জেলার সমস্যা সংসদে তুলে ধরতে চান দক্ষিণ ২৪ পরগণার চার এস ইউ সি আই (সি) প্রার্থী

বারুইপুরে সাংবাদিক সম্মেলন। ২৬ মার্চ

‘এই নির্বাচনে একদিকে বিজেপির নেতৃত্বে ‘এনডিএ’ আর এক দিকে কংগ্রেসের নেতৃত্বে ‘ইন্ডিয়া’– প্রধানত এই দু’টি বুর্জোয়া জোটই প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছে। দুই পক্ষই ভুরি ভুরি মিথ্যা প্রতিশ্রুতি এবং টাকার থলি নিয়ে এই নির্বাচনে নেমে পড়েছে।’ –২৬ মার্চ বারুইপুরে এক সাংবাদিক সম্মেলনে প্রার্থীদের সঙ্গে সাংবাদিকদের পরিচয় করিয়ে দিয়ে দলের প্রাক্তন প্রাক্তন সাংসদ ডাঃ তরুণ মণ্ডল ও প্রাক্তন বিধায়ক অধ্যাপক তরুণকান্তি নস্কর এ কথা বলেন।

তাঁরা বলেন, মানুষ চায় অবাধ ও শান্তিপূর্ণ নির্বাচন, কিন্তু তৃণমূল অতীতের কংগ্রেস ও সিপিএমের পদাঙ্ক অনুসরণ করে ভোট জালিয়াতিকে কোন পর্যায়ে নিয়ে গেছে তা গত পঞ্চায়েত নির্বাচনে জনগণ দেখেছে। কেন্দ্রীয় বাহিনী এলেও এই জেলায় তৃণমূল ইতিমধ্যেই গুণ্ডাগিরি শুরু করেছে। বাসন্তী, ভাঙড, ক্যানিংয়ে তার নমুনা পাওয়া যাচ্ছে। ২২ মার্চ বাসন্তীর ভরতগড় বাজারে আমাদের দেওয়াল লিখন জোর করে বন্ধ করেছে। নির্বাচন কমিশন সুষ্ঠু নির্বাচনের প্রতিশ্রুতি দিলেও বিজেপি ছাড়া অন্যদের অভিযোগ শুনছেই না। দেশ-জুড়ে বিরোধীদের দুর্নীতির সুযোগ নিয়ে ইডি-সিবিআই লাগিয়ে ভয়ের পরিবেশ সৃষ্টি করছে শাসক বিজেপি। ইলেক্টোরাল বন্ড, পিএম কেয়ার ফান্ড, ব্যাপম কেলেঙ্কারি– এ সবের বিরুদ্ধে কোনও ব্যবস্থা নেই।

যাদবপুর কেন্দ্রের প্রার্থী কমরেড কল্পনা দত্ত নারীর অধিকার রক্ষার আন্দোলনের সর্বভারতীয় স্তরের নেত্রী। আজ সারা দেশের সঙ্গে এ রাজ্যে নারীর ইজ্জত ভূলুণ্ঠিত হচ্ছে। এই পরিস্থিতিতে তিনি নির্বাচিত হলে সংসদে নারীর অধিকার রক্ষায় উল্লেখযোগ্য ভূমিকা পালন করতে পারবেন।

জয়নগর কেন্দ্রের প্রার্থী কমরেড নিরঞ্জন নস্কর যুব আন্দোলনের সর্বভারতীয় নেতা এবং যুবকদের স্থায়ী কাজের দাবিতে তিনি আন্দোলন গড়ে তুলছেন। মথুরাপুরের প্রার্থী কমরেড বিশ্বনাথ সরদার হকার, ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী ও দিন-মজুরদের অধিকার রক্ষার আন্দোলনের একজন নেতা। ডায়মন্ডহারবারের প্রার্থী কমরেড রামকুমার মণ্ডল নাগরিকদের গণতান্ত্রিক অধিকার রক্ষা ও ছাত্র-যুবদের মধ্যে বিজ্ঞানমনস্কতা গড়ে তোলার আন্দোলনে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন। জনজীবনের বিভিন্ন সমস্যা নিয়ে দল পরিচালিত গণআন্দোলনের এঁরা গুরুত্বপূর্ণ সংগঠক। ফলে নির্বাচিত হলে সংসদে এঁরা যোগ্যতার সংগে দায়িত্ব পালন করতে পারবেন। সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে তাঁরা বলেন, নির্বাচিত হলে জেলার যে সমস্যাগুলি নিয়ে সংসদে এঁরা সোচ্চার হবেন তার কয়েকটি হলঃ

১) সুন্দরবন এলাকায় শ্রম নির্ভর শিল্প স্থাপন করতে হবে। ফলতা ফিটেডজোনের সমস্ত কারখানা বন্ধ হয়ে গেছে, সেখানে শিল্প-কারখানা গড়ে তুলতে হবে।

২) সারের কালোবাজারি বন্ধ, বীজ, কীটনাশক, কৃষি যন্ত্রপাতির দাম কমাতে হবে। উৎপাদিত ফসলের এমএসপি আইনসঙ্গত করতে হবে।

৩) শিয়ালদহ দক্ষিণের সমস্ত শাখায় ট্রেনের সংখ্যা বাড়াতে হবে এবং প্ল্যাটফর্মগুলো উঁচু করতে হবে। প্রস্তাবিত জয়নগর থেকে রামগঙ্গা ভায়া রায়দিঘী রেলপথ স্থাপন করতে হবে। বজবজ-পূজালী-বিড়লাপুর-রায়পুর হয়ে ফলতা পর্যন্ত প্রতিশ্রুত রেল পরিষেবা গড়ে তুলতে হবে।

৪) সুন্দরবনকে বাঁচাতে সুউচ্চ কংক্রিটের নদীবাঁধ তৈরি করতে হবে।

৫) সুন্দরবনবাসীর জীবন জীবিকা হরণকারী আইন চালু করে জলে জঙ্গলে মাছ কাঁকড়া ধরার অধিকার কেড়ে নেওয়া চলবে না।

৬) জনবিরোধী জাতীয় শিক্ষানীতি সহ সমস্ত কালাকানুন বাতিল করতে হবে।

ডাঃ তরুণ মণ্ডল ও অধ্যাপক তরুণকান্তি নস্কর বলেন, আমাদের প্রত্যাশা জনসাধারণ সংগ্রামী বামপন্থার প্রতিনিধি হিসাবে এস ইউ সি আই (কমিউনিস্ট) প্রার্থীদের জয়যুক্ত করবেন।