আসামে পঞ্চায়েত নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতার অধিকার সংকোচন করেছে বিজেপি সরকার

আসামেও পঞ্চায়েত নির্বাচন আসন্ন৷ পশ্চিমবঙ্গে তৃণমূল কংগ্রেস যেমন বিরোধীদের নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতেই দিচ্ছে না, সন্ত্রাস কায়েম করে বেশিরভাগ জায়গায় নমিনেশন পেপার তুলতেই দেয়নি, তুললেও জমা করতে দেয়নি, অথবা জমা দিলেও প্রাণনাশ সহ নানা হুমকি দিয়ে প্রার্থীপদ প্রত্যাহারে বাধ্য করেছে– যার মূল কথা প্রতিদ্বন্দ্বিতা এড়ানো–আসামে বিজেপিও প্রতিদ্বন্দ্বিতা এড়াতে অথবা বহু মানুষের প্রতিদ্বন্দ্বিতার অধিকার হরণ করতে নয়া কৌশল নিয়েছে৷ নির্বাচন কমিশন সম্প্রতি বলেছে, পঞ্চায়েতে গ্রুপ মেম্বারদের ক্ষেত্রে মাধ্যমিক এবং জেলা পরিষদ সদস্যের ক্ষেত্রে উচ্চমাধ্যমিক পাশ যোগ্যতা থাকতে হবে৷ প্রার্থীর বাড়িতে পাকা শৌচালয় থাকতে হবে৷ এ ছাড়া সন্তান–সন্ততি দুইয়ের বেশি হলে তিনি প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে পারবেন না৷

এস ইউ সি আই (সি) কাছাড় জেলা কমিটি এই ফরমান বাতিলের দাবিতে ৯ এপ্রিল জেলাশাসকের দপ্তরের সামনে বিক্ষোভ দেখায়৷ বিক্ষোভ সভায় বক্তব্য রাখেন জেলা কমিটির সম্পাদক কমরেড শ্যামদেও কুর্মী এবং কমিটির সদস্য কমরেড সুব্রত নাথ৷ তাঁদের দাবি, শিক্ষিত–অর্ধশিক্ষিত নির্বিশেষে প্রাপ্তবয়স্ক সবাইকে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার অধিকার দিতে হবে৷ তাঁরা বলেন, পার্লামেন্ট সর্বোচ্চ আইন প্রণয়কারী সংস্থা৷ তার সদস্য নির্বাচিত হওয়ার ক্ষেত্রে শিক্ষাগত যোগ্যতার কোনও উল্লেখ নেই৷ তা হলে পঞ্চায়েতের ক্ষেত্রে তা বাধ্যতামূলক করা  হচ্ছে কী উদ্দেশ্যে? পাকা শৌচালয় গ্রামের অধিকাংশ মানুষের নেই৷ বিজেপির স্বচ্ছ ভারত অভিযানের মতো একটি রাজনৈতিক কর্মসূচি এই নির্বাচনের সঙ্গে যুক্ত করা হচ্ছে কেন?

যাদের বাড়িতে শৌচালয় নেই, সরকার দ্রুত তা করে দিক৷ তা না করে নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতার অধিকার হরণ করা হচ্ছে কেন? দুইয়ের অধিক সন্তান থাকলে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করা যাবে না–এমন অগণতান্ত্রিক শর্ত চাপানোও রাজনৈতিক দূরভিসন্ধিপ্রসূত৷ যার মূল কথা হল, একটা বিশাল অংশের মানুষকে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে না দেওয়া৷ বক্তারা বলেন, বিজেপি সরকারের ইন্ধন ছাড়া নির্বাচন কমিশন এ কাজ করতে পারে না৷ অবিলম্বে এইসব শর্ত বাতিল করার জন্য উদ্যোগী হতে জেলাশাসকের মাধ্যমে এদিন মুখ্যমন্ত্রীর কাছে স্মারকলিপি পাঠানো হয়৷ প্রতিনিধি দলে ছিলেন কমরেডস শ্যমদেও কুর্মী, সুব্রত নাথ, প্রদীপ কুমার দেব, অজয় রায় এবং রাজ্য কমিটির সদস্য কমরেড ভবতোষ চক্রবর্তী৷

(৭০ বর্ষ ৩৫ সংখ্যা ২০ এপ্রিল, ২০১৮)