পলিটবুরো সদস্য কমরেড দেবপ্রসাদ সরকারের জীবনাবসান

এসইউসিআই(কমিউনিস্ট)-এর পলিটবুরোর প্রবীণ সদস্য কমরেড দেবপ্রসাদ সরকার দীর্ঘদিন অসুস্থ থাকার পর ২৮ জুন বেলা দেড়টায় ক্যালকাটা হার্ট ক্লিনিক অ্যান্ড হসপিটালে শেষনিঃশ্বাস ত্যাগ করেছেন। বয়স হয়েছিল ৮৭ বছর। তাঁর মৃত্যুতে ভারতের সকল দলীয় কার্যালয়ে তিন দিনের জন্য রক্তপতাকা অর্ধনমিত রাখা হয় এবং সকল পার্টি কমরেড কালো ব্যাজ পরিধান করেন। ৩০ জুন সকাল ১১টায় তাঁর মরদেহ কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে আনা হয়। শ্রদ্ধাজ্ঞাপনের পর মরদেহ নিয়ে যাওয়া হয় জয়নগরে।

ছাত্র জীবনে মহান নেতা ও শিক্ষক কমরেড শিবদাস ঘোষের আলোচনা শুনেই তিনি দলের বৈপ্লবিক আদর্শের প্রতি আকৃষ্ট হন এবং কমরেড শচীন ব্যানার্জী, সুবোধ ব্যানার্জী ও ইয়াকুব পৈলানের নেতৃত্বে জয়নগর অঞ্চলে দলের কাজ করতে শুরু করেন। তিনি দীর্ঘদিন মাধ্যমিক শিক্ষক হিসাবে শিক্ষক আন্দোলনে নেতৃত্ব দেন। একজন আদর্শ শিক্ষক হিসেবে ছাত্র-অভিভাবক ও জনগণের মনের গভীরে তিনি স্থান করে নিয়েছিলেন। পরবর্তীকালে তিনি সম্পূর্ণভাবে দলীয় কাজে আত্মনিয়োগ করেন। ১৯৭৭ সালে দল তাঁকে জয়নগর বিধানসভা কেন্দ্র থেকে প্রার্থী মনোনীত করে এবং ২০১১ সাল পর্যন্ত তিনি টানা ৩৪ বছর পশ্চিমবঙ্গ বিধানসভার সদস্য হিসাবে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন। সরকারের সকল জনবিরোধী নীতি ও পদক্ষেপের বিরুদ্ধে বিধানসভায় তাঁর তত্ত্ব ও তথ্যসমৃদ্ধ বক্তব্য সকলকেই আকৃষ্ট করত। তিনি দীর্ঘদিন দলের দক্ষিণ ২৪ পরগণা জেলা সম্পাদকের দায়িত্ব যোগ্যতার সাথে পালন করেছেন। অমায়িক, ভদ্রজনোচিত আচরণ দলমত নির্বিশেষে সকলের কাছে তাঁকে শ্রদ্ধাভাজন করেছিল।

জয়নগর কেন্দ্রে বিধায়ক হিসেবে তিনি এলাকার জনগণের কাছেও ছিলেন অত্যন্ত প্রিয় ও শ্রদ্ধেয়। রাজ্যের প্রতিটি গণআন্দোলনে তিনি সামনের সারিতে থেকে নেতৃত্ব দিয়েছেন। তাঁর মৃত্যুতে দল হারাল একজন একনিষ্ঠ কমিউনিস্ট নেতাকে, রাজ্যের জনগণ হারাল এক বিশিষ্ট শ্রদ্ধেয় জননেতাকে। ১১ জুলাই জয়নগরে তাঁর স্মরণসভা। বক্তা সাধারণ সম্পাদক কমরেড প্রভাস ঘোষ।

কমরেড দেবপ্রসাদ সরকার লাল সেলাম