জনমন-জনমত (নভেম্বর বিপ্লব শতবর্ষ)

এই দলটার শক্তি যত তাড়াতাড়ি বাড়ে ততই মঙ্গল

বামপন্থায় বিশ্বাসী বাঁকুড়ার এক হকার যুবক কাজ বন্ধ রেখে ১৭ নভেম্বরের সমাবেশে যোগ দিতে কলকাতায় এসেছিলেন৷ সেদিন অঝোর ধারায় বৃষ্টি ভিজিয়ে দিচ্ছে গোটা শহরকে৷ যুবকটি আরেক হকার ভাইয়ের কাছ থেকে একটি ছাতা কিনছিলেন৷ ছাতা বিক্রেতা হকারটি বললেন, ‘আপনি এস ইউ সি আই–এর মিটিং শুনতে এসেছেন, আপনার কাছ থেকে ছাতার দাম কম করেই নেব৷ তবে অঝোরে বৃষ্টি হলে তবেই ছাতা মেলবেন, আর মিটিংটা কিন্তু অবশ্যই ভাল করে শুনবেন’৷ বাঁকুড়ার যুবকটি বললেন, ‘আমি নিজেও হকারি করে খাই৷ দামটা আপনি সত্যিই কম নিলেন৷ তবে কথাটা কিন্তু আপনি খুব দামি বলেছেন, আমার মনে থাকবে৷ এই দলটার শক্তি যত তাড়াতাড়ি বাড়ে আমাদের মতো খেটে–খাওয়া মানুষের ততই মঙ্গল৷’

সমাবেশ শেষে বাঁকুড়ায় ফেরার পর যুবকটি বেশ কয়েকটি গণদাবী নিয়েছেন বন্ধুদের পড়াবেন বলে৷ নিয়েছেন কমরেড প্রভাস ঘোষের ভাষণ সংবলিত গণদাবীটিও৷

সমাবেশের বিশালতা মানুষের কাছে তুলে ধরা জরুরি

কিছুদিন হল কলকাতার কলেজ স্ট্রিট অঞ্চলে দলের সঙ্গে যুক্ত হয়েছেন এক প্রবীণ বামপন্থী মানুষ৷ সমাবেশের ছবি–সংবাদ ছাপা গণদাবী পেয়ে খুবই উদ্দীপিত, আনন্দিত তিনি৷ নিজেও বৃষ্টি উপেক্ষা করে পুরো সময় ধরে সমাবেশে ছিলেন৷ কর্মীদের বললেন, ‘এই কাগজটা ব্যাপক ভাবে মানুষের কাছে নিয়ে যাওয়া দরকার৷ এই সমাবেশ কিছু মানুষের নিছক একটা সভা ছিল না– এর ব্যাপকতা, বিশালতা মানুষের কাছে তুলে ধরা খুব জরুরি’৷ বললেন, ‘কপি যদি ফুরিয়ে যায়, প্রয়োজনে জেরক্স করে হলেও তোমরা এই কাগজ বিলি কর৷ খরচ যা হবে আমি দেব’৷

আমি কি আপনাদের সহযোগিতা করতে পারি না

মেদিনীপুর শহরে অন্য একটি বামপন্থী দলের এক সংগঠক নভেম্বর বিপ্লব শতবর্ষ পালনের চিঠি পড়ে ব্যক্তিগত ভাবে অর্থ সাহায্য করলেন৷ তারপর প্রশ্ন করলেন, আচ্ছা, আপনারা সব ধরনের সহযোগিতার কথা বলেছেন, আমি কি আমার ঘনিষ্ঠদের থেকে কিছু অর্থ সংগ্রহ করে দিতে পারি না? নভেম্বর বিপ্লবের তাৎপর্য নিয়ে আলোচনার পর তিনি কিছু হ্যান্ডবিল, ফোল্ডার ও কুপন নিয়ে গেলেন৷ কয়েক দিনের মধ্যেই তিনি ১৯ জনের থেকে অর্থ সংগ্রহ করে হিসাব সহ টাকা ও কুপনের অংশ ফেরত দিলেন এবং যাঁরা অর্থ সাহায্য করেছেন তাঁদের উৎসাহব্যঞ্জক কথাগুলি শোনালেন৷

আপনাদের অক্লান্ত প্রচেষ্টা আমাকে টেনে এনেছে

বাঁকুড়ার হিড়বাঁধ ব্লকের একদা শাসক বামপন্থী দলের প্রবীণ এক নেতা নভেম্বর বিপ্লব শতবর্ষ উদযাপন কমিটির স্থানীয় সভায় এসে বক্তব্য রাখলেন৷ কর্মীদের বললেন, প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকেই দলে আছি৷ কিন্তু এখন আর দলের সুবিধাবাদী কাজকর্ম সইতে পারছি না৷ আপনাদের দলের কর্মীদের নিষ্ঠা, সততা, সংগঠন গড়ার অক্লান্ত প্রচেষ্টা আমার মনকে টানে, তাই আপনারা যখন অনুরোধ করলেন আমি না এসে পারলাম না৷

বহু লোকই আপনাদের দল নিয়ে চিন্তাভাবনা করছে

নভেম্বর বিপ্লব বার্ষিকীর সমাবেশকে সামনে রেখে বাঁকুড়ার খাতড়ায় একটি সভার দু’দিন পর শহরের মোড়ে একদল যুবক দলের এক সংগঠককে ডেকে বসালেন৷ বললেন, এই শহরে এখন আপনাদের লোকজন কম থাকায় চিন্তা করছেন কি? তারপর বললেন, চিন্তা করবেন না৷ এখনই না হলেও আমরা আপনাদের দলে যোগ দেব৷ আমাদের মতো শহরের বহু লোকই আপনাদের দল নিয়ে চিন্তাভাবনা করছে৷