Breaking News

বামপন্থী দলগুলির ফ্যাসিবাদবিরোধী আলোচনা সভা

কলকাতার ইউনিভার্সিটি ইনস্টিটিউট হলে অল ইন্ডিয়া অ্যান্টি ইম্পিরিয়ালিস্ট ফোরাম, পশ্চিমবঙ্গ ইউনিটের আহ্বানে ২৭ মে এক আলোচনা সভায় একত্রিত হয়েছিলেন এ রাজ্যের বিভিন্ন বামপন্থী দলের নেতৃবৃন্দ ও বামমনস্ক শত শত মানুষ। ফ্যাসিস্ট শক্তির বিরুদ্ধে সোভিয়েট জনগণ ও লাল ফৌজের ঐতিহাসিক বিজয়ের ৮০ বছর উপলক্ষে আলোচনার বিষয় ছিল ‘সাম্প্রদায়িকতা, যুদ্ধ ও যুদ্ধ-উন্মাদনার রাজনীতি এবং ফ্যাসিবাদ বিরোধী সংগ্রাম’। বক্তা হিসেবে উপস্থিত ছিলেন সিপিআই-এর পক্ষে কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়, সিপিআই(এমএল) মাস লাইনের নির্ভীক মজুমদার, সিপিআই(এমএল) রেড স্টারের শঙ্কর, সিপিআই(এমএল) লিবারেশনের অতনু চক্রবর্তী, সিপিআই(এম)-এর অঞ্জন বেরা, এসইউসিআই(সি)-র চণ্ডীদাস ভট্টাচার্য, আরএসপি-র অশোক ঘোষ।

বক্তাদের প্রায় সকলের বক্তব্যের মধ্যে যে কথাটি বারবার উচ্চারিত হয়েছে তা হল, পুঁজিবাদের সংকটের গর্ভেই ফ্যাসিবাদের জন্ম। সংকটগ্রস্ত পুঁজিবাদ সাম্প্রদায়িকতা, যুদ্ধ-উন্মাদনা ও দেশে দেশে যুদ্ধ পরিস্থিতি সৃষ্টি করে। পুঁজিবাদ-সাম্রাজ্যবাদের সামনে বামপন্থীরাই মূল শত্রু। তাই মতপার্থক্য থাকলেও বামপন্থীদের, কমিউনিস্ট বলে যারা নিজেদের মনে করে, তাদের প্রয়োজন আন্দোলনে ঐক্যবদ্ধ হওয়া। বামপন্থীদের এক মঞ্চে নিয়ে আসার এই উদ্যোগের জন্য উদ্যোক্তা সংগঠনকে আন্তরিক অভিনন্দন জানান সব দলের বক্তারাই।

আলোচনা সভার সভাপতিত্ব করেন অল ইন্ডিয়া অ্যান্টি ইম্পিরিয়ালিস্ট ফোরামের সর্বভারতীয় সভাপতি, বিশিষ্ট ভূবিজ্ঞানী অধ্যাপক ধ্রুবজ্যোতি মুখোপাধ্যায়। তিনি বলেন ফ্যাসিবাদ বিংশ শতাব্দীর বিশেষ ঘটনা। সমস্ত পুঁজিবাদী-সাম্রাজ্যবাদী দেশেই ফ্যাসিবাদের বৈশিষ্ট্য রয়েছে। সাম্রাজ্যবাদী শক্তিগুলির বাজার দখলের প্রতিযোগিতার আগ্রাসী রূপ থেকে গত শতাব্দীতে ঘটে গিয়েছে প্রথম ও দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ। ফ্যাসিবাদের ঘৃণ্য রূপ দেখা গেছে জার্মানিতে। ফ্যাসিস্ট শক্তির মূল নিশানা ছিল সোভিয়েট রাশিয়া। লাল ফৌজের নেতৃত্বে রাশিয়ার মানুষের বীরত্বপূর্ণ লড়াইতে ফ্যাসিস্ট শক্তি সেদিন পরাজয় স্বীকার করতে বাধ্য হয়েছিল, তবে পরাস্ত হয়নি ফ্যাসিবাদ।

আজ বিশ্বের নানা দেশে ফ্যাসিবাদ নানা রূপে দেখা যাচ্ছে। ভারতে সাম্প্রতিককালে যুদ্ধ উন্মাদনা, ধর্ম-ভাষা-প্রদেশকে ভিত্তি করে বিভেদের রাজনীতি চলছে। প্রশাসনিক ফ্যাসিবাদ চলছে। ফ্যাসিবাদকে রুখতে হলে সর্বস্তরের জনসাধারণকে এর বিরুদ্ধে সর্বাত্মক লড়াইতে সামিল হতে হবে। এই লড়াইতে নেতৃত্ব দিতে হবে বামপন্থীদেরই।

এই লেখাটি গণদাবী ৭৭ বর্ষ ৪৩ সংখ্যা ৬ – ১২ জুন ২০২৫ এ প্রকাশিত