৩৭০ ধারা বাতিলের স্বৈরাচারী সিদ্ধান্ত কাশ্মীর পরিস্থিতিকে আরও জটিল করে তুলবে

কলকাতা

৫ আগস্ট সকালে কেন্দ্রের বিজেপি সরকার সমগ্র দেশকে অন্ধকারে রেখে এবং কাশ্মীরকে কার্যত অবরুদ্ধ করে যেভাবে রাষ্ট্রপতির মাধ্যমে কাশ্মীরের ৩৭০ ধারা বাতিল করল, জম্মু–কাশ্মীরের রাজ্যের মর্যাদা কেড়ে নিল ৫ আগস্ট আহূত আজকের এই বিশাল সভা তার তীব্র প্রতিবাদ জানাচ্ছে৷

কাশ্মীরের স্বাধীনতা আন্দোলন যা ভারতের জাতীয়তাবাদী স্বাধীনতা আন্দোলন থেকে পৃথক ধারায় গড়ে উঠেছিল, তার প্রতি পূর্ণ মর্যাদা দিতেই ভারতীয় সংবিধানে জম্মু–কাশ্মীর রাজ্যকে বিশেষ বিশেষ কিছু বিধি ব্যবস্থা দিয়ে সংবিধানের ৩৭০ ধারা সর্বসম্মতিক্রমে সংযোজিত হয়৷ পাক সেনারা কাশ্মীর আক্রমণ করলে কাশ্মীরের জনগণই তার বিরুদ্ধে প্রতিরোধ খাড়া করেছিল এবং জাতীয়তাবাদী নেতা শেখ আবদুল্লার নেতৃত্বে ভারতে নিজেদের অন্তর্ভুক্ত করেছিল৷ স্বাধীনতার পর কেন্দ্রের কংগ্রেস সহ যে দলের সরকার থাকুক না কেন সব সরকারই ৩৭০ ধারার প্রতি কোনও মর্যাদা দেয়নি– কাশ্মীরের জনগণের স্বাতন্ত্র্য ও বিশেষ অধিকারগুলিকে কথায় কথায় পদদলিত করেছে যা কাশ্মীরের জনগণের ভাবাবেগকে আঘাত করে বিচ্ছিন্নতাবাদী ও পৃথকতাবাদী শক্তিগুলিকে জন্ম নিতে এবং প্রভাব বিস্তারে সাহায্য করেছে৷ পাকিস্তানের অনুপ্রবেশেরও সুবিধা করে দিয়েছে৷

আমাদের দল এস ইউ সি আই (কমিউনিস্ট) এবং ভারতবর্ষের প্রায় সকল গণতন্ত্রপ্রিয় শক্তিগুলি বরাবরই বলে এসেছে কাশ্মীরের অশান্ত পরিবেশে শান্তি ফিরিয়ে আনতে হলে সংবিধানের ৩৭০ ধারাকে পূর্ণ মর্যাদায় প্রতিষ্ঠিত করতে হবে ও কাশ্মীরী জনগণের স্বাতন্ত্র্যকে মর্যাদা দিতে হবে৷ এই অবস্থায় বিজেপি সরকার আজ যা করল তাতে আমাদের আশঙ্কা কাশ্মীরের পরিস্থিতি আরও অগ্নিগর্ভ হবে এবং কাশ্মীরী জনগণের ভাবাবেগ চূড়ান্ত আঘাতপ্রাপ্ত হয়ে বিচ্ছিন্নতাবাদী শক্তিকে আরও সাহায্য করবে৷ পাকিস্তানকেও নাশকতাবাদী কার্যকলাপ চালাতে সাহায্য করবে৷

(গণদাবী : ৭২ বর্ষ ২ সংখ্যা)