জার্মানিতে ৬ দিনের রেল ধর্মঘট

‘জার্মান ট্রেন চালক ইউনিয়ন’-এর নেতৃত্বে ২৪ জানুয়ারি দুপুর ২টো থেকে ২৯ জানুয়ারি সন্ধে পর্যন্ত ৬ দিনের লাগাতার রেল ধর্মঘটের ডাক দিয়েছিলেন জার্মানির একটি রাষ্ট্রায়ত্ত রেল কোম্পানির ট্রেন চালকরা। সাপ্তাহিক কাজের সময় ৩৮ ঘন্টা থেকে কমিয়ে ৩৫ ঘন্টা করা, বেতন বাড়ানো এবং দেশের সাম্প্রতিক মুদ্রাস্ফীতির পরিস্থিতিতে বোনাস দেওয়ার দাবিতে শ্রমিকরা এই ধর্মঘট ডেকেছিলেন। জার্মানির ইতিহাসে এটি ছিল রেল শ্রমিকদের ডাকা দীর্ঘতম সময়ের ধর্মঘট।

শ্রমিক সংগঠন এআইইউটিইউসি-র সর্বভারতীয় সম্পাদক শংকর দাশগুপ্ত এক বিবৃতিতে আন্দোলনকারী শ্রমিকদের প্রতি সংহতি জ্ঞাপন করে বলেন, গোটা ইউরোপ জুড়েই পুঁজিবাদী শাসকের বিরুদ্ধে শ্রমিক আন্দোলনের জোয়ার উঠছে, শাসকের দমনপীড়ন, চোখরাঙানি পরোয়া না করে শ্রমিকরা তাঁদের দাবি নিয়ে রাস্তায় নামছেন। স্পেনের বিভিন্ন বিমানবন্দরের কর্মচারী ও নিরাপত্তারক্ষীরা কর্মক্ষেত্রের অমানবিক পরিস্থিতির উন্নতির দাবিতে সোচ্চার হয়েছেন। ২৪ জানুয়ারি ইটালি জুড়ে ২৪ ঘন্টার ধর্মঘট পালিত হয়েছে গণপরিবহন কর্মচারীদের ডাকে। লন্ডনে ভূগর্ভস্থ রেলের কর্মচারীরা ৬ দিন ব্যাপী ধর্মঘট পালন করে উদ্ধত কর্তৃপক্ষকে তাঁদের সাথে আলোচনায় বসতে বাধ্য করেছেন।

মহান লেনিন তাঁর ‘অন স্ট্রাইক’ রচনায় বলেছিলেনঃ ‘…প্রতিটি ধর্মঘট শ্রমিকদের মনে করিয়ে দেয় যে, তাদের পরিস্থিতি হতাশাজনক নয়, তারা কেউ একা নয়। ধর্মঘটীদের উপরই শুধু নয়, আশেপাশের অন্যান্য কারখানার এবং একই শিল্পতালুকের অন্যান্য শ্রমিকদের উপরেও ধর্মঘটগুলি কী মারাত্মক প্রভাব ফেলে দেখুন। এমনি সময় শ্রমিক টুঁ শব্দটি না করে কাজ করে যায়, মালিকের বিরোধিতা করে না, নিজের অবস্থা নিয়েও মুখ খোলে না। কিন্তু ধর্মঘটের সময় সে সোচ্চারে নিজের দাবি জানায়, তার এতদিনের শোষণ-বঞ্চনার কথা মালিকের সামনে তুলে ধরে, নিজের অধিকার আদায়ের জন্য লড়ে। এইসময় সে শুধুমাত্র নিজের কথা, নিজের মাইনের কথা ভাবে না, সে তার সমস্ত সহকর্মীর কথা ভাবে, যারা এতদিন তার সাথে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে যন্ত্র চালিয়েছে এবং আজ যারা কোনও শাস্তি বা ক্ষতির পরোয়া না করে শ্রমিকদের সামগ্রিক স্বার্থের পক্ষে দাঁড়িয়েছে।’