রেল স্টেশন বেসরকারিকরণের প্রতিবাদ নাগরিক প্রতিরোধ মঞ্চের

সম্প্রতি উন্নয়নের কথা বলে রেলে ভাড়া বৃদ্ধির যে ঘোষণা রেল বোর্ডের পক্ষ থেকে করা হয়েছে তার তীব্র প্রতিবাদ জানিয়ে ‘নাগরিক প্রতিরোধ মঞ্চ’-র পক্ষ থেকে মঞ্চের আহ্বায়ক প্রাক্তন সাংসদ ডাঃ তরুণ মণ্ডল ৯ জানুয়ারি এক বিবৃতিতে বলেন,

‘সম্প্রতি রেল বোর্ড স্টেশন ডেভেলপমেন্ট ফি-র নামে ট্রেনে যাত্রীভাড়া বৃদ্ধির কথা ঘোষণা করেছে। প্রায় সমস্ত যাত্রীর বিশেষ করে দূরপাল্লার যাত্রীদের এই বাড়তি ভাড়া মেটাতে বাধ্য করা হবে। মাথাপিছু বাড়তি ১০ থেকে ৫০ টাকা পর্যন্ত বেশি দিতে হবে তাদের। পাশাপাশি প্ল্যাটফর্ম টিকিটের উপরও বাড়তি ১০ টাকা করে চাপানো হবে লেভি। এর সঙ্গে অতিরিক্ত হিসাবে যুক্ত হবে জিএসটি। আমরা এই সিদ্ধান্তের তীব্র প্রতিবাদ জানাচ্ছি। কোভিড অতিমারির আবহে সমস্ত সাধারণ মানুষ যখন আর্থিক দুরবস্থার মধ্যে দিনযাপন করছেন তখন রেল কর্তৃপক্ষের এই ঘোষণা ‘মড়ার উপর খাঁড়ার ঘা’। যদিও এ-ক্ষেত্রে বলা হয়েছে আপাতত লোকাল ট্রেনের দৈনিক ও সিজন টিকিটে এই লেভি কার্যকর হচ্ছে না এবং উন্নয়নীকৃত স্টেশনে কোনও যাত্রী ট্রেন থেকে ওঠা-নামা করলে তবেই ধার্য হবে এই অতিরিক্ত লেভি, কিন্তু অতীত অভিজ্ঞতা হল, এই নির্দেশিকা সম্প্রসারিত হওয়া শুধু সময়ের অপেক্ষা। প্রসঙ্গত কয়েক মাস আগে যে ন্যাশনাল মনিটাইজেশন পাইপলাইন প্রকল্পের ঘোষণা হয়েছিল, যেখানে বলা হয়েছিল ৪০০টি স্টেশনের আধুনিকীকরণ করা হবে, সে ক্ষেত্রে রেল বোর্ডের বর্তমান ঘোষণা সব ধরনের যাত্রীর ক্ষেত্রে প্রযোজ্য হতে খুব বেশি সময় লাগবে না। কর্পোরেট সংস্থাগুলির পকেট ভরাতে কেন্দ্রীয় সরকার যে ভাবে জনগণের অতিমারির অসহায়তাকে কাজে লাগিয়ে একটার পর একটা বেসরকারিকরণ ও বাণিজ্যিকীকরণের পদক্ষেপ গ্রহণ করছে, তার বিরুদ্ধে সমস্ত স্তরের মানুষের এগিয়ে এসে প্রতিবাদে সামিল হওয়া অত্যন্ত জরুরি। রেলমন্ত্রীকে এই জনস্বার্থবিরোধী সিদ্ধান্ত প্রত্যাহার করার জন্য সংগঠনের পক্ষ থেকে স্মারকলিপি দেওয়া হবে। উন্নয়নের দোহাই দিয়ে রেলভাড়া বৃদ্ধির যে জনবিরোধী ঘোষণা রেল বোর্ডের পক্ষ থেকে করা হয়েছে ‘নাগরিক প্রতিরোধ মঞ্চ’র পক্ষ থেকে তার বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধ প্রতিরোধ আন্দোলন গড়ে তোলার আহ্বান জানাচ্ছি।

গণদাবী ৭৪ বর্ষ ২৩ সংখ্যা ২১ জানুয়ারি ২০২২