ইরানের মানুষের লড়াই মৌলবাদ ফসিবাদ উচ্ছেদের লক্ষ্যেই

কলকাতা

ইরান জুড়ে সাধারণ মানুষের গণতান্ত্রিক সংগ্রামের মশাল জ্বলছে৷ তার দিকে তাকিয়ে আছেন গোটা বিশ্বের গণতন্ত্রপ্রিয় মানুষ৷ হিজাব ঠিকমতো না পরার অভিযোগে পুলিশের হাতে গ্রেপ্তার হওয়া ২২ বছরের তরুণী মাহসা আমিনির মর্মান্তিক মৃত্যু যে আন্দোলনের জন্ম দিয়েছে তা আজ গোটা দেশের সাধারণ মানুষের নিজস্ব আন্দোলনে পরিণত হয়েছে৷ নারী–পুরুষ–ছাত্র–যুব নির্বিশেষে সমাজের সমস্ত অংশের ব্যাপক মানুষের অংশগ্রহণে এই গণআন্দোলনের শক্তি এতটাই বেড়েছে যে তা ক্ষমতাসীন মৌলবাদী–ফ্যাসিবাদী শাসকের চোখে চোখ রেখে অত্যাচারী জমানা বদলের আওয়াজ তুলছে৷ রাষ্ট্রের দমনপীড়নে ইতিমধ্যেই চারশোর বেশি মানুষের মৃত্যু হয়েছে৷ তার মধ্যে ৪০ জনই শিশু৷ বোঝা যায় সপরিবারে মানুষ আন্দোলনে সামিল৷ পুলিশের আক্রমণে হাজার হাজার মানুষ আহত হয়েছেন৷ গ্রেপ্তার হয়েছেন অসংখ্য মানুষ৷ সে সব মোকাবিলা করে আন্দোলন এগিয়ে চলেছে৷ এই আন্দোলন সাধারণ মানুষের আশা–ভরসার এমন এক প্রতীকে পরিণত হয়েছে যে, সাম্প্রতিক বিশ্বকাপ ফুটবলে ইরানের ফুটবলাররাও রাষ্ট্রের দমন–পীড়নের প্রতিবাদে জাতীয় সঙ্গীত গাওয়ার সময় কণ্ঠ মেলাননি৷ ইরানি দর্শকরা গ্যালারিতে প্রতিবাদী পোস্টার তুলে ধরেছেন৷ সশস্ত্র রাষ্ট্রশক্তির বিরুদ্ধে নিরস্ত্র জনতার এই সংগ্রামকে বিশ্বের মানুষ কুর্নিশ জানাচ্ছেন৷ সংগ্রামী অভিবাদন জানাচ্ছেন৷

পশ্চিম ইরানের সাকেজ শহরে মাহসা আমিনির কবরের পাশে দাঁড়িয়ে চোখের জলকে ঘৃণায় রূপান্তরিত করে হাজার হাজার মানুষ শপথ নিয়েছেন, ‘প্রিয় আমিনি, তুমি মরবে না, তোমার নাম হবে প্রতিরোধের প্রতীক’৷ তারপর সমবেত জনতা গর্জে ওঠে ‘ডিক্টেটর নিপাত যাক’৷

আমিনির মৃত্যুকে যদি ক্ষোভের বারুদে অগ্নিসংযোগ ধরা হয় তা হলে জনমানসে এত ক্ষোভের কারণ কী? আর এই বিক্ষোভে মহিলারাই তো পথিকৃৎ৷ তাদের অবস্থাই বা কী?

ধর্মীয় মৌলবাদী শাসনে মহিলাদের দুঃসহ অবস্থা

জার্মান সংবাদপত্র ‘আনজেরে জাইট’কে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে ইরানের বামপন্থী দল ‘তুদে পার্টি’র আন্তর্জাতিক মুখপাত্র মহম্মদ ওমিদভার জানাচ্ছেন, সরকারি পরিসংখ্যান অনুযায়ী ইরানে ৪০ শতাংশের বেশি জনগণ দারিদ্র সীমার নিচে৷ বেকারত্ব ভয়াবহ, কোনও কোনও প্রদেশে তা ৭০ শতাংশের বেশি৷ এর সঙ্গে জুড়ে আছে শাসকদের সীমাহীন দুর্নীতি৷ আর চলছে ব্যক্তি স্বাধীনতা ও গণতান্ত্রিক অধিকারের নির্মম দলন৷ সৌদি আরবের শাসকরা এবং আফগানিস্তানের তালিবানরা মহিলাদের উপর যে ধরনের ফতোয়া জারি করেছে, ইরানেও তাই৷ মানুষ হিসাবে যে বুনিয়াদি অধিকার থাকা উচিত, তার কিছুই ইরানের মহিলাদের নেই৷ এমনকী তার নিজের শরীরের উপর নিজের অধিরকারটুকুও নেই৷

ইরান ধর্মীয় মৌলবাদীদের দ্বারা শাসিত একটি পুঁজিবাদী ফ্যাসিস্ট রাষ্ট্র৷ এ যে কী দুঃশাসন ইরানের জনগণ বিশেষ করে মহিলারা তা উপলব্ধি করছেন জীবন দিয়ে৷ মৌলবাদী শাসকরা মেয়েদের বিয়ের বয়স ধার্য করেছিল ৯ বছর৷ জনগণের প্রবল প্রতিবাদের সামনে পড়ে ২০০২ সালে পার্লামেন্ট মেয়েদের বিয়ের বয়স বাড়িয়ে করে ১৩ বছর৷ অধিকারের প্রশ্নে নারী–পুরুষের বৈষম্য ব্যাপক৷ পুরুষেরা মুখে তালাক বললেই বিবাহ–বিচ্ছেদ হয়ে যায়৷ কিন্তু নারী বিবাহ বিচ্ছেদ চাইলে তাকে যেতে হবে কোর্টে৷ একজন বিবাহিত মহিলা বিদেশে যাওয়ার পাসপোর্ট পাবে না, যদি না স্বামী লিখিত অনুমতি দেয়৷ সম্পত্তির উত্তরাধিকারের ক্ষেত্রেও রয়েছে ব্যাপক বৈষম্য৷ স্বামী মারা গেলে তার সম্পত্তিতে স্ত্রীর অধিকার নগণ্য, মাত্র সাড়ে ১২ শতাংশ৷ কিন্তু স্ত্রী মারা গেলে, তার সম্পত্তি পুরোটাই পাবে স্বামী৷ পৈত্রিক সম্পত্তিতে মেয়ের ভাগ ছেলেদের অর্ধেক৷ বিচারবিভাগে মেয়েদের চাকরির কোনও অধিকার নেই৷ রাষ্ট্রপতি নির্বাচনেও মেয়েদের দাঁড়ানো নিষিদ্ধ৷ কোনও কোনও ধর্মীয় নেতা এমনও বাণী দিচ্ছে যে মহিলাদের মস্তিষ্কের শক্তি পুরুষের অর্ধেক৷ কথাগুলি হঠাৎ শুনলে বিজেপি আর এস এসের নেতাদের মুখ নিঃসৃত বাণী বলে মনে হয়৷ আসলে হিন্দু মৌলবাদই হোক বা মুসলিম মৌলবাদ– সব মৌলবাদের বহিরঙ্গে পার্থক্য যাই থাক, মর্মবস্তুতে এরা এক৷ এদের লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য প্রগতির পথে প্রতিবন্ধক৷

আর্থিক সঙ্কটের বিরুদ্ধে ধারাবাহিক সংগ্রাম

২০১৭ সালের ২৯ ডিসেম্বর তুদে পার্টির কেন্দ্রীয় কমিটি দেশবাসীদের উদ্দেশে বিবৃতি দেয়৷ তাতে বলা হয়, ‘‘ধর্মীয় মৌলবাদ শাসিত ইরানে ক্রমবর্ধমান দারিদ্র, বেকারত্ব, মূল্যবৃদ্ধিতে জনগণ বিপর্যস্ত৷ কিন্তু শাসন ক্ষমতায় আসীন ব্যক্তিরা বিলাসী জীবনে মত্ত৷ দেশের সম্পদ লুঠ করে বিপুল বৈভবের অধিকারী এই শাসকরা জনগণকে বলছে, ‘সহ্য করো’, ‘ধর্মীয় শাসনকে রক্ষা করো’– কিন্তু এসব বাণী জনজীবনে ধ্বংস ছাড়া আর কিছু আনেনি৷ এর বিরুদ্ধে ২০১৭ সালেও মানুষ বিক্ষোভে ফেটে পড়েছিল৷ বিক্ষোভের অভিঘাত আছড়ে পড়েছিল বিভিন্ন সরকারি সংস্থার বিরুদ্ধে৷ সরকার পার্লামেন্ট থেকে শুরু করে বিচারবিভাগ, ধর্মীয় রক্ষীবাহিনী এবং সর্বোচ্চ ধর্মীয় নেতা, যাদের মূল কাজ হয়ে দাঁড়িয়েছে বৃহৎ পুঁজিপতিদের স্বার্থরক্ষা, তাদের বিরুদ্ধে গণবিক্ষোভ ফেটে পড়েছিল৷ দেশের সংখ্যাগরিষ্ঠ মানুষ ধর্মীয় স্বৈরাচার থেকে মুক্তি চায়, চায় দমন পীড়নের অবসান, চায় সামাজিক ন্যায় বিচার৷ এইসব দাবি আদায় করা সম্ভব বিদেশি প্রভাব মুক্ত হয়ে সমস্ত স্বাধীনতাকামী দেশবাসীর যুক্ত আন্দোলনের মধ্য দিয়ে৷’’

চলমান গণবিক্ষোভের কারণ ব্যাখ্যা করতে গিয়ে মহম্মদ ওমিদভার আরও বলেন, ‘গত দু’বছর ধরে ইরানে বিক্ষোভ আন্দোলন নানাভাবে চলছে৷ বিভিন্ন শিল্পক্ষেত্রে অসংখ্য শ্রমিক ধর্মঘট হয়েছে৷ এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি গুরুত্বপূর্ণ হাফট টাপে আখভিত্তিক কৃষিশিল্প কমপ্লেক্স, আরকের হেভি ইক্যুইপমেন্ট প্রোডাকশন, পেট্রোলিয়াম শিল্পের ধর্মঘট, শিক্ষক ধর্মঘট, পেনশনার্সদের ধর্মঘট৷ জনজীবনে যে তীব্র অর্থনৈতিক সঙ্কটের বিরুদ্ধে এই ধর্মঘট তার পিছনে রয়েছে উদারবাদী নীতি, যা বিশ্ব ব্যাঙ্ক এবং আইএমএফের মদতে গেড়ে বসেছে৷ অর্থনৈতিক সঙ্কটকে আরও ভয়াবহ করে তুলেছে আমেরিকার চাপানো বাণিজ্যিক নিষেধাজ্ঞা’৷

ইরানের মানুষ বারে বারে আন্দোলনে ফেটে পড়েছে৷ ২০০৯ সালে রাষ্ট্রপতি নির্বাচনের প্রহসনের বিরুদ্ধে মানুষ লড়েছে৷ কিন্তু ২০১৭–র আন্দোলন নানা দিক থেকে গুরুত্বপূর্ণ৷ এই আন্দোলন সরাসরি আঙুল তুলেছে পুঁজিবাদ সৃষ্ট দারিদ্র এবং প্রাতিষ্ঠানিক দুর্নীতির বিরুদ্ধে৷ এই আন্দোলনে শ্রমজীবী নারী পুরুষ এবং বেকার যুবকদের অংশগ্রহণ ছিল ব্যাপক৷ দাবি ছিল ধর্মীয় প্রজাতন্ত্র নিপাত যাক, সুপ্রিম শাসক খোমেইনির মৃত্যুদণ্ড দিতে হবে, প্রেসিডেন্ট রৌহানির মৃত্যুদণ্ড চাই এবং তথাকথিত রেভলিউশনারি গার্ডদের মৃত্যুদণ্ড দিতে হবে৷ এই আন্দোলনের বছর খানেক আগে কর্মক্ষেত্রে দুঃসহ পরিবেশ দূর করা এবং বকেয়া বেতন মেটানোর দাবিতে ধর্মঘট হয়েছে৷ অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষক ও নার্সরা আন্দোলনে ফেটে পড়েছে৷ কারণ ব্যাঙ্ক দেউলিয়া হয়ে যাওয়ার জন্য তাদের কষ্টার্জিত স্বল্প সঞ্চয়ও হারাতে হয়েছিল৷ সব মিলে ইরান একটা বিক্ষোভের আগ্নেয়গিরি৷

আট কোটি মানুষের দেশ ইরান৷ প্রাকৃতিক সম্পদে ভরপুর এই দেশ৷ খনিজ তেল, গ্যাস, কয়লা, তামা সহ নানা খনিজ সম্পদ থাকলেও এই সম্পদে জনগণের কোনও অধিকার নেই৷ তুদে পার্টির কেন্দ্রীয় কমিটি ইরানের জনগণের প্রতি আহ্বান জানিয়ে ২০১৭ সালেই বলেছিল, এই আন্দোলনে আপনাদের অংশগ্রহণ বৃদ্ধি করুন, জনজীবনের সঙ্গে সম্পর্কিত দাবিগুলি তুলে ধরুন৷ অত্যাচারী জমানা বদল, আর্থিক বঞ্চনার অবসানের দাবিতে জাতীয় সম্পদ লুটের বিরুদ্ধে সোচ্চার হোন৷ প্রতিক্রিয়াশীল, বিভেদকামী শক্তিগুলিকে এড়িয়ে চলুন৷ কোনও ভাবেই এই আন্দোলনকে অতীতের মতো হাইজ্যাক হতে দেওয়া যাবে না৷

কোন আন্দোলন হাইজ্যাক হয়েছিল? হাইজ্যাক হয়েছিল ১৯৭৮–৭৯ সালের আন্দোলন, যা ইসলামিক রেভোলিউশন নামে খ্যাত৷ আর্মি জেনারেল রেজা শাহ ১৯২০ সালে ক্ষমতা দখলের পর থেকে তার অত্যাচারী শাসনের বিরুদ্ধে এই আন্দোলনে ধর্মীয় নানা জনগোষ্ঠী থেকে শুরু করে বিভিন্ন বামপন্থী ও মার্কসবাদী গ্রুপ যুক্ত ছিল৷ ধর্মীয় নেতা আয়াতোল্লা খোমেইনি এই আন্দোলনকে হাইজ্যাক করেন৷ ফলে এই আন্দোলনের মধ্য দিয়ে যে গণতন্ত্রীকরণের কাজটি হতে পারত, তা বাধাপ্রাপ্ত হয়ে গেল৷ ধর্মীয় মৌলবাদ রাষ্ট্রীয় ক্ষমতা করায়ত্ত করে ধর্মীয় অন্ধতা ও অনুশাসনের শৃঙ্খলে মানুষকে ক্রমাগত বাঁধতে শুরু করল৷ অসংখ্য গণতন্ত্রী, বামপন্থী, কমিউনিস্টকে হত্যা, বন্দি বা নির্বাসিত করা হল৷ ফলে একদিকে পুঁজিবাদী শোষণ নিপীড়ন বঞ্চনা, অন্যদিকে মৌলবাদী শক্তির ফ্যাসিস্ট বিধান ইরানে কায়েম করল এক ভয়ঙ্কর দুঃশাসন, যার বিরুদ্ধে আবারও জেগে উঠেছে বিদ্রোহের দামামা৷

এবারের আন্দোলনে তারুণ্যের জোয়ার

২০০৯ এবং ২০১৭ সালের আন্দোলনের থেকে ২০২২–এর এই আন্দোলনে কিশোর কিশোরী ছাত্রছাত্রীদের অংশগ্রহণ লক্ষণীয়৷ এর কারণ প্রধানত দুটো৷ প্রথমত, এদের সামনে কোনও ভবিষ্যৎ নেই৷ দ্বিতীয়ত, রাষ্ট্রের নীতি–পুলিশি জনগণকে গ্রহণযোগ্য কিছুই দিতে পারছে না৷ এর অন্তঃসারশূন্যতা তরুণদের কাছে ধরা পড়ে যাচ্ছে৷ ফলে প্রবীণদের থেকে অনেক বেশি তেজোদীপ্ত হয়ে এরা আন্দোলনের মশাল নিয়ে ধাবমান৷ এই আন্দোলনকারীদের পাশে এসে দাঁড়িয়েছেন ইরানের শিল্পী সাহিত্যিক বুদ্ধিজীবীরা,  খেলোয়াড়রা৷

ইরান সংহতি আন্তর্জাতিক জোট

ইরানের বিগত আন্দোলনগুলির প্রেক্ষাপটেই গড়ে উঠেছিল ইন্টারন্যাশনাল অ্যালায়েন্স ইন সাপোর্ট অব ওয়ার্কার্স ইন ইরান (আইএএসডব্লিউআই)৷ ২০১৮ সালের জানুয়ারি মাসে এই আন্তর্জাতিক জোট এক বিবৃতিতে বলে, ইরানের শ্রমিক শ্রেণি এবং বঞ্চিত মানুষ ব্যক্তিস্বাধীনতা, সাম্য, সামাজিক ও অর্থনৈতিক ন্যায়ের দাবিতে যে আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছে, জোট তার পাশে দৃৃভাবে দাঁড়িয়েছে৷ ইরানের ইসলাম রিপাবলিক একটি স্বৈরতন্ত্রী পুঁজিবাদী রাষ্ট্র, যে উদারনীতিবাদের নামে শ্রমিকদের উপর ভয়ঙ্কর আক্রমণ নামিয়ে এনেছে– তার বিরুদ্ধে নিন্দায় বিশ্বের শ্রমিক শ্রেণি, বাম ও প্রগতিশীল শক্তির এগিয়ে আসা উচিত৷ আমরা মনে করি, এই স্বৈরশাসন যে অপরাধ করে চলেছে তার বিরুদ্ধে বহির্বিশ্বের বামপন্থী শক্তিসমূহের নীরব থাকার কোনও যুক্তি নেই৷

ইরানের আন্দোলনে আমেরিকার প্রশাসন ও তার দোসর ইজরায়েল, ইরানের দক্ষিণপন্থী শক্তি এবং রাজতন্ত্রীদের হস্তক্ষেপের আমরা নিন্দা করি৷ ইরানের আন্দোলনের পাশে বিশেষ করে শ্রমিকশ্রেণি, বামপন্থী সমাজতান্ত্রিক সংগঠন এবং প্রগতিশীল শক্তিসমূহের দৃঢ়ভাবে দাঁড়ানো উচিত, বিবৃতির শেষ বক্তব্যটি খুব তাৎপর্যপূর্ণ৷ ‘অ্যান ইনজুরি টু ওয়ান ইজ অ্যান ইনজুরি টু অল– একজনের উপর আঘাত আমাদের সকলের উপর আঘাত৷’

প্রতিবাদ ভারতেরও

শ্রমিক শ্রেণির আন্তর্জাতিকতাবাদে বিশ্বাসী এসইউসিআই(কমিউনিস্ট) ২৫ নভেম্বর সারা ভারতে ইরান সংগ্রাম সংহতি দিবস পালন করে৷ দলের সাধারণ সম্পাদক কমরেড প্রভাস ঘোষ ২২ নভেম্বর এক বিবৃতিতে বলেন, ভারত সহ বিশ্বের সকল গণতান্ত্রিক চেতনাসম্পন্ন মানুষকে এই ন্যায়সঙ্গত ঐতিহাসিক আন্দোলনের প্রতি সমর্থন জানানোর আহ্বান জানান৷ সেই আহ্বানে সাড়া দিয়ে এ দিন রাজ্যে রাজ্যে মিছিল মিটিং সংগঠিত হয়৷ অল ইন্ডিয়া মহিলা সাংস্কৃতিক সংগঠনও ইরানের আন্দোলনের প্রতি সংহতি জানিয়েছে৷

ইরানের এই আন্দোলন দেখিয়ে গেল ধর্মভিত্তিক রাষ্ট্র হলেই উক্ত ধর্মাবলম্বী মানুষের জীবনে সুখ শান্তি আসবে একথা সত্য নয়৷ ধর্মীয় মৌলবাদীরা শোষণমূলক রাষ্ট্রের ক্ষমতা করায়ত্ব করে কীভাবে ফ্যাসিস্ট শাসন কায়েম করে এবং একমাত্র পুঁজিমালিকরাই এর দ্বারা কীভাবে লাভবান হয়, ইরান তারই অন্যতম উদাহরণ৷ এটা লক্ষণীয়, মুসলিম মৌলবাদীদের বিরুদ্ধে মুসলিম জনগণই বুক চিতিয়ে লড়ছে৷

হরিয়ানা
ওড়িশা
পাটনা
বাঙ্গালোর
আগরতলা
মেছেদা, পূর্ব মেদিনীপুর