ফ্যাসিবাদী জাতীয় শিক্ষানীতি প্রতিরোধ করুন — এস ইউ সি আই (কমিউনিস্ট)

কেন্দ্রীয় সরকারের নতুন জাতীয় শিক্ষানীতির বিরুদ্ধে তীব্র প্রতিবাদ জানিয়ে এস ইউ সি আই (কমিউনিস্ট) দলের সাধারণ সম্পাদক কমরেড প্রভাস ঘোষ ৩০ জুলাই এক বিবৃতিতে বলেন–

কোভিড–১৯ অতিমারি জনিত পরিস্থিতিতে মানুষের অসহায়তার সুযোগ নিয়ে বিজেপি পরিচালিত কেন্দ্রীয় সরকার সুচতুরভাবে সমস্ত শিক্ষক, শিক্ষাবিদ, ছাত্র, অভিভাবকদের প্রতিবাদকে পদদলিত করে নতুন জাতীয় শিক্ষানীতি ঘোষণা করে দিয়েছে৷ শিক্ষার বেসরকারিকরণ, বাণিজ্যিকীকরণ, গৈরিকীকরণ এবং শিক্ষাকে ফ্যাসিবাদী পথে চালনা করার বিজেপির নীতিকে কার্যকরী করার লক্ষ্যেই এই নতুন জাতীয় শিক্ষানীতি আনা হয়েছে৷

এই শিক্ষানীতির মূল উদ্দেশ্যগুলি হল, ১) গণতান্ত্রিকভাবে শিক্ষাব্যবস্থা পরিচালনার যেটুকু অবশেষ হিসাবে টিকে আছে, সেটুকুও ধ্বংস করে শিক্ষাক্ষেত্রে আমলাতান্ত্রিকতার সূচনা করা, ২) বিদ্যাসাগর, রামমোহন, জ্যোতিবা রাও ফুলে প্রমুখ নবজাগরণের বলিষ্ঠ প্রতিভূদের বৈজ্ঞানিক, গণতান্ত্রিক, ধর্মনিরপেক্ষ শিক্ষার জন্য যে লড়াই, তাকে ধূলিসাৎ করে ছাত্রছাত্রীদের মধ্যে মধ্যযুগীয় কূপমণ্ডুক, ধর্মীয় গোঁড়ামির মানসিকতার সঞ্চার করাই এই নীতির মূল লক্ষ্য, ৩) জাতীয় ও বিদেশি কর্পোরেটদের মুনাফা লাভের ক্ষেত্র হিসেবে শিক্ষাব্যবস্থাকে উন্মুক্ত করে দেবে এই নীতি, যার ফলে ব্যয়বহুল শিক্ষাক্ষেত্র সাধারণ ছাত্রছাত্রীদের কাছ থেকে শিক্ষাকে আরও দূরে সরিয়ে নিয়ে যাবে, ৪) এই নীতি প্রণয়ন করে সরকার শিক্ষার সমস্ত দায়ভার কর্পোরেটদের হাতে তুলে দিয়ে নিজেরা দায়মুক্ত হতে চাইছে, ৫) উন্নত মূল্যবোধ ও রুচি–সংস্কৃতিহীন শিক্ষিত শ্রেণি, আইনস্টাইন যাদের ‘শিক্ষিত যন্ত্র’ বলে অভিহিত করেছেন, সেরকম শ্রেণি সৃষ্টি করাই এই নীতির উদ্দেশ্য৷

এই জাতীয় শিক্ষানীতি জনস্বার্থ ও শিক্ষার বিরোধী৷ অগণতান্ত্রিক, অবৈজ্ঞানিক এই নীতি আসলে ক্ষমতাসীন পুঁজিপতি শ্রেণি ও শাসক দল বিজেপির নিজস্ব উদ্দেশ্য চরিতার্থ করার এক ফ্যাসিস্ট চক্রান্ত ছাড়া কিছুই নয়৷

আমরা শিক্ষক, শিক্ষাবিদ, বিদ্বজ্জন, অভিভাবক, ছাত্রছাত্রী সহ সমস্ত শুভবুদ্ধিসম্পন্ন মানুষকে এই সর্বনাশা নীতির বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়াতে ও আন্দোলনের মাধ্যমে সরকারকে এই নীতি বাতিলে বাধ্য করার লক্ষ্যে তীব্র আন্দোলন গড়ে তোলার আহ্বান জানাচ্ছি৷