এলআইসি শেয়ার বিক্রিতে বড় কেলেঙ্কারির নজির গড়ল মোদি সরকার

বিজেপি পরিচালিত কেন্দ্রীয় সরকার ভারতীয় জীবনবিমা নিগম বা এলআইসির বেসরকারিকরণের জন্য যে অতি সামান্য দামে তার শেয়ার (আইপিও) বাজারে ছাড়তে শুরু করেছে তার তীব্র প্রতিবাদ জানিয়ে ৪ মে এস ইউ সি আই (কমিউনিস্ট)-এর সাধারণ সম্পাদক কমরেড প্রভাস ঘোষ এক বিবৃতিতে বলেন,

কেন্দ্রীয় বিজেপি সরকার এলআইসি-র শেয়ার বিক্রির নামে বেসরকারিকরণের ক্ষেত্রে ভারতের সবচেয়ে বড় কেলেঙ্কারিটি ঘটিয়েছে। সরকার নিজেই যেখানে এলআইসি-র মূল্য প্রথমে ১৪ লক্ষ কোটি টাকা নির্ধারণ করেছিল, তারা মাত্র দু’মাসের মধ্যেই এই মূল্য হঠাৎ ৬ লক্ষ কোটি টাকায় নামিয়ে দিয়েছে। এই পরিবর্তনের ফলে, যেখানে প্রতিটি শেয়ারের দাম হওয়া উচিত ছিল ২১৩২ টাকা, তা কমে ৯০৪ থেকে ৯৪৯ টাকা দাঁড়িয়েছে। এর ফলে সরকার এলআইসি-র ৩.৫ শতাংশ শেয়ার বেচে ৫৪ হাজার কোটি টাকার জায়গায় মাত্র ২৬ হাজার কোটি টাকা তুলতে পারবে। শেয়ার বাজারের নিরিখে যা অতি ক্ষুদ্র একটি লেনদেন। সরকার এভাবে বিপুল দাম কমানোর সিদ্ধান্তটি নিল দেশি এবং বিদেশি লগ্নিকারীদের সাথে আলোচনা করেই। এ ভাবে বিজেপি সরকার এলআইসি-র মতো একটি রত্নকে পুরোপুরি বেসরকারিকরণের রাস্তাই খুলে দেয়নি, মালিকদের হাতে তাকে অতি নগণ্য দামে তুলে দেওয়ার ব্যবস্থা করেছে।

এ ভাবে অতি নগণ্য দামে আন্তর্জাতিক লগ্নিকারী ও ফাটকার কারবারীদের হাতে এলআইসিকে তুলে দেওয়ার মধ্য দিয়ে যে কোটি কোটি পলিসি গ্রাহক এবং সাধারণ মানুষ এলআইসি-র মতো বৃহদাকার প্রতিষ্ঠানকে তিল তিল করে গড়ে তুলেছেন এ সমৃদ্ধ করেছেন, তাদের প্রতি চরম অবজ্ঞাই প্রদর্শন করল সরকার।

এই বেসরকারিকরণের প্রক্রিয়া শুরু হয়েছিল গত ফেব্রুয়ারিতে। তখনই শেয়ার বাজার নিয়ন্ত্রক সেবির সাথে এলআইসি-র প্রাথমিক শেয়ার চুক্তির খসড়া (ডিআরএইচপি) স্বাক্ষরের মাধ্যমে তার কিছু শেয়ার সরকার ছেড়ে দিয়েছিল। তারপর এখন প্রাথমিক পাবলিক অফার (আইপিও) আনা হয়েছে। এতে আবারও প্রমাণ হল, বিজেপি সরকার দেশের সাধারণ মানুষ, কর্মচারী, শ্রমিকদের স্বার্থ জলাঞ্জলি দিয়ে দেশি-বিদেশি একচেটিয়া মালিকদের মুনাফা লালসা মেটাতেই ব্যগ্র।

জনগণের কাছে আমাদের আবেদন, এই বিশাল কেলেঙ্কারি প্রতিরোধে এগিয়ে আসুন। ক্রমাগত বেসরকারিকরণের নির্মম প্রক্রিয়ার বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ান।

গণদাবী ৭৪ বর্ষ ৩৮ সংখ্যা ১৩ মে ২০২২