রাজ্য জুড়ে অশান্ত পরিস্থিতি : শিল্পী–সাংস্কৃতিক কর্মী–বুদ্ধিজীবী মঞ্চের সভা

এক অভূতপূর্ব অশান্ত পরিস্থিতি সারা পশ্চিমবঙ্গ জুড়ে৷ একটি গণতান্ত্রিক দেশের নাগরিক হিসেবে লজ্জায় মাথা হেঁট হয়ে যায় যখন দেশের পশ্চিমবঙ্গে ‘নির্বাচন’ শব্দটি উচ্চারণ করা মাত্র তার সাথে যুক্ত হয়ে পড়ে ত্রাস, আতঙ্ক, ভয়, সন্ত্রাস, হত্যা, হিংসা–প্রতিহিংসা, হিংস্রতা ইত্যাদি ভয়ঙ্কর বিভীষিকাময় শব্দগুলি৷

সংসদ নির্বাচন শেষ হওয়ার পর থেকেই পশ্চিমবঙ্গের বিভিন্ন অঞ্চলে মূলত বিজেপি ও তৃণমূল – এই দুই দলের মধ্যে সংঘর্ষকে কেন্দ্র করে যেভাবে সশস্ত্র আক্রমণ, অগ্নিসংযোগ, ভাঙচুর, একের পর এক হত্যাকাণ্ড ঘটে চলেছে, তা সারা রাজ্যের জনগণকে চরম উদ্বিগ্ণ করে তুলেছে৷ এই উদ্বেগ আরও বেড়ে যায় যখন প্রতিটি সংঘর্ষকেই সাম্প্রদায়িক ধর্মীয় বিদ্বেষ ছড়ানোর কাজে ব্যবহার করা হয় সচেতনভাবে৷

এই উদ্বেগ এ রাজ্যের শিল্পী–সাংস্কৃতিক কর্মী–বুদ্ধিজীবীদের স্থির থাকতে দেয়নি৷ পশ্চিমবঙ্গে শান্তি–শৃঙ্খলা–সম্প্র রক্ষার উদ্দেশ্যে সময়োপযোগী একটি নাগরিক কনভেনশনের আয়োজন করেছিলেন তাঁরা ১৮ জুন মৌলালী যুবকেন্দ্রে৷ হল ছাপিয়ে বাইরের উপচে পড়া ভীড় সেদিন বুঝিয়ে দিচ্ছিল নাগরিক উদ্বেগ কোন মাত্রায় পৌঁছেছে৷

কনভেনশনে সভাপতিত্ব করেন শিল্পী–সাংস্কৃতিক কর্মী–বুদ্ধিজীবী মঞ্চের সভাপতি বিশিষ্ট নাট্যকার বিভাস চক্রবর্তী৷ বক্তব্য রাখেন রাজ্যের প্রাক্তন অ্যাডভোকেট জেনারেল শ্রী বিমল চ্যাটার্জী, মানবাধিকার আন্দোলনের নেতা সুজাত ভদ্র, শিক্ষাবিদ মিরাতুন নাহার, অধ্যাপক ধ্রুবজ্যোতি মুখোপাধ্যায়, অধ্যাপক তরুণ নস্ক্র, অধ্যাপক মইদুল ইসলাম, সঙ্গীত শিল্পী পল্লব কীর্তনিয়া, প্রাবন্ধিক ও সমাজকর্মী আফরোজা খাতুন প্রমুখ৷ সভা পরিচালনা করেন মঞ্চের অন্যতম যুগ্ম সম্পদাক বিশিষ্ট সাংবাদিক শ্রী দিলীপ চক্রবর্তী৷

সাম্প্রতিক মেডিকেল আন্দোলন নিয়ে প্রস্তাব পেশ করেন ডাঃ তরুণ মণ্ডল ও সমর্থন করেন ডাঃ বিপ্লব চন্দ্র৷ ক্রিকেটার রাজু মুখোপাধ্যায়, সাহিত্যিক নবনীতা দেবসেন প্রমুখের প্রেরিত বার্তা পাঠ করেন মঞ্চের অন্যতম সম্পাদক সান্টু গুপ্ত ও অজন্তা ঘোষ৷

(গণদাবী : ৭১ বর্ষ ৪৬ সংখ্যা)