দেশব্যাপী পরিবহণকর্মীদের আন্দোলনের চাপে কেন্দ্রীয় সরকার পিছু হটল

কেন্দ্রের বিজেপি সরকারের আনা নতুন আইন ‘ভারতীয় ন্যায় সংহিতা’-তে পরিবহণ আইন পাল্টে দেওয়া হয়। পরিবর্তিত পরিবহণ আইনের ১০৬-এর এক ও দুই ধারা অত্যন্ত নির্মম ও দানবীয়। এতে ‘হিট অ্যান্ড রানের’ ক্ষেত্রে ড্রাইভারদের ১০ বছর পর্যন্ত জেল এবং বিপুল পরিমাণ জরিমানার ব্যবস্থা করা হয়েছে। বলা হয়েছে, পুলিশ না আসা পর্যন্ত এবং আহতকে হাসপাতালে না নিয়ে যাওয়া পর্যন্ত দুর্ঘটনাস্থল থেকে চালক কোনও ভাবেই চলে যেতে পারবেন না। এতে গণপিটুনিতে ড্রাইভার এবং তার সহকারীর আহত হওয়া, এমনকি মৃত্যুর সম্ভাবনাও থেকে যায়। ফলে এই আইন জারি হওয়ারপরেই গত জানুয়ারি-ফেব্রুয়ারি মাস জুড়ে সারা দেশে পরিবহণ শ্রমিকরা আন্দোলনে সামিল হন। বিভিন্ন শহরে লরি ধর্মঘট শুরু হয়। বিশেষ করে পণ্য পরিবাহী যান চালকরা এই ধর্মঘটে স্বতঃস্ফূর্তভাবে অংশগ্রহণ করে। এআইইউটিইউসি সহ পরিবহণ ক্ষেত্রে সমস্ত কেন্দ্রীয় সংগঠনগুলির আহ্বানে ১৬ ফেব্রুয়ারি ২০২৪ সারা দেশে পরিবহণ ধর্মঘট স্বতঃস্ফূর্তভাবে পালিত হয় ।

পশ্চিমবঙ্গে উচ্চ-মাধ্যমিক পরীক্ষা থাকায় এআইইউটিইউসি সহ পাঁচটি কেন্দ্রীয় শ্রমিক সংগঠনের উপস্থিতিতে এক কনভেনশনের মাধ্যমে ১৬ ফেব্রুয়ারির পরিবর্তে ৫ মার্চ ধর্মঘটের সিদ্ধান্ত হয়। দেশব্যাপী স্বতঃস্ফূর্ত ধর্মঘটে পরিবহণ শ্রমিকদের অংশগ্রহণ ও তারই ধারাবাহিকতায় পশ্চিমবঙ্গে ৫ মার্চের ধর্মঘটের প্রস্তুতিতে জেলায় জেলায় পরিবহণ কর্মীদের ব্যাপক অংশগ্রহণ ও কনভেনশন, প্রচার মিছিল, এবং পথসভায় এই আইনের বিরুদ্ধে সংশ্লিষ্ট কর্মীদের প্রবল ক্ষোভের আঁচ পেয়ে কেন্দ্রীয় সরকার ২৪ ফেব্রুয়ারি গেজেট প্রকাশ করে নতুন আইন প্রত্যাহার করে।

আন্দোলনই যে দাবি আদায়ের রাস্তা, এই জয় আবারও তা প্রমাণ করল। ৩ মার্চ-এর কনভেনশনে ধর্মঘট আপাতত প্রত্যাহার করা হলেও, সরকার কথা না রাখলে বিনা নোটিসেই যে কোনও পরিস্থিতির মধ্যে সারা দেশে পরিবহণ ধর্মঘট শুরু হবে বলে সংগঠনগুলি হুঁশিয়ারি দেয়।