কেন্দ্রীয় সরকার আগামী খরিফ মরশুমে ধানের এমএসপি বৃদ্ধি করেছে কেজি প্রতি মাত্র ৫৯ পয়সা। এর প্রতিবাদে এআইকেকেএমএস-এর পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য সম্পাদক গোপাল বিশ্বাস ৯ জুন এক বিবৃতিতে বলেন, ফসলের এমএসপির প্রশ্নে কৃষকদের বক্তব্য, ২০০৪ সালে সরকার নিযুক্ত ডঃ স্বামীনাথন কমিশন এমএসপি নির্ধারণের যে সুপারিশ করেছিলেন, তা অতীতে কংগ্রেস সরকারের মতো বিজেপি পরিচালিত কেন্দ্রীয় সরকারও মানছে না। কমিশনের রিপোর্টে বলা হয়েছিল এমএসপি নির্ধারণ করা হোক উৎপাদন খরচের কমপক্ষে দেড় গুণ হারে। কিন্তু সরকার হিসাব করতে গিয়ে কখনওই ফসলের সমস্ত উৎপাদন খরচ যুক্ত করে না। ফলে যে এমএসপি তারা নির্ধারণ করে তাতে চাষির উৎপাদন খরচ ওঠে না। চাষি ক্রমাগত লোকসানে ডুবে ঋণগ্রস্ত হয়ে পড়েন, বহু সময় আত্মহত্যা পর্যন্ত করেন। এই পরিস্থিতিতে আগামী মরশুমে ধানের এমএসপি কুইন্টাল প্রতি মাত্র ৫৯ টাকা বৃদ্ধি করা চাষির সাথে প্রতারণা ছাড়া আর কিছু না। তিনি বলেন, এআইকেকেএমএসের পক্ষ থেকে আমরা এর তীব্র প্রতিবাদ জানাচ্ছি। আমাদের সুস্পষ্ট বক্তব্য ধান উৎপাদনের প্রকৃত খরচ নির্ধারণ করে কমপক্ষে তার দেড় গুণ হারে এমএসপি নির্ধারণ করা হোক। প্রয়োজনে এই প্রশ্নে কৃষক সংগঠনগুলোর প্রতিনিধিদের সাথে সরকার বৈঠক ডাকুক। আমাদের দাবি, সঠিকভাবে এমএসপি নির্ধারণ করে সরকারের পক্ষ থেকে প্রতিটি গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকায় কমপক্ষে একটি ধান ক্রয় কেন্দ্র খুলতে হবে। রাজ্য সরকারকেও এ ক্ষেত্রে দায়িত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে হবে। এই প্রশ্নে তারাও কৃষকস্বার্থবিরোধী ভূমিকা নিয়ে স্বামীনাথন কমিশনের সুপারিশ রাজ্যে কার্যকর করছে না।
বাস্তবে কর্পোরেট কোম্পানিগুলির হাতে সমগ্র খাদ্যশস্য তুলে দেওয়ার যে নীতি নিয়ে কেন্দ্রীয় সরকার চলছে, রাজ্য সরকারও তার বিরোধিতা করছে না। তাই এর বিরুদ্ধে চাষিদের সম্মিলিত লড়াই গড়ে তোলা ছাড়া বিকল্প কোনও রাস্তা নেই।
এই লেখাটি গণদাবী ৭৭ বর্ষ ৪৪ সংখ্যা ১৩ – ১৯ জুন ২০২৫ এ প্রকাশিত