আসামে ৪০ লক্ষ মানুষের নাম পঞ্জি থেকে বাদ দেওয়ার পিছনে রয়েছে উগ্র প্রাদেশিকতাবাদী ও সাম্প্রদায়িক শক্তির হীন মতলব

(পূর্ব প্রকাশিতের পর)

স্ট্যান্ডার্ড অপারেটিং প্রসিডিওর (এসওপি) একটি ধাপ্পা

চক্রান্ত এখানেই শেষ হয়নি৷ এনআরসি–র চূড়ান্ত খসড়া প্রকাশিত হওয়ার পর একে আপডেট করার জন্য দাবি–দাওয়া ও আপত্তিগুলি নিষ্পত্তির উদ্দেশ্যে কেন্দ্রীয় সরকারকে ২০০৮–এর ১৬ অক্টোবরের আগে একটি স্ট্যান্ডার্ড অপারেটিং প্রসিডিওর (এসওপি) তৈরি করে জমা দেওয়ার নির্দেশ দেয় সুপ্রিম কোর্ট৷ কেন্দ্রীয় সরকার সুপ্রিম কোর্টে যে এসওপি জমা দিয়েছে, তাতে বলা হয়েছে যে, প্রাথমিক আবেদনের সময়ে আবেদনকারী উত্তরাধিকার এবং সংযোগ (লিগেসি অ্যান্ড লিংকেজ) সংক্রান্ত যেসব প্রমাণপত্র দাখিল করেছিলেন সেগুলিই জমা দিতে হবে৷ কিন্তু কেউ যদি অতিরিক্ত কোনও নথি জমা দিতে চান, তিনি সেটা দিতে পারেন৷ ন্যায়বিচার দেওয়ার কী অভিনব পন্থা চূড়ান্ত এনআরসি–তে নাম নথিভুক্ত করার জন্য নাম বাদ পড়ে যাওয়া ভারতীয় নাগরিকরা যাবেন কোথায়? তাঁদের যেতে হবে সেই একই সেবাকেন্দ্রগুলিতে, যেখানে কাজ করছেন সেই একই লোকেরা, যাঁরা আগেই এই মানুষগুলির নাম নথিভুক্তির আবেদন নামঞ্জুর করে দিয়েছেন এবং তা অবশ্যই কর্তৃপক্ষের নির্দেশমতো৷ তাছাড়া, আদৌ যদি যাচাই করার কোনও কর্মসূচি নেওয়া হয়, তা করা হবে সেই একই নথিপত্রের ভিত্তিতে যেগুলিকে অবৈধ বা দুর্বল বলে আগেই খারিজ করে দেওয়া হয়েছিল৷ নথিগুলো যারা বাতিল করেছে, তাদের বিরুদ্ধে আপিল করার কোনও অধিকারও আবেদনকারীদের থাকবে না৷

অসমীয়াভাষী শুভবুদ্ধিসম্পন্ন মানুষকে উপলব্ধি করতে হবে, তীব্র বেকারসমস্যা, আকাশছোঁয়া মূল্যবৃদ্ধি ইত্যাদির মতো যে জ্বলন্ত সমস্যাগুলি তাদের জীবন দুর্বিষহ করে তুলছে, এনআরসি বা অন্য কোনও উপায়ে অ–সমীয়াভাষী নিরীহ ভারতীয় নাগরিকদের রাজ্য থেকে বের করে দিয়ে সে সব সমস্যার সমাধান করা যাবে না৷ এসবই হল কায়েমি স্বার্থবাদীদের কৌশল যাতে দুর্দশার আসল কারণের দিক থেকে সাধারণ মানুষের দৃষ্টি সরিয়ে দিয়ে আসামে ঐক্যবদ্ধ গণতান্ত্রিক আন্দোলন গড়ে ওঠার পথে বাধা সৃষ্টি করা যায়৷

 

দ্বিতীয়ত, ১৯৫৫ সালের নাগরিকত্ব আইন অনুযায়ী কেউ যদি কারও নাম এনআরসি–র অন্তর্ভুক্ত করার বিরুদ্ধে আপত্তি জানায় তা হলে অভিযোগকারীকে নিজের বক্তব্যের সপক্ষে প্রমাণ দাখিল করতে হয়৷ অভিযোগ মিথ্যা প্রমাণিত হলে অভিযোগকারীর ৫০,০০০ টাকা জরিমানা এবং/অথবা ৫ বছরের জেল হতে পারে৷ তা ছাড়া অভিযোগকারী ও অভিযুক্তকে একই এলাকার বাসিন্দা হতে হবে৷ কেন্দ্রীয় মন্ত্রীসভার অনুমোদনক্রমে কেন্দ্রীয় সরকার সুপ্রিম কোর্টকে প্রস্তাব দিয়েছে যে, অভিযোগকারীর শাস্তি এবং অভিযুক্তের সঙ্গে একই এলাকার বাসিন্দা হওয়ার শর্ত দুটি তুলে নেওয়া হোক৷ এই প্রস্তাব শুধু গ্রহণ করা হয়েছে তাই নয়, অভিযোগ করার সুযোগ আরও অবাধ করা হয়েছে৷ ফলে এখন খসড়া এনআরসি–তে থাকা যে কোনও মানুষের বিরুদ্ধে যে কেউ আসামের যে কোনও জায়গা থেকে যত খুশি অভিযোগ দাখিল করতে পারবে৷

তৃতীয়ত, এনআরসি–র রাজ্য কো–অর্ডিনেটর প্রতীক হাজেলা সুপ্রিম কোর্টের কাছে আবেদন করেছেন, প্রথমে যে ১৫টি নথি গ্রহণযোগ্য বলে বিবেচিত হয়েছিল, তার সংখ্যা ১০–এ নামিয়ে আনতে৷ ফলে ২৪ মার্চ ১৯৭১ পর্যন্ত  উপযুক্ত কর্তৃপক্ষ কর্তৃক প্রদত্ত রেশন কার্ড, রিফিউজি রেজিস্ট্রেশন সার্টিফিকেট, নাগরিকত্ব সার্টিফিকেট ইত্যাদির মতো যেসব নথি, যা এতদিন বৈধ বলে গণ্য হত, সেগুলি এখন বাতিল বলে বিবেচিত হবে৷

পারিপার্শ্বিক সাক্ষ্য প্রমাণের স্বীকৃতি প্রয়োজন

বারবার নদীভাঙন, বিধ্বংসী বন্যা এবং অন্যান্য প্রাকৃতিক দুর্যোগের কারণে বহু মানুষের প্রামাণ্য নথি যেগুলি ১৫ ধরনের নথির আদত তালিকা কিংবা পরবর্তীকালে ১০ ধরনের নথির তালিকভুক্ত ছিল, সেগুলি হয় নষ্ট, না হয় হারিয়ে গেছে৷ অসহায়, চরম দরিদ্র ভারতীয় নাগরিকরা এইসব নথিপত্র কোথা থেকে এবং কীভাবে পুনরুদ্ধার করবেন? এছাড়া বিচারব্যবস্থার রীতিনীতি সম্পর্কে যাঁদের অভিজ্ঞতা আছে তাঁরা জানেন, পারিপার্শ্বিক সাক্ষ্য প্রমাণগুলির সূত্র ধরে সত্যে উপনীত হয়ে মামলা নিষ্পত্তি করা হয়৷ এমনকী ২০০২ সালের বিখ্যাত স্কট পিটারসন খুনের মামলাতেও পারিপার্শ্বিক প্রমাণের ভিত্তিতে বিচারকরা রায় দিয়েছিলেন৷ এই ধরনের বহু দৃষ্টান্ত ভারতবর্ষেও আছে৷ কিন্তু এনআরসি–র ক্ষেত্রে নাম অন্তর্ভুক্তির প্রশ্নে সত্যে উপনীত হওয়ার জন্য ন্যায়বিচারে এই মূল নীতিটিকেই উপেক্ষা করা হচ্ছে৷

সুতরাং এর ফলাফল কী হবে? যাঁদের নাম এনআরসি–র অন্তর্ভুক্ত হয়েছে, এমনকী তাঁদের বিরুদ্ধেও অভিযোগের বন্যা বয়ে যাবে৷ অন্যদিকে, যাঁরা নাম অর্ন্তভুক্তির জন্য নতুন করে আবেদন করবেন হয় তাঁদের নাম বাদ দেওয়া হবে, অথবা স্থগিত রাখা হবে, যাতে স্বতঃপ্রবৃত্তভাবে সেগুলি বাতিল হয়ে যায়৷ আবার ‘সর্বশক্তিমান’ কর্তৃপক্ষ বিচার বিভাগের আদেশকে ব্যবহার করার নতুন নতুন কৌশল প্রয়োগ করে বশংবদ সরকারি কর্মচারীদের নিয়ে গঠিত যাচাইকরণ প্রক্রিয়া ব্যবহার করে এনআরসি–র দ্বিতীয় খসড়ার অন্তর্ভুক্ত অনেক নামই বাদ দেবে, এসওপি–র কল্যাণে, নতুন নাম যুক্ত হওয়া তো দূরের কথা৷

ডি–ভোটারদের উপর খড়গ নেমে আসবে

নতুন বিপদের খবর হল, তথাকথিত ‘বিদেশি’–র সংখ্যা বাড়াতে ডি–ভোটারদের উপর খড়গ নেমে আসতে চলেছে৷ খবর পাওয়া যাচ্ছে যে, যাঁদের ডি–ভোটার হিসাবে চিহ্ণিত করা হয়েছিল এবং যাঁরা ট্রাইবুনালে নিজেদের প্রকৃত ভারতীয় নাগরিক হিসাবে প্রমাণ করতে পেরেছিলেন, ডি–ভোটার হিসাবে ঘোষণা করে আবার তাঁদের কাছে নতুন করে নোটিশ পাঠানো হচ্ছে৷ এই ডি–ভোটার অথবা তুচ্ছ অজুহাতে যাঁদের ওপর ‘বিদেশি’ ছাপ মেরে দেওয়া হয়েছে, তাঁদের অধিকাংশই অত্যন্ত গরিব এবং শিক্ষাবঞ্চিত৷ বিচার পেতে উচ্চতর কোর্টে যাওয়ার ক্ষমতা এঁদের নেই৷

আকাশে কালো মেঘ জমা হচ্ছে

এই পথেই প্রকৃত ভারতীয় নাগরিকদের উপর ইচ্ছাকৃতভাবে আক্রমণ চালিয়ে তাঁদের গায়ে ‘বিদেশি’ তকমা লাগিয়ে দেওয়া হচ্ছে৷ এই বিপুল সংখ্যক ভারতীয় নাগরিককে কৌশল করে এবং অমানবিক ভাবে একবার যদি ‘বিদেশি’ বা ডি–ভোটারের তকমা দিয়ে দেওয়া যায়, তাহলেই তাঁদের অনির্দিষ্টকালের জন্য বিশেষ ভাবে তৈরি ডিটেনশন সেন্টারগুলিতে পাঠিয়ে দেওয়া হবে, যেখানকার মতো দুর্দশা এমনকী দাগী অপরাধীদেরও ভোগ করতে হয় না৷ তথাকথিত ‘বিদেশি’র সংখ্যা ৪০ লক্ষ বলে যে ঘোষণা করা হয়েছে, কৌশলে সেই সংখ্যাকে আরও বাড়িয়ে দেওয়ার সম্ভাবনাকেও উড়িয়ে দেওয়া যায় না৷ দেশে সাম্প্রদায়িকতার বিষবাষ্প ছড়ানো এবং মুসলিম–বিদ্বেষ জাগিয়ে তোলা উগ্র সাম্প্রদায়িক আরএসএস–বিজেপি–র একমাত্র লক্ষ্য৷ কেন্দ্রে ও রাজ্যে তারাই ক্ষমতায় থাকায় ধর্ম ও ভাষাগত দিক দিয়ে সংখ্যালঘু ভারতীয় নাগরিকদের কাছে পরিস্থিতি আরও বিপজ্জনক হয়ে উঠেছে৷ আগেই উল্লেখ করা হয়েছে, বিজেপি সভাপতি হুমকি দিয়েছেন, আসামে এনআরসি নিয়ে পরীক্ষা–নিরীক্ষা যদি ফলপ্রসূ হয়, তাহলে অন্য রাজ্যগুলিতেও তা প্রয়োগ করা হবে৷ এইভাবে নাগরিকপঞ্জি থেকে আরও বেশি সংখ্যায় প্রকৃত ভারতীয় নাগরিক যাঁরা এদেশেই জন্মে বড় হয়েছেন, তাঁদের বংশধরদের নাম বাদ দেওয়ার অপচেষ্টা সফল করতে এনআরসি–কে হাতিয়ার হিসাবে ব্যবহার করতে সর্বশক্তি প্রয়োগ করছে৷ এ হল ভিতর থেকে ধ্বংস ও অন্তর্ঘাতের একটি উল্লেখযোগ্য উদাহরণ৷ এবং এটাই হল সুকৌশলে রচিত মারাত্মক বুর্জোয়া ষড়যন্ত্র যা পুঁজিপতি শ্রেণির স্বার্থরক্ষাকারী কংগ্রেস, বিজেপি সহ মেকি মার্কসবাদী দলগুলি ধাপে ধাপে রূপায়িত করবে বলে সিদ্ধান্ত নিয়েছে৷

এই ফ্যাসিবাদী আক্রমণ রুখতে হবে

এসবের পরিণতি কী হবে? প্রকৃত নাগরিক অধিকার বলে কিছু থাকবে না৷ নিপীড়িত খেটে–খাওয়া মানুষকে দু’ভাগে ভাগ করে দেওয়া হবে– একদল হবে নাগরিক, অন্যরা রাষ্ট্রহীন মানুষ৷ এই ‘ডিভাইড অ্যান্ড রুল’ (ভাগ করো ও শাসন করো) কৌশল কেবল নিপীড়কদের হাতই শক্ত করবে৷ কিন্তু পুঁজিপতি শ্রেণির এই সুকৌশলী ষড়যন্ত্র রুখে দেওয়া সম্ভব নয়– এই ভেবে হতাশায় ডুবে যাওয়ার কোনও অর্থ হয় না৷ অত্যাচারীরাই যদি শেষ কথা বলত তাহলে মানব সভ্যতার ইতিহাস হত অন্যরকম৷ বিবেকবান শুভবুদ্ধিসম্পন্ন মানুষ বর্তমান পরিস্থিতিতে কী ভূমিকা নিচ্ছেন, তার উপরে সবকিছু নির্ভর করছে৷ চূড়ান্ত প্রতিক্রিয়াশীল, নির্মম ক্ষয়িষ্ণু পুঁজিবাদই যে সমস্ত সমস্যা, দুর্দশা ও দারিদ্রের জন্মদাতা, জাতি বর্ণ ধর্ম ও অঞ্চল নির্বিশেষে সমস্ত মেহনতি মানুষের মধ্যে এই সত্য সঞ্চারিত করতে হবে৷ অসমীয়াভাষী শুভবুদ্ধিসম্পন্ন মানুষকে উপলব্ধি করতে হবে, তীব্র বেকারসমস্যা, আকাশছোঁয়া মূল্যবৃদ্ধি ইত্যাদির মতো যে জ্বলন্ত সমস্যাগুলি তাদের জীবন দুর্বিষহ করে তুলছে, এনআরসি বা অন্য কোনও উপায়ে অ–সমীয়াভাষী নিরীহ ভারতীয় নাগরিকদের রাজ্য থেকে বের করে দিয়ে সে সব সমস্যার সমাধান করা যাবে না৷ এসবই হল কায়েমি স্বার্থবাদীদের কৌশল যাতে দুর্দশার আসল কারণের দিক থেকে সাধারণ মানুষের দৃষ্টি সরিয়ে দিয়ে আসামে ঐক্যবদ্ধ গণতান্ত্রিক আন্দোলন গড়ে ওঠার পথে বাধা সৃষ্টি করা যায়৷ উত্তরপ্রদেশে তথাকথিত ‘বেআইনি অনুপ্রবেশ’–এর সমস্যা নেই৷ তা সত্ত্বেও সেখানে মাত্র ৩৬৮টি পিওনের পদে কাজ পেতে ২৩ লাখ দরখাস্ত জমা পড়ে কেন? আবেদনকারীদের মধ্যে এমনকী ডক্টরেট এবং পোস্ট–গ্র্যাজুয়েট ডিগ্রিধারীরাও আছেন৷ বর্তমানে অবশ্যকরণীয় কর্তব্য হল, গণতন্ত্র ও গণতান্ত্রিক মূল্যবোধগুলি ধ্বংস করে আসামকে ফ্যাসিবাদের দিকে নিয়ে যাওয়ার ষড়যন্ত্র প্রতিহত করা৷ জীবনের জ্বলন্ত সমস্যাগুলি নিয়ে অসমীয়া ও অসমীয়াভাষী সমস্ত অংশের খেটে–খাওয়া মানুষকে নিয়ে যদি ঐক্যবদ্ধ গণআন্দোলনের জোয়ার সৃষ্টি করা যেত, তাহলে তা পুঁজিপতি শ্রেণির এই জঘন্য ষড়যন্ত্রের বিরুদ্ধে শক্তিশালী বাধা হিসাবে কাজ করত৷ পাশাপাশি, এই ঐক্যবদ্ধ সংগ্রামের ফলে সৃষ্টি হওয়া সাংস্কৃতিক পরিবেশ মানুষে মানুষে ধর্ম, ভাষা, বর্ণগত বিভেদ হয়তো সম্পূর্ণ দূর করে দিতে সক্ষম হত না, কিন্তু এই বিভেদ অবশ্যই কমিয়ে আনতে সক্ষম হত৷ সাধারণ শত্রু পুঁজিবাদের বিরুদ্ধে প্রত্যক্ষ সংগ্রাম গড়ে তুলতে গিয়ে তারা সাধারণ স্বার্থের ধারক হত৷ এস ইউ সি আই (সি) বারবার দুর্দশাগ্রস্ত জনগণকে উগ্র সাম্প্রদায়িক– প্রাদেশিকতাবাদী অপশক্তির ফাঁদে পা দিয়ে নিজেদের আরও ক্ষতিগ্রস্ত না করার আহ্বান জানিয়েছে৷ এনআরসি–কে কেন্দ্র করে সঠিক ব্যাখ্যা এবং চার দফা কর্মসূচি নিয়ে আমরা যেখানেই পৌঁছাতে পেরেছি, সেখানেই জনগণের সমর্থন পেয়েছি৷

বর্তমানে কর্তব্য হল, সুবিচার না পাওয়া পর্যন্ত, বাতিল হয়ে যাওয়া নাগরিকত্ব ফিরে না পাওয়া পর্যন্ত, ষড়যন্ত্র করে যে মানুষগুলির নাগরিকত্ব কেড়ে নেওয়া হয়েছে তাঁদের পাশাপাশি সমস্ত শুভবুদ্ধিসম্পন্ন মানুষকে ঐক্যবদ্ধ করে দীর্ঘ আন্দোলনে সামিল হতে উদ্বুদ্ধ করা৷ মনে রাখা দরকার, সাধারণ মানুষই শেষ কথা বলে৷ এনআরসি থেকে বাদ দেওয়া প্রকৃত ভারতীয় নাগরিকদের নাম অন্তর্ভুক্ত করার ন্যায্য দাবিতে শুধু আসামে নয়, গোটা দেশ জুড়ে সমস্ত অংশের খেটে খাওয়া মানুষকে ঐক্যবদ্ধ করে তৃণমূল স্তরে গণসংগ্রাম কমিটি গঠন করার মাধ্যমে দীর্ঘ ও ঐক্যবদ্ধ গণআন্দোলন গড়ে তুলতে হবে৷ এর পাশাপাশি জাতি নির্মূল করার (এথনিক ক্লিনজিং) এ হেন দানবীয় কার্যকলাপের বিরুদ্ধে বিশ্বের গণতন্ত্রপ্রেমী মানুষকে সোচ্চার হওয়ার আহ্বান জানাতে হবে৷ একমাত্র এই পথেই এনআরসি–র মাধ্যমে আরএসএস–বিজেপির মুসলমান বিদ্বেষ ছড়ানোর ঘৃণ্য ষড়যন্ত্র ব্যর্থ করা যাবে৷ (শেষ)

(৭১ বর্ষ ১৫ সংখ্যা ২৩ – ২৯ নভেম্বর, ২০১৮)