যুদ্ধকালীন তৎপরতায় শ্রমিকদের জীবন রক্ষার উদ্যোগ নিতে হবে সরকারকে — এ আই ইউ টি ইউ সি

দেশের লক্ষ লক্ষ পরিযায়ী শ্রমিকের অভূতপূর্ব দুর্দশায় গভীর উদ্বেগ ব্যক্ত করে এআইইউটিইউসি-র সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক কমরেড শঙ্কর দাশগুপ্ত ২৯ মার্চ এক বিবৃতিতে বলেন,
করোনা-মহামারি মোকাবিলায় গোটা দেশ জুড়ে লকডাউন ঘোষিত হওয়ার পর কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী ও বিভিন্ন রাজ্যের সরকারগুলি যে নৈরাশ্যজনক আর্থিক প্যাকেজ ঘোষণা করেছে তাতে গোটা দেশের লক্ষ লক্ষ দরিদ্র পরিযায়ী শ্রমিক এক বিপজ্জনক পরিস্থিতির সামনে পড়েছে। দেখা যাচ্ছে, রাজধানী দিল্লি সহ বিভিন্ন রাজ্যে আটকে-পড়া কাজ-হারানো লক্ষ লক্ষ পরিযায়ী শ্রমিক খাদ্য, পানীয়, মাথা-গোঁজার আশ্রয় ও চিকিৎসার অভাবে ভুগছে। অবর্ণনীয় দুর্দশায় পড়ে যে অসংখ্য খেটে-খাওয়া মানুষ ঘরে ফেরার আশায় শত শত মাইল পথ হেঁটে পার হতে বাধ্য হচ্ছে, আশঙ্কা, চলার পথে তাদের অনেকেই অনাহারে মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়তে পারে। এই অবস্থায় কোভিড-১৯ অতিমারি দাবানলের মতো দ্রুত ছড়িয়ে পড়ার আশঙ্কা রয়েছে।

বরানগর, কলকাতা

পরিযায়ী শ্রমিকদের জন্য যে সামান্য ত্রাণের ঘোষণা হয়েছে তা প্রয়োজনের তুলনায় অতি সামান্য। এই পরিস্থিতিতে আমরা কেন্দ্রীয় সরকার ও রাজ্য সরকারগুলির কাছে দাবি জানাচ্ছি, যুদ্ধকালীন তৎপরতায় সমস্ত পরিযায়ী শ্রমিক, অসংগঠিত ক্ষেত্রের শ্রমিক ও দিনমজুরদের জন্য যথাযথ আশ্রয়স্থল, খাদ্য, পানীয় জল ও চিকিৎসার ব্যবস্থা করতে হবে।
ঘনিয়ে আসা এই গভীর মানবিক সংকটের সময় সরকারের কাছে আমাদের আবেদন, শুধুমাত্র প্রচার ও সহমর্মিতা প্রকাশে নজর না দিয়ে দেশের মেহনতি মানুষের জীবন রক্ষার জন্য যুদ্ধকালীন তৎপরতায় তারা ব্যবস্থা নিক।
এদিকে পশ্চিমবঙ্গে শ্রমনিবিড় দুটি শিল্প জুটমিল ও চা বাগানকে লকডাউনের আওতার বাইরে নিয়ে যাওয়ার কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র দপ্তর এবং খাদ্য গণবণ্টন দপ্তরের সিদ্ধান্তের প্রতিবাদ করেছেন এআইইউটিইউসি-র পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য সম্পাদক কমরেড অশোক দাস। ৫ এপ্রিল তিনি এক বিবৃতিতে বলেন, এর ফলে এই দুটি শিল্পের সাথে যুক্ত শ্রমিকদের মারাত্মক বিপদের মধ্যে ঠেলে দেওয়া হবে। শ্রমনিবিড় হওয়ায় দুটি ক্ষেত্রেই বহু শ্রমিককে খুব কাছাকাছি থেকে কাজ করতে হয়। ফলে করোনা মহামারির কোপে তাদের জীবন বিপন্ন হওয়ার আশঙ্কা আছে। শ্রমিকদের এই বিপদে ঠেলে না দিয়ে লকডাউন চলাকালীন শ্রমিকদের় পূর্ণ বেতন, এই দুই শিল্পের শ্রমিক সহ সমস্ত ক্ষেত্রের অসংগঠিত শ্রমিকদের খাদ্য, নিত্যপ্রয়োজনীয় সামগ্রী সরবরাহ ও চিকিৎসার ব্যবস্থা করার দাবি জানিয়েছেন তিনি। একই সাথে লকডাউন চলাকালীন শ্রমজীবী মানুষের জন্য মাস্ক, গ্লাভস, স্যানিটাইজার ইত্যাদির দাবি জানিয়েছেন।