নির্যাতিত মহিলা কুস্তিগিরদের জন্য অবিলম্বে ন্যায়বিচারের দাবি এআইএমএসএসের

 

ভারতের কুস্তি ফেডারেশনের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের পর সম্প্রতি যে দুঃখজনক ঘটনাগুলি ঘটে গেল, তাতে এআইএমএসএস-এর সর্বভারতীয় কমিটি গভীর বেদনা প্রকাশ করেছে। ২৩ ডিসেম্বর সংগঠনের সর্বভারতীয় সম্পাদক কমরেড ছবি মহান্তি এক বিবৃতিতে বলেন, যৌন নির্যাতনে অভিযুক্ত কুস্তি ফেডারেশনের পূর্বতন প্রেসিডেন্ট বিজেপি সাংসদ ব্রিজভূষণ শরণ সিংয়ের ঘনিষ্ঠ এক ব্যক্তি নতুন প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হওয়ায় নির্যাতিত কুস্তিগিররা প্রবল হতাশ।তাঁদের ন্যায়বিচার পাওয়ার কোনও আশা রইল না। কুস্তিতে অলিম্পিক মেডেলজয়ী সাক্ষী মালিক খেলা ছেড়ে দেওয়ার কথা ঘোষণা করেছেন। আরেক কুস্তিগির বজরং পুনিয়া ফিরিয়ে দিয়েছেন তাঁর পদ্মশ্রী খেতাব। আন্তর্জাতিক ক্রীড়াক্ষেত্রে দেশের মুখ উজ্জ্বল করেছেন যাঁরা, তাঁরাও যখন ন্যায়বিচার থেকে বঞ্চিত হন, তা বিশ্বের সামনে লজ্জায় আমাদের মাথা হেঁট করে দেয়।

তিনি বলেন, বিজেপি সাংসদ ব্রিজভূষণের বিরুদ্ধে যৌন নির্যাতনের অভিযোগ ওঠার পর থেকে কেন্দ্রের বিজেপি সরকার তাঁকে রক্ষা করতে চেষ্টার কসুর করেনি। ব্রিজভূষণের শাস্তি ও পদত্যাগের দাবিতে আন্দোলনকারী কুস্তিগিরদের সঙ্গে দেখা করে ন্যায়বিচার দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী। কিন্তু সে প্রতিশ্রুতি রক্ষিত হয়নি।যে নাবালিকা কুস্তিগির ব্রিজভূষণের বিরুদ্ধে পকসো ধারায় অভিযোগ দায়ের করেছিলেন, সংবাদে প্রকাশ, প্রবল চাপ সৃষ্টি করে তাঁকে অভিযোগ প্রত্যাহার করতে বাধ্য করা হয়েছে। শেষ পর্যন্ত পুলিশ যদিও এফআইআর দায়ের করতে বাধ্য হয় এবং সংবাদমাধ্যমের ভাষ্য অনুযায়ী যৌন নির্যাতনের প্রমাণ সংগ্রহ করতেও সক্ষম হয়, তা সত্তে্বও মহিলা কুস্তিগিরদের কাছে ন্যায়বিচার এখনও পর্যন্ত অধরাই রয়ে গেছে।

এই অবস্থায় নির্যাতনে অভিযুক্ত ক্ষমতাশালী ব্যক্তিটির ঘনিষ্ঠ একজনের কুস্তি ফেডারেশনের প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হওয়া স্বাভাবিক ভাবেই নির্যাতিতদের হতাশ করেছে। এই নির্বাচন শুধু নির্যাতিতদের ন্যায়বিচার পাওয়ার আশা খর্ব করেছে তাই নয়, তাঁদের মান-মর্যাদা বিপন্ন হওয়ার আশঙ্কাও জাগিয়েছে।

এআইএমএসএস দাবি করেছে, যৌন নির্যাতন প্রতিরোধ আইনে নির্যাতিতদের দ্রুত ন্যায়বিচার এবং নির্যাতনকারী ব্রিজভূষণ শরণ সিং-এর দৃষ্টান্তমূলক কঠোর শাস্তি দিতে হবে। গভীর যন্ত্রণা থেকে সাক্ষী মালিক ও বজরং পুনিয়া যে পদক্ষেপ নিয়েছেন, ন্যায়বিচারের জন্য দ্রুত উদ্যোগী হয়ে সরকারের পক্ষ থেকে তাঁদের সেই কাজ থেকে বিরত করতে হবে। এর সঙ্গে এআইএমএসএস-এর দাবি, দেশের সমস্ত কর্মক্ষেত্রে, বিশেষ করে খেলাধূলার জগতে মহিলাদের জন্য উপযুক্ত সুরক্ষা ও নিরাপত্তার ব্যবস্থা করতে হবে যাতে তাঁরা সম্মান ও মর্যাদার সঙ্গে নিজের কাজ করতে সক্ষম হন।