিতির শিল্পমন্ত্রী ২২ জুন কারখানার শিলান্যাস করতে গেলে কৃষকরা জমির ন্যায্য ক্ষতিপূরণের দাবিতে বিক্ষোভ দেখান।

কৃষকরা গত ছ’ বছর ধরে জমি জবরদখলের বিরুদ্ধে আন্দোলন করছেন। জাহিরাবাদ, জেলা সদর সাংগারেড্ডিতে তাঁরা বারকয়েক অনশন, ধরনা, বিক্ষোভ-অবস্থান করেছেন। কিন্তু সরকার তা নিয়ে টুঁ শব্দটি করেনি। শিল্পমন্ত্রী ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকদের নিয়ে একটি বাক্যও খরচ করেননি। উল্টে কৃষকরা মন্ত্রীকে দাবিপত্র দিতে গেলে সেই আন্দোলনে বেধড়ক লাঠি চালায় পুলিশ। ১০০ জন কৃষক সহ ১২০০-র বেশি আন্দোলনকারীকে গ্রেপ্তার করে।

আন্দোলন যাতে জোরালো হতে না পারে তার জন্য স্থানীয় ১৭টি গ্রামের কৃষকদের খেতের কাজ বন্ধ করে দিয়েছে পুলিশ। জোর করে আশপাশের দোকান বন্ধ করে দিয়েছে যাতে কোনও জমায়েত না করতে পারে কৃষকরা। তা সত্ত্বেও আন্দোলনকারীরা দাবি আদায়ে অনড়।