নির্বাচনে বিকল্প লাইন তুলে ধরার দায়িত্ব ছিল বামপন্থীদেরই, কিন্তু …

মধ্যপ্রদেশ, রাজস্থান, ছত্তিশগড় সহ পাঁচটি রাজ্যে বিধানসভা নির্বাচনের ফল প্রকাশ পেতেই সংবাদমাধ্যম জুড়ে শুরু হয়েছে নানা কাটাছেঁড়া। বিজেপির এই সাফল্যের কারণ কী, কংগ্রেসের এই ব্যর্থতা কী কারণে ঘটল– এই সবই সেই আলোচনার বিষয়। বুর্জোয়া সংবাদমাধ্যমের পক্ষে এটাই স্বাভাবিক। তারা তো এ প্রশ্ন তুলবে না যে, এই নির্বাচন থেকে দেশের সংখ্যাগরিষ্ঠ শ্রমজীবী জনগণ কী পেল বা তাদের জীবনের সমস্যগুলির কোনও সুরাহা হল কি না? কোথাও কংগ্রেসকে সরিয়ে বিজেপি ক্ষমতায় এল, কোথাও অন্য কাউকে সরিয়ে কংগ্রেস ক্ষমতায় এল। কিন্তু তাতে জনজীবনের জ্বলন্ত সমস্যাগুলির কি এতটুকুও সুরাহা হবে? অত্যন্ত স্বাভাবিক ভাবেই সংবাদমাধ্যমে কোথাও এই সব প্রশ্ন নিয়ে আলোচনা নেই, তা থাকার কথাও নয়।

আজ আর কারও জানতে বাকি নেই যে এই নির্বাচনে জনগণের নতুন কিছুই পাওয়ার ছিল না। বাস্তবিক এ বারের নির্বাচনে শাসক এবং বিরোধী রাজনীতির ফারাকটা যে ভাবে মুছে গিয়ে উভয় রাজনীতির একাকার রূপটা ফুটে উঠল, তাতে ঝান্ডার রঙ ছাড়া দলগুলির পার্থক্য করাই দুষ্কর। উভয় পক্ষেরই ইস্যু তথা প্রতিশ্রুতিগুলি ছিল অবিকল এক। সব শাসক দলই দাবি করেছে, জনজীবনের বিরাট উন্নয়ন তারা ঘটিয়েছে। জনস্বার্থে তারা দারুণ কাজ করেছে। বাস্তবে কী উন্নয়ন তারা ঘটিয়েছে? মূল্যবৃদ্ধি, বেকারত্ব, শিক্ষা-চিকিৎসার সর্বজনীন সুযোগ– এগুলি আগের থেকে বেড়েছে না কমেছে? মানুষে মানুষে আর্থিক বৈষম্য কি আগের থেকে কমেছে? জাত-ধর্ম-বর্ণের বিভেদ কমানোর কোনও চেষ্টা কি এই সব দল-পরিচালিত সরকারগুলি করেছে? সকলেই জানেন, এই সমস্ত সমস্যাই কমা দূরের কথা, এত বিপুল পরিমাণে বেড়েছে যে, তা মানুষের জীবনকে ক্রমাগত দুর্বিষহ করে তুলছে। তা হলে কোন উন্নয়নের কথা, কোন সাফল্যের কথা তাঁরা বললেন?

বিজেপি রামমন্দির তৈরিকে তাদের বিরাট ‘সাফল্য’ হিসাবে জনতার সামনে তুলে ধরেছে। আর কংগ্রেস সেই ‘সাফল্যে’ ভাগ বসাতে দাবি করেছে, ‘আমরাই তো প্রথম বাবরি মসজিদের তালা খুলে দিয়েছি।’ জনজীবনের জ্বলন্ত সমস্যাগুলি এড়িয়ে বিজেপি নেতারা হিন্দুত্বের জিগির তুলে হিন্দু ভোট ব্যাঙ্ক তৈরি করতে ক্যামেরাম্যান সঙ্গে নিয়ে মন্দিরে মন্দিরে ঘুরেছেন, পুজো দিয়েছেন। কংগ্রেস নেতারাও ঠিক একই রকম ভাবে মন্দিরে মন্দিরে গিয়ে মাথা ঠেকিয়েছেন। একই রকম ভাবে, ভোট টানতে কংগ্রেস যখনই কিছু খয়রাতি ঘোষণা করেছে, বিজেপি সঙ্গে সঙ্গে সেই খয়রাতির অঙ্ক আরও খানিকটা বাড়িয়ে তারা যে আরও বড় জনদরদি তা জানান দিয়েছে। দুই দলের ক্রমাগত পাল্লা দেওয়া খয়রাতির ঘোষণা শুনে মনে হয়েছে যেন দেশজুড়ে খয়রাতির নিলাম চলছে। তা হলে কোথায় ফারাক দুই শিবিরের রাজনীতিতে? কোথায় জনজীবনের সত্যিকারের উন্নয়নের কথা? বাস্তবে জীবনের মূল সমস্যাগুলিকে স্পর্শ না করে কিছু খয়রাতি দেওয়াকেই এই দলগুলি জনগণের জীবনের উন্নয়ন এবং তাদের শাসনের সাফল্য বলে প্রচার করেছে। অসচেতন, নিরুপায়, আজন্ম বঞ্চিত মানুষ, যাদের জীবনে প্রচলিত রাজনীতি প্রতারণারই আর এক রূপ হিসাবে চিরকাল দেখা দিয়েছে, তারা কোনও যথার্থ বিকল্প না পেয়ে এই দলগুলিরই কোনও না কোনওটিকে সমর্থন করতে বাধ্য হয়েছে। ভেবে দেখারও তাঁদের সুযোগ হয়নি যে, প্রতারক এই দলগুলি যে পরিমাণ খয়রাতির প্রতিশ্রুতি দিচ্ছে তার কত গুণ তাদের জীবন থেকে প্রতিদিন কেড়ে নিচ্ছে। শুধু গ্যাসের দামই সিলিন্ডার পিছু পাঁচশো টাকা বাড়ানো হয়েছে। চিকিৎসা এবং শিক্ষার খরচ বেড়েছে বহুগুণ। নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসের দাম বেড়েছে এমন হারে যে, এইসব ছিটেফোঁটা খয়রাতির সঙ্গে তার তুলনাই হয় না। আট ঘণ্টা শ্রম-সময়কে বাড়িয়ে বারো ঘণ্টা করে দেওয়া হয়েছে। মালিকদের মুনাফা আকাশচুম্বী করতে নূ্যনতম বেতনের কোনও বালাই কোনও দলের কোনও সরকার রাখেনি। স্বাভাবিক ভাবেই একের পর এক নির্বাচন আসে-যায় শোষণ, বঞ্চনা আর প্রতারণা সাধারণ মানুষের জীবনে অনড় হয়েই থেকে যায়। যে শোষণমূলক পুঁজিবাদী সমাজ ব্যবস্থার অস্তিত্বের কারণে শাসক দলগুলি জনজীবনে এমন দুর্ভোগ চাপিয়ে দিতে পারছে, সেই ব্যবস্থারই সমর্থক, রক্ষক, প্রতিপালক হয়ে কী করে এই দলগুলি সেই দুর্ভোগ থেকে জনগণকে রক্ষা করবে! তা হলে জনসাধারণের জীবনে, শ্রমজীবী মানুষের জীবনে এই কি ভবিতব্য? এর কি কোনও পরিবর্তন নেই? এই কি যুগ যুগ ধরে চলতে থাকবে?

পরিবর্তন অবশ্যই আছে। কিন্তু সেই পরিবর্তন এই ব্যবস্থারই রক্ষক বুর্জোয়া-পেটিবুর্জোয়া দলগুলির একটির বদলে আর একটিকে ভোট দিয়ে সরকারে বসিয়ে আসবে না। তার জন্য দরকার এই পুঁজিবাদী রাজনীতির বিকল্প শ্রমজীবী মানুষের স্বার্থরক্ষার বামপন্থী রাজনীতি। সে রাজনীতি ক্ষমতা দখলের হীন রাজনীতি নয়। সংগ্রামী বামপন্থার গণআন্দোলনের রাজনীতি। গণসংগ্রামের বিপ্লবী রাজনীতি।

কিন্তু কোথায় সেই সংগ্রামী বামপন্থার বিকল্প রাজনীতি? যারা নিজেদের বৃহৎ বামপন্থী দল বলে দাবি করেন, এতগুলি রাজ্যের নির্বাচনে কোথাও তারা সেই বিকল্প বামপন্থী রাজনীতির নজির রাখতে পেরেছেন কি? পারেননি। সিপিএম সিপিআইয়ের মতো দলগুলি বুর্জোয়াদেরই বিকল্প আর একটি জোট ‘ইন্ডিয়া’তে গিয়ে সামিল হয়েছেন। এই ইন্ডিয়া জোট কি নীতিগত ভাবে বিজেপির বিকল্প জোট? বামপন্থীরা কি বিকল্প কোনও নীতি এই জোটের মধ্যে তুলে ধরতে পেরেছেন? বিজেপির আর্থিক নীতির বিকল্প কোনও নীতি কি ইন্ডিয়া জোটের রয়েছে? ইন্ডিয়া জোট আগামী লোকসভা নির্বাচনে জয়ী হলে কি বিজেপির বেসরকারিকরণের নীতি পরিত্যাগ করবে? বিজেপি যে ভাবে শ্রম আইন বদলের দ্বারা শ্রমজীবী মানুষের সমস্ত অর্জিত অধিকারগুলিকেই কেড়ে নিয়েছে, সেগুলি ফিরিয়ে দেবে? না, এমন কোনও ঘোষণাই এই জোটের পক্ষ থেকে করা হয়নি। বিজেপির যে সাম্প্রদায়িক রাজনীতি শ্রমজীবী মানুষের ঐক্যকে ধ্বংস করছে, ইন্ডিয়া জোটের নীতি তার কোনও বিকল্প দেখাতে পেরেছে? বাস্তবে ইন্ডিয়া জোটের বুর্জোয়া-পেটি বুর্জোয়া দলগুলির একটিও নীতিগত ভাবে ধর্মনিরপেক্ষতার এমনকি বুর্জোয়া ধারণাকেও পোষণ করে না। বুর্জোয়া সংবাদমাধ্যমই প্রতিদিন লিখছে, বিজেপি যদি কড়া হিন্দুত্বের লাইন নিয়ে চলে তো কংগ্রেস নরম হিন্দুত্বের লাইন নিয়ে চলছে। অর্থাৎ উভয় দলই সাম্প্রদায়িকতার লাইন নিয়ে চলেছে।

কংগ্রেস, তৃণমূল, সমাজবাদী, আরজেডি, ডিএমকে, আপ প্রভৃতি বুর্জোয়া-পেটি বুর্জোয়া দলগুলি যে নীতি নিয়ে চলছে, যা নানা কথার চাতুরিতে এই শোষণমূলক পুঁজিবাদী ব্যবস্থাকে টিকিয়ে রাখারই রাজনীতি, তথাকথিত এই বৃহৎ বামপন্থী দলগুলি সেই নীতি মেনেই এই জোটে সামিল হয়েছেন। এবং জোট-ধর্ম অনুযায়ী কোথাও কংগ্রেসকে, কোথাও আরজেডিকে, কোথাও এদেরই অন্য কাউকে ভোট দেওয়ার জন্য জনগণের কাছে আবেদন করে চলেছেন।

তা হলে তাদের ইন্ডিয়া জোটে সামিল হওয়ার দ্বারা দেশের শোষিত বঞ্চিত শ্রমজীবী মানুষের কোন উপকারটা হল? সিপিএমের অনেক আবেদন-নিবেদন সত্ত্বেও রাজস্থানে, মধ্যপ্রদেশে কিংবা তেলেঙ্গনায় কংগ্রেস তাদের কোনও আসন ছাড়তে রাজি হয়নি। সিপিএম রাজস্থানে তাদের গতবারের জেতা দুটি আসনই এ বার হারিয়েছে। কিন্তু কংগ্রেস যদি তাদের আসন ছাড়ত এবং সিপিএম নিজেদের আসন দুটি রক্ষা করতে পারত কিংবা তাদের আসন আরও কয়েকটা বাড়ত, তার দ্বারাও কি বামপন্থা শক্তিশালী হত? শ্রমজীবী মানুষের বেঁচে থাকার লড়াই জোরদার হত? তাদের জেতা-হারার সঙ্গে বামপন্থা শক্তিশালী হওয়ার আদৌ কি কোনও সম্পর্ক আছে? পশ্চিমবঙ্গে তাঁরা ৩৪ বছর ধরে নিরঙ্কুশ রাজত্ব করেছেন। তার দ্বারা বামপন্থা শক্তিশালী হয়েছে? সিপিএম নেতারাও জানেন, শক্তিশালী হওয়া দূরের কথা, বরং বামপন্থা কলঙ্কিত হয়েছে। পশ্চিমবাংলায় তাঁরা সমর্থন হারিয়েছেন এবং দুর্নীতি-স্বজনপোষণ-মালিক তোষণ দেখে বামপন্থা সম্পর্কে সাময়িক ভাবে হলেও কিছু মানুষের মনে বিভ্রান্তি তৈরি হয়েছে। কেরালাতেও তাঁরা সরকারে। সেখানে বামপন্থার ভিত্তিতে কোনও বিকল্প কি তাঁরা তুলে ধরেছেন। নাকি শিক্ষা, স্বাস্থ্য, বিদ্যুৎ সহ প্রতিটি ক্ষেত্রে বিজেপি-কংগ্রেসের রাস্তাতে পুঁজিপতিদের স্বার্থই রক্ষা করে চলেছেন!

এটা ঘটল এই কারণে যে, শ্রমজীবী মানুষের স্বার্থরক্ষার রাজনীতি, তাদের মুক্তিসংগ্রাম শক্তিশালী করার রাজনীতি তাঁরা করেননি। বামপন্থার নামে নানা কথার চাতুরিতে তাঁরা পুঁজিবাদেরই সেবা করেছেন। কিন্তু যেহেতু তাঁরা বামপন্থার নাম নিয়ে ‘ইনকিলাব জিন্দাবাদ’, ‘দুনিয়ার মজদুর এক হও’ স্লোগান তুলে, লাল পতাকা উড়িয়ে ক্ষমতায় বসেছিলেন, তাই বড় অংশের এক দল মানুষ বিচার না করেই তাঁদের শ্রমিক শ্রেণির দল বলে ধরে নিয়েছিলেন। তাঁদের স্বরূপ চিনতে এই অংশের মানুষের কিছুদিন সময় লেগেছে। মনে পড়ে যায় সাহিত্যিক শরৎচন্দ্রের সেই বিখ্যাত উক্তি– মিথ্যাকে মানুষ চিনতে পারে, কিন্তু সত্য যদি মিথ্যার সঙ্গে জড়িয়ে থাকে, মিশে থাকে, তবে না যায় সত্যকে আলাদা করে চেনা, না করা যায় মিথ্যাকে আলাদা। এ ক্ষেত্রেও তাই, তাঁদের সোসাল ডেমোক্রেটিক আপসকামী চরিত্রের সঙ্গে বামপন্থী বুলি মিশেছিল বলে অসচেতন মানুষের চিনতে দেরি হয়েছে, কিন্তু তাঁদের মেকিত্ব শেষ পর্যন্ত ঠিক ধরা পড়েছে।

এর ফল কী হয়েছে? বামপন্থা দুর্বল হয়েছে। সংগ্রামী বামপন্থার বিকল্প রাস্তায় চললে হয়ত সিট জেতার গ্যারান্টি পাওয়া যেত না, কিন্তু শোষিত মানুষের সামনে মুক্তির সঠিক রাস্তাটা তুলে ধরা যেত। এটা দেখানো যেত যে, সঠিক নীতির ভিত্তিতে ঐক্যবদ্ধ না হয়ে, লড়াই না গড়ে তুলে শোষিত মানুষ কখনও তার দাবি আদায় করতে পারে না। কিন্তু ক্ষমতা ভোগ করার লোভে, এমএলএ-এমপি-মন্ত্রী হওয়ার মোহে তারা আপাতকঠিন এই রাস্তাকে সব সময়ই এড়িয়ে চলেছে। এই লোভেই পুঁজিপতি শ্রেণির অন্যতম বিশ্বস্ত দল কংগ্রেসের সঙ্গে জোট করতেও তাদের বাধেনি। এস ইউ সি আই (কমিউনিস্ট) উদ্যোগ নিয়ে ছটি বামপন্থী দলের যে সংগ্রামী জোট গড়ে তুলেছিল তাঁরা কোনও কিছু না জানিয়েই এস ইউ সি আই (সি)কে সেই জোট থেকে বাদ দিয়ে দেয়। কেন না তাতে কংগ্রেস ও অন্য জাতপাত ভিত্তিক দলগুলোর সঙ্গে ভোটের দরকষাকষির বদলে সংগ্রামী বামপন্থার রাস্তায় চলতে হত।

তাই এস ইউ সি আই (সি) একাই সংগ্রামী বামপন্থার লাইন নিয়ে এগিয়ে চলেছে। মধ্যপ্রদেশে, রাজস্থানে কিংবা অন্য রাজ্যগুলিতে যত আসনে লড়েছে তার প্রচারে শোষিত মানুষের সামনে এই সংগ্রামী বিকল্পই তুলে ধরেছে। নীতি যদি সঠিক হয়, নেতৃত্ব যদি সঠিক হয়, যদি তা মানুষের মুক্তির সঠিক রাস্তা দেখাতে পারে তবে সমর্থন আজ কম থাকলেও ক্রমাগত সেই সমর্থন বাড়বে এবং একদিন শক্তিশালী সংগঠন গড়ে ওঠার মধ্য দিয়ে জোরদার গণআন্দোলন গড়ে উঠবে। আর নীতি যদি ভুল হয়, যে কোনও প্রকারে সমর্থন পাওয়াই যদি উদ্দেশ্য হয় তবে একদিন অনেক সমর্থন পেলেও সে সমর্থন থাকবে না। এস ইউ সি আই (কমিউনিস্ট)-এর প্রতিষ্ঠাতা, এ যুগের অন্যতম মহান মার্ক্সবাদী দার্শনিক শিবদাস ঘোষ যেদিন সিপিআইয়ের মতো একটি শক্তিশালী দল দেশে থাকা সত্তে্বও সেই দলটি সঠিক মার্ক্সবাদী দল নয়, এই সিদ্ধান্তের ভিত্তিতে দেশের একটি সত্যিকারের কমিউনিস্ট পার্টি হিসাবে এস ইউ সি আই (কমিউনিস্ট)-কে গড়ে তুলেছিলেন সেদিন তাঁর পাশে হাতে গোনা কয়েক জন সহযোদ্ধা ছিলেন। আজ সেই পার্টি দেশের ২৫-২৬টি রাজ্যে সংগ্রামী বামপন্থী দল বলে পরিচিতি লাভ করেছে। দেশ জুড়ে সংখ্যাগরিষ্ঠ শ্রমিক, কৃষক, দরিদ্র-নিম্নবিত্ত মানুষ পুঁজিবাদী শোষণ-নিপীড়নে পিষ্ট হচ্ছে, মুক্তি-যন্ত্রণায় ছটফট করছে, পুঁজিবাদী নিপীড়ন সহ্য করতে না পেরে মাঝে মাঝেই স্বতঃস্ফূর্ত ক্ষোভে ফেটে পড়ছে এবং রাষ্ট্রীয় দমন-পীড়নের শিকার হচ্ছে। এই পরিস্থিতিতে সঠিক বিপ্লবী লাইন ছাড়া কে তাদের আস্থা, সাহস এবং বল জোগাতে পারে! এস ইউ সি আই (সি) সর্বশক্তি দিয়ে সেই কাজটাই করছে।

আজ সিপিএম-সিপিআইয়ের বামপন্থী কর্মীদের ভেবে দেখতে হবে, তারা তাঁদের নেতাদের দেখানো ভোট-রাজনীতির রাস্তায় হাঁটবেন, নাকি শোষিত মানুষের যথার্থ মুক্তির প্রয়োজনে বিকল্প বামপন্থী রাস্তায়, যা শ্রমজীবী মানুষের সংগঠিত গণআন্দোলনের রাস্তা, লড়াইয়ের রাস্তা, আপসহীনতার রাস্তা, সেই রাস্তায় হাঁটবেন।