কর্পোরেটকে পাহাড় বেচতেই কি লাদাখ কেন্দ্রশাসিত

 

লাদাখে গণতান্ত্রিক আন্দোলনের প্রতি সংহতি জানিয়ে মানবাধিকার সংগঠন সিপিডিআরএস-এর রাজ্য সম্পাদক রাজকুমার বসাক ২৬ মার্চ এক বিবৃতিতে বলেন, পার্লামেন্টে সংগরিষ্ঠতার জোরে অগণতান্ত্রিকভাবে ৩৭০ ধারা বাতিলের ধারাবাহিকতাতেই জম্মু-কাশ্মীরকে দ্বিখন্ডিত করে লাদাখকে কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলে পরিণত করে কেন্দ্র সরকার। লাদাখকে সংবিধানের ষষ্ঠ তফসিলের রক্ষাকবচ দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েই উনিশের লোকসভা ভোট এবং কুড়ির পার্বত্য পরিষদের নির্বাচনে বিজেপি বিপুল ভোটে জেতে। দীর্ঘ টালবাহানার পর বিজেপি সরকার জানিয়ে দিয়েছে, ষষ্ঠ তফসিল হবে না।

লাদাখে এখন না আছে স্থানীয়দের জন্য সংরক্ষণ, না আছে গণতান্ত্রিক কাঠামো। এখানে বিধানসভা নেই, নির্বাচিত নেতা নেই সিদ্ধান্ত নেওয়ার জন্য, দিল্লি থেকে নিয়ন্ত্রিত একটি আমলাতান্ত্রিক শাসন চলছে। আর এই শাসনে কর্পোরেট পুঁজির অবাধে চলছে জমি দখল ও বেপরোয়া খননকার্য, যা লাদাখের বাস্তুতন্ত্র, জাতিগত সংস্কৃতি ও ঐতিহ্যকে ধ্বংস করছে। লাদাখবাসীর প্রশ্ন, পাহাড়গুলোকে বিভিন্ন কর্পোরেট শিল্প সংস্থা আর খনি সংস্থার কাছে বেচে দেওয়াটাই লাদাখকে কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল করার আসল উদ্দেশ্য নয় তো?

ক্ষুব্ধ লাদাখবাসীর আন্দোলন তীব্র হয়েছে ম্যাগসাইসাই পুরস্কারপ্রাপ্ত পরিবেশবিদ সোনম ওয়াংচুকের আমরণ অনশন শুরু হওয়ার পর। খোলা আকাশের নিচে মাইনাস ১৫ ডিগ্রি সেন্টিগ্রেডের হাড় কাঁপানো শীতে তিনি রাত কাটাচ্ছেন। আমাদের আশংকা যে কোন মুহূর্তে এই মানুষটির জীবন সংশয় হতে পারে। সংগঠনের পক্ষ থেকে লাদাখবাসীর গণতান্ত্রিক অধিকারের দাবিতে আন্দোলনের প্রতি সংহতি জানিয়ে লাদাখের সাধারণ মানুষের সঙ্গে কেন্দ্রের বিজেপি সরকারের ন্যক্কারজনক প্রতারণার তীব্র নিন্দা করা হয়েছে। পাশাপাশি দেশের গণতন্ত্রপ্রিয় সাধারণ মানুষের কাছে লাদাখবাসীর ন্যায়সঙ্গত এই আন্দোলনের প্রতি সমর্থন জানানোর আহ্বান জানানো হয়েছে।