![](https://ganadabi.com/wp-content/uploads/2022/01/AIDSO-Michhil-Jadavpur-150x57.jpg)
ছাত্র-ছাত্রীদের দ্রুত ভ্যাকসিন দিয়ে অবিলম্বে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খোলার দাবিতে এবং শিক্ষা ধ্বংসের নীল নক্সা জাতীয় শিক্ষানীতি-২০২০ বাতিলের দাবিতে ২০-২১ জানুয়ারি রাজ্য জুড়ে অবস্থান বিক্ষোভের কর্মসূচি পালন করে এআইডিএসও। প্রথম দিন স্কুল ছাত্রছাত্রীদের, শিক্ষকদের, অভিভাবকদের নিয়ে বিক্ষোভ সংগঠিত হয়। পূর্ব মেদিনীপুরের কাঁথি থেকে কোচবিহারের হলদিবাড়ি, বীরভূমের রামপুরহাট থেকে দক্ষিণ ২৪ পরগনার জামতলা, দার্জিলিংয়ের শিলিগুড়ি থেকে কলকাতার কলেজ স্ট্রিট–সর্বত্রই ছাত্রছাত্রীরা, বিশিষ্ট শিক্ষক, শিক্ষাব্রতী মানুষ, অভিভাবকদের উপস্থিতি ছিল লক্ষণীয়। ‘আমরা স্কুলে যেতে চাই’ প্ল্যাকার্ড হাতে নিয়ে ছাত্রছাত্রীরা এই অবস্থান বিক্ষোভে তাদের অনুভূতি ব্যক্ত করে। স্কুলের ছাত্রছাত্রীরা বিগত দুই বছরের ক্লাসরুমবিহীন জীবনের নানা মুহূর্ত বক্তব্য ও চিত্রাঙ্কনের মধ্যে দিয়ে তুলে ধরেন। কেউ কেউ অনলাইন শিক্ষার সুযোগ থেকে কীভাবে বঞ্চিত হচ্ছেন এবং তার প্রভাব তাদের জীবনে কেমন করে পড়ছে তা বিস্তারিত তুলে ধরেন তাদের বক্তব্যে। সকলেই দ্রুত ক্লাস রুম পঠনপাঠন শুরুর জন্য সোচ্চার হন।
কলকাতায় কলেজ স্ট্রিটে অনুষ্ঠিত বিক্ষোভ সভার পাশে দাবির সমর্থনে একটি ‘গণতান্ত্রিক বোর্ডের’ উদ্বোধন করেন সংগঠনের রাজ্য সম্পাদক কমরেড মণিশঙ্কর পট্টনায়ক। তিনি বোর্ডে প্রথম স্বাক্ষর করে মন্তব্য করেন, ‘পড়ার জন্য লড়তে হবে স্বাধীন ভারতে, বাস্তবিকই, সরকার স্কুল খোলায় টালবাহানা করছে, ছাত্ররা লড়ছে খোলার দাবিতে। এ দৃশ্য অভাবনীয়।
বিক্ষোভ সভায় তিনজন ক্ষুদে পড়ুয়াকে দেখে এক সাংবাদিক তির্যক প্রশ্ন করলে তাদের অভিভাবকরাই স্বতঃপ্রণোদিত হয়ে জবাব দেন ‘আমাদের সন্তানের ভবিষ্যতের জন্য আমরা নিজেরাই তাদের এই কর্মসূচিতে এনেছি।’ নদীয়া জেলার কৃষiরনগর সদরে অনুষ্ঠিত বিক্ষোভ সভায় বক্তব্য রাখেন সংগঠনের পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য সভাপতি কমরেড সামসুল আলম। তিনি বলেন, ‘জাতীয় শিক্ষানীতি ২০২০’-র মধ্যে দিয়ে গোটা শিক্ষাব্যবস্থার যে চূড়ান্ত বেসরকারিকরণ করতে চাইছে কেন্দ্রের মোদী সরকার, মুখে বিরোধিতার কথা বললেও আদতে তারই বাস্তবায়ন করতে চাইছে এ রাজ্যের সরকার।
![](https://ganadabi.com/wp-content/uploads/2022/01/AIDSO-Hazra-150x69.jpg)
২১ জানুয়ারি রাজ্যের কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয় সহ মেডিক্যাল, ইঞ্জিনিয়ারিং, আইন ইত্যাদি পেশাগত কোর্সের পড়ুয়াদের নিয়ে অবস্থান বিক্ষোভের কর্মসূচি পালিত হয়। এদিন মুর্শিদাবাদের বহরমপুরে দলদাস পুলিশ মাইক লাগিয়ে কর্মসূচি করতে বাধা দিলে সংগঠনের কর্মীরা তৎক্ষণাৎ রাস্তায় ব্যারিকেড গড়ে খালি গলায় বক্তব্য রেখে প্রতিবাদ ধ্বনিত করেন। কলকাতার যাদবপুরে বিক্ষোভ সভা চলাকালীন অংশগ্রহণকারী এক ছাত্র প্রতিবাদের অনুষঙ্গ হিসেবে দাবির সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ একটি ছবি আঁকেন। কলেজ স্ট্রিটে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের মূল ফটকের সামনে অনুষ্ঠিত সভায় কলকাতা মেডিক্যাল কলেজের দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্র অনলাইন মাধ্যমে মেডিক্যাল শিক্ষা কী ভয়াবহ বিপদের সম্মুখে দাঁড়িয়ে আছে তা তুলে ধরেন। তিনি বলেন, ‘আমাদের সেকেন্ড ইয়ারে যে কোর্সের সময়সীমা দেড় বছর তা মাত্র ৪ মাসে শেষ করে ফেলা হয়েছে এই অনলাইন জমানায়।’ যাদবপুরে অনুষ্ঠিত সভায় এক গবেষক বিগত দুই বছরে গবেষণা খাতে কী পরিমাণ ব্যয়বরাদ্দ কমেছে তার পরিসংখ্যান তুলে ধরেন। এদিন হুগলির শ্রীরামপুরে পথনাটিকার মাধ্যমে স্কুল খোলার দাবি তুলে ধরা হয়। সংগঠনের রাজ্য সম্পাদক মণিশংকর পট্টনায়ক বলেন, অবিলম্বে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খোলার ঘোষণা না হলে বৃহত্তর আন্দোলন হবে।