জাতীয় শিক্ষানীতির বিরুদ্ধে দিল্লিতে সেভ এডুকেশন কনভেনশন

দিল্লির এন ডি তেওয়ারি হলে কনভেনশনে উপস্থিত শিক্ষানুরাগী মানুষের একাংশ। বক্তব্য রাখছেন অধ্যাপক তরুণকান্তি নস্কর।

২৪ সেপ্টেম্বর সারা ভারত সেভ এডুকেশন কমিটির দিল্লি শাখার উদ্যোগে কনভেনশন অনুষ্ঠিত হয় এন ডি তেওয়ারি হলে। কনভেনশনে উপস্থিত বক্তারা জাতীয় শিক্ষানীতির বিরুদ্ধে সোচ্চার হন। প্রায় ২০০ অধ্যাপক, শিক্ষক, অভিভাবক, কিষান আন্দোলনে যুক্ত ব্যক্তিদের উপস্থিতিতে বক্তারা বক্তব্য রাখেন।

 সভাপতির ভাষণে জেএনইউ-এর অধ্যাপক সচ্চিদানন্দ সিনহা বলেন, এই শিক্ষানীতি শিক্ষার উপর আরও প্রশাসনিক নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠা করতে চাইছে। জেএনইউ-তে পিছিয়ে পড়া শ্রেণির পড়ুয়াদের ভর্তির জন্য ব্যবহার করা সূচক সঠিক না হওয়ার ফলে তারা বঞ্চিত হচ্ছে।

এনসিইআরটি-র প্রাক্তন সদস্য ও দিল্লি বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক অনিতা রামপাল বলেন, সর্বাপেক্ষা দুঃখজনক বিষয় হল কেরালা সমেত সমস্ত রাজ্য সরকার বর্তমান এন সি ই আর টি-র তৈরি নতুন সিলেবাস কার্যকর করছে, যে সিলেবাস শিক্ষাবিদ নয়, মন্ত্রীদের নির্দেশে প্রণীত হয়েছে। কর্ণাটক সরকার একসময় মিড ডে মিলে আমিষ নিষিদ্ধ করার সুপারিশ করেছিল, কারণ হিসাবে বলেছিল যে ভারতীয়দের স্বাস্থে্যর পক্ষে আমিষ খাদ্য উপযুক্ত নয়।

হিমাচলপ্রদেশ সেন্ট্রাল ইউনিভার্সিটির অধ্যাপক নভনীত শর্মা বলেন, অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রগুলোর কর্মীদের যেহেতু প্রয়োজনীয় শিক্ষণ নেই, তাদের উপর প্রাক-প্রাথমিক শিশুদের লেখাপড়ার দায়িত্ব দেওয়া চলে না।

দিল্লি স্কুল অফ ইকনমিক্সের অধ্যাপক দিব্যেন্দু মাইতি শিক্ষাতে জিডিপি-র ২.৪ শতাংশের পরিবর্তে অন্তত ৬ শতাংশ খরচ করার দাবি করেন। শিক্ষার পরিকাঠামো উন্নয়ন এবং শিক্ষক নিয়োগে এই অর্থ ব্যয় করা উচিত। ভারতীয় জ্ঞানধারার নামে যে মিথ্যা প্রচার চলছে তার মুখোশ খুলে দেওয়ার আহ্বান তিনি জানান।

সারা ভারত সেভ এডুকেশন কমিটির সম্পাদক অধ্যাপক তরুণকান্তি নস্কর বলেন, ভারতীয় সংবিধানের ৫২এ (এইচ) ধারায় বিজ্ঞানভিত্তিক মানসিকতা গড়ে তোলার কথা বলা হয়েছে। তাকে অগ্রাহ্য করে ভারতীয় জ্ঞানধারার নামে ডারউইন তত্ত্ব, পর্যায় সারণী প্রভৃতি পাঠ্যবস্তু থেকে বাদ দেওয়া হয়েছে।

দিল্লি বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপিকা পূজা শর্মা বলেন, এই শিক্ষানীতিতে কর্মমুখী নানা শিক্ষার উপর গুরুত্ব দিতে বলায় বুনিয়াদি শিক্ষা মার খাচ্ছে।

মথুরা থেকে আসা কিসান আন্দোলনের প্রতিনিধিও আলোচনায় অংশ নেন। সম্মেলন থেকে অধ্যাপক নরেন্দ্র শর্মাকে সভাপতি ও সারদা দীক্ষিতকে সম্পাদক, অধ্যাপক সচ্চিদানন্দ সিনহাকে সভাপতিমণ্ডলীর অন্যতম সদস্য করে অল ইন্ডিয়া সেভ এডুকেশন কমিটির দিল্লি শাখা কমিটি গঠিত হয়। কমিটির পক্ষ থেকে নয়া জাতীয় শিক্ষানীতির বিরুদ্ধে আন্দোলনের কর্মসূচি গৃহীত হয়।