Breaking News

চার বছরের ডিগ্রি কোর্সের বিরুদ্ধে রাজ্য জুড়ে এআইডিএসও-র ডাকে বিশ্ববিদ্যালয় অভিযান

এ রাজ্যে জাতীয় শিক্ষানীতির সুপারিশ মেনে এই শিক্ষাবর্ষ থেকে স্নাতক স্তরে ৪ বছরের ডিগ্রি কোর্স ‘কারিকুলাম অ্যান্ড ক্রেডিট ফ্রেমওয়ার্ক’ চালুর সিদ্ধান্ত প্রত্যাহারের দাবিতে এবং উপাচার্যহীন বিশ্ববিদ্যালয়গুলিতে স্থায়ী উপাচার্য নিয়োগের দাবিতে ৬ জুন রাজ্যব্যাপী ‘বিশ্ববিদ্যালয় চলো’ কর্মসূচি পালন করল এআইডিএসও।

কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের সামনে বিক্ষোভ সভায় সংগঠনের রাজ্য সম্পাদক কমরেড বিশ্বজিৎ রায় বলেন, ৪ বছরের ডিগ্রি কোর্স চালুর বিরুদ্ধে আমরা কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় সহ রাজ্যের সমস্ত বিশ্ববিদ্যালয়ে মিছিল, বিক্ষোভ, অবস্থান কর্মসূচি, সভা করেছি এবং কর্তৃপক্ষের সঙ্গে দেখা করে সুনির্দিষ্ট মতামত জানিয়েছি। প্রতিটি জেলায় শত শত ছাত্রছাত্রী মিছিল করে বিশ্ববিদ্যালয়গুলির সামনে বিক্ষোভ দেখায়। সরকারি নির্দেশিকায় বলা হয়েছে, চার বছরের মধ্যে প্রথম বছরের পরই থাকবে ‘মাল্টিপল এন্ট্রি ও এক্সিট’-এর ব্যবস্থা।

বলা হয়েছে, বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান থেকে একজন ছাত্র স্নাতক কোর্সের জন্য প্রয়োজনীয় ক্রেডিট সংগ্রহ করতে পারবে। এই ভাবে রাজ্য সরকার ইউজিসি কর্তৃক স্নাতক স্তরে ‘কারিকুলাম অ্যান্ড ক্রেডিট ফ্রেমওয়ার্ক’ চালু করছে, যা আসলে কেন্দ্রের বিজেপি সরকারের জাতীয় শিক্ষানীতিকেই রাজ্যে বাস্তবায়িত করছে। আমরা মনে করি, রাজ্য সরকারের এই ঘোষণার মধ্যেই ছাত্রছাত্রীদের শিক্ষা-বাজারের ক্রেতায় পরিণত করার সামগ্রিক পরিকল্পনা রয়েছে। নতুন ব্যবস্থায় তিন বছরের ডিগ্রি কোর্সকে চার বছরের কোর্সে পরিণত করে ছাত্রছাত্রীদের আরও ১ বছরের বাড়তি খরচের বোঝা চাপিয়ে দেওয়া হচ্ছে। ফলে বাড়বে ড্রপ আউট। আর্থিক কারণ সহ যে কারণগুলির জন্য একজন ছাত্রছাত্রী মাঝপথে পড়াশোনা ছেড়ে দিতে বাধ্য হয়, সেই সমস্যা সমাধানের কোনও পদক্ষেপ না করে বাস্তবে বিভিন্ন নামে সার্টিফিকেট দিয়ে ড্রপ আউটকেই বৈধতা দেওয়া হল। এই পদ্ধতিতে উচ্চশিক্ষার মান সম্পূর্ণ ধ্বংস হবে, কলেজগুলি পরিণত হবে পরিকাঠামোহীন ডিগ্রি কেনা-বেচার জায়গায়। মাল্টিডিসিপ্লিনারি কোর্স চালুর মধ্য দিয়ে একদিকে যেমন শিক্ষার বেসরকারিকরণ হবে, তেমনি উচ্চশিক্ষার প্রাণসত্তা ধ্বংসপ্রাপ্ত হবে। ছাত্র-শিক্ষক-অভিভাবক সমাজের কোনও মতামত ছাড়াই কেন্দ্রীয় সরকারের এই ছাত্র স্বার্থবিরোধী নীতি চালু করছে রাজ্য সরকার।

পাশাপাশি, রাজ্যের অধিকাংশ বিশ্ববিদ্যালয়ে স্থায়ী উপাচার্য নেই। তার ফলে বিশ্ববিদ্যালয়ের দৈনন্দিন কাজ, বিশ্ববিদ্যালয় ও অধীনস্থ কলেজগুলোতে নিয়মিত পঠন পাঠন, পরীক্ষা নেওয়া, ফলপ্রকাশ, স্কলারশিপ ও গবেষণার সমস্যা সহ বহু প্রশাসনিক গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করার ক্ষেত্রে ছাত্রছাত্রী, অধ্যাপক ও শিক্ষাকর্মীদের নানা সমস্যার সম্মুখীন হতে হচ্ছে। উপাচার্য নিয়োগেও বিশ্ববিদ্যালয়ের কোনও প্রতিনিধি না রেখে চূড়ান্ত আমলাতান্ত্রিকতা কায়েম করা হচ্ছে। জাতীয় শিক্ষানীতি বাতিলের দাবিতে এআইডিএসও ২১-২৭ জুন সারা ভারত প্রতিবাদ সপ্তাহ কর্মসূচি পালনের ডাক দিয়েছে।