হাইকোর্টের রায়ে ট্রামরক্ষার আন্দোলনের দাবিগুলিই মান্যতা পেল

১ জুন ২০২৩পরিবহন ভবন অভিযান, কলকাতা।

২১ জুন ট্রাম সংক্রান্ত এক জনস্বার্থ মামলায় হাইকোর্ট গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করে ট্রাম কোম্পানির জমি বিক্রি করার উপর স্থগিতাদেশ জারি করেছে। কোর্ট সরকারকে এ কথাও স্মরণ করিয়ে দিয়েছে যে, ট্রাম পরিবহন ব্যবস্থার মতো একটি হেরিটেজকে রক্ষা করার দায়িত্ব সরকারের এবং বিক্রি করা ডিপোগুলির টাকা কী কাজে লাগানো হয়েছে তা রাজ্য সরকারকে রিপোর্ট আকারে আদালতে জমা দিতে হবে। এই রায়ে রাজ্যের তৃণমূল সরকারের একের পর এক রুট বন্ধ করা ও ডিপোগুলির জমি বিক্রি করার বিরুদ্ধে ট্রাম রক্ষার দাবিতে এবং ট্রামব্যবস্থার আধুনিকীকরণের দাবিতে এস ইউ সি আই (কমিউনিস্ট) যে আন্দোলন সংগঠিত করে চলেছে এবং দলের সভা, মিছিল, কনভেনশন, স্বাক্ষর সংগ্রহ প্রভৃতির মধ্য দিয়ে মহানগরীতে ট্রাম চালু রাখার পক্ষে যে প্রবল জনমত প্রকাশ পেয়েছে, হাইকোর্টের রায়ে সেই আন্দোলনের দাবিগুলিই মান্যতা পেয়েছে। স্বাভাবিক ভাবেই এস ইউ সি আই (কমিউনিস্ট) হাইকোর্টের এই রায়কে স্বাগত জানিয়েছে।

রাজ্যের তৃণমূল সরকার একের পর এক ট্রামরুট বন্ধ করেছে। ট্রামডিপোগুলির জমি বৃহৎ পুঁজির হাতে তুলে দিয়েছে। শহরের ৫০টি রুটের মধ্যে সিপিএম শাসনেই ৩০টি রুট বন্ধ হয়েছিল। বাকি ২০টি চালু রুটের মধ্যে এখন মাত্র তিনটি রুট চালু আছে। তা-ও নামে মাত্র।

মনে রাখতে হবে, কলকাতা ট্রাম শুধু ঐতিহ্যের সাক্ষ্যই বহন করছে না, একই সাথে এটি পরিবেশ বান্ধব এবং শহরের নাগরিকদের কাছে একটি সুলভ পরিবহন মাধ্যম। তাই কোনও অজুহাতেই যাতে কলকাতা ট্রাম বন্ধ না হয়, এ বিষয়ে রাজ্য সরকারকে উপযুক্ত ব্যবস্থা গ্রহণ করার এবং হাইকোর্টের নির্দেশমতো বিশেষজ্ঞ এবং ট্রাম রক্ষায় যাঁরা আন্তরিক ভাবে কাজ করছেন তাঁদের যুক্ত করে কমিটি গঠন করে ট্রামব্যবস্থাকে আরও সম্প্রসারিত ও আধুনিকীকরণ করার দাবি দলের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে।

কলকাতা হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতি নিজে এ রাজ্যের মানুষ না হওয়া সত্ত্বেও কলকাতার গর্ব ট্রামকে রক্ষা করতে যে ভূমিকা নিলেন তার ছিটেফোঁটাও রাজ্য সরকারের নেতা-মন্ত্রীদের মধ্যে পাওয়া যায়নি। হাইকোর্টের ভূমিকার পাশাপাশি সরকারের উপর জনমতের চাপ আরও বাড়াতে সব স্তরের সাধারণ মানুষকে ট্রাম রক্ষার আন্দোলনে এগিয়ে আসার জন্য দলের পক্ষ থেকে আহ্বান জানানো হয়েছে।