শিক্ষক আন্দোলনে পুলিশি আক্রমণ

রাজ্যে একের পর এক শিক্ষক আন্দোলনে ব্যাপক পুলিশি আক্রমণ ও লাঠিচার্জের ঘটনা ঘটছে৷ সম্প্রতি কম্পিউটার শিক্ষকদের আন্দোলনে ব্যাপকভাবে পুলিশি লাঠিচার্জের ঘটনা ঘটে গেল৷ তার কয়েকদিন আগে মাদ্রাসা শিক্ষকদের আন্দোলনেও দমনপীড়ন চলল৷ তার আগে উচ্চ প্রাথমিকে দুর্নীতি বন্ধ করে সুস্থভাবে শিক্ষক নিয়োগের দাবিতে সুবোধ মল্লিক স্কোয়ারের সামনে অনশনরতদের জবরদস্তি পুলিশ তুলে দিল, ধরপাকড়ও হল৷ সমস্ত শান্তিপূর্ণ আন্দোলনে একের পর এক এই ধরনের ঘটনা চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দিচ্ছে সরকার কত জনবিরোধী চরিত্র নিয়ে চলছে৷

এস এস সি–র দুর্নীতির বিরুদ্ধে সুষ্ঠুভাবে শিক্ষক নিয়োগের দাবিতে প্রেস ক্লাবের সামনে দীর্ঘদিন ধরে চলা অনশন আন্দোলনের কথা তো সকলেরই জানা৷ ২৯ দিন অনশনের পর মুখ্যমন্ত্রীর দেওয়া শুকনো প্রতিশ্রুতি নিয়েই তাঁদের আন্দোলন তুলে নিতে হল৷ যদিও এঁদের সমস্যার কতটা সুরাহা হবে কে জানে? কারণ ইতিমধ্যেই শূন্যপদের সংখ্যা কোন ম্যাজিক বলে প্রায় চল্লিশ শতাংশ কমিয়ে দেওয়া হয়েছে৷

ন্যায়সঙ্গত শান্তিপূর্ণ আন্দোলনগুলিকে সরকারের পক্ষ থেকে মানবিক দৃষ্টিভঙ্গিতে দেখা তো দূরের কথা– জবরদস্তি শুধু নয়, ব্যাপকভাবে দমন–পীড়ন চালানো হচ্ছে, ব্যাপক পুলিশি হামলা হচ্ছে এবং তার জন্য সরকারের পক্ষ থেকে দুঃখপ্রকাশ বা সহানুভূতি একেবারেই দেখা যাচ্ছে না৷ অন্য দিকে যেভাবে তাঁদের ন্যায্য দাবি থেকে দীর্ঘকাল বঞ্চিত রাখা হয়েছে–তারও সমাধানের কোনও ইঙ্গিত নেই৷ অসহায়তার শিকার এই সব বঞ্চিত মানুষগুলি৷

আমরা মনে করি, অবিলম্বে সমস্ত শিক্ষা আন্দোলনে পুলিশি দমন–পীড়ন বন্ধ হোক এবং ভবিষ্যতে যাতে এর পুনরাবৃত্তি না ঘটে তা সরকারকে সুনিশ্চিত করতে হবে৷ পাশাপাশি এদের সমস্যাগুলির সুষ্ঠু সমাধান করতে হবে এবং তা করতে হবে অতি দ্রুত৷

কার্তিক সাহা

সাধারণ সম্পাদক

অল বেঙ্গল সেভ এডুকেশন কমিটি

(গণদাবী : ৭১ বর্ষ ৩৫ সংখ্যা)