Breaking News

কেন্দ্রের শিক্ষানীতিতে শিক্ষাই বিপন্ন হবে

কেন্দ্রের শিক্ষানীতিতে শিক্ষাই বিপন্ন হবে, আন্দোলনের ডাক সেভ এডুকেশন কমিটির

১৯ জুলাই কলকাতা প্রেস ক্লাবে সাংবাদিক সম্মেলনে সেভ এডুকেশন কমিটির পশ্চিমবঙ্গ শাখার সভাপতি অধ্যাপক ধ্রুবজ্যোতি মুখোপাধ্যায় এবং সম্পাদক কার্তিক সাহা কেন্দ্রের বিজেপি সরকারের শিক্ষানীতির ক্ষতিকারক দিকগুলি ব্যাখ্যা করেন৷ তাঁরা বলেন, জাতীয় শিক্ষানীতিতে স্বীকার করা হয়েছে সারা দেশে সরকারি শিক্ষায়তনে স্কুলছুটের সংখ্যা ক্রমাগত বৃদ্ধি পাচ্ছে৷ অথচ এর অন্যতম প্রধান কারণ যে পাশ–ফেলের অবলুপ্তি সেটা স্বীকার করা হয়নি এবং প্রথম শ্রেণি থেকে পাশ–ফেল চালুর সুপারিশও করা হয়নি৷ দ্বিতীয়ত, মূলধারার শিক্ষা পদ্ধতি অর্থাৎ ক্লাসরুমে শিক্ষকের মাধ্যমে পড়ানোর পরিবর্তে জোর দেওয়া হয়েছে অনলাইন এবং দূরশিক্ষার উপর৷ অনলাইন বা দূরশিক্ষা শ্রেণিকক্ষে ছাত্র–শিক্ষক পারস্পরিক ইন্টার্যাকশনের মাধ্যমে শিক্ষার সহায়ক হতে পারে৷ কিন্তু এর উপর বেশি জোর দিলে শিক্ষা ব্যাহত হবে৷ সরকারের এই প্রচেষ্টার অন্যতম উদ্দেশ্য শিক্ষক নিয়োগ, স্কুল স্থাপনের দায়িত্ব এড়িয়ে যাওয়া৷ তৃতীয়ত, সমস্ত কলেজগুলিকে স্বশাসিত করার প্রস্তাব করা হয়েছে৷ এই কলেজগুলি কোনও বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনস্থ হবে না৷ তারা নিজেরাই ডিগ্রি দেবে৷ ডিগ্রিগুলি, বিশ্ববিদ্যালয়ের না হওয়ায় কার্যক্ষেত্রে সম মূল্য পাবে না৷ চতুর্থত, ভারতীয়ত্বের নাম করে মধ্যযুগীয় বাতিল চিন্তা সিলেবাসে অন্তর্ভুক্ত করা হচ্ছে, ইংরেজিকে গুরুত্বহীন করে সংসৃক্তকে গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে৷ এতে উচ্চশিক্ষা ব্যাহত হবে৷ সমাজে যুক্তিবাদের পরিবর্তে, অন্ধতা–কুসংস্কার বাড়বে৷ পঞ্চমত, সরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে বেসরকারি মালিকদের শিক্ষা নিয়ে ব্যবসা করার সুযোগ দেওয়া হবে৷ ফলে শিক্ষায় সরকারি ভূমিকা ধীরে ধীরে কমতে থাকবে৷ এরকম অজস্র আপত্তিকর বিষয় ৪৮৪ পাতার শিক্ষানীতির পাতায় পাতায় রয়েছে৷

সেভ এডুকেশন কমিটি এই শিক্ষানীতি বাতিলের দাবিতে ২৪ জুলাই জেলায় জেলায় ডি আই অফিসে বিক্ষোভ দেখাবে এবং রাজ্যপালের উদ্দেশে স্মারকলিপি দেবে৷ ২৮ জুলাই সংগঠনের সর্বভারতীয় কমিটির সভা হবে গুজরাটে৷ সেখান থেকে কেন্দ্রীয় সরকারের কাছে প্রতিবাদী স্মারকপত্র পেশ করা হবে৷ ২২ আগস্ট হবে কলকাতায় কেন্দ্রীয় কনভেনশন৷ জুলাই–আগস্ট মাস জুড়ে বিভিন্ন এলাকায় শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে আলোচনা সভা, সেমিনার, কনভেনশন ইত্যাদির মাধ্যমে জাতীয় শিক্ষানীতির জনবিরোধী দিকগুলি নিয়ে জনমত গড়ে তোলা হবে৷ সাংবাদিক সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন অধ্যাপক পবিত্র গুপ্ত, অধ্যাপক মীরাতুন নাহার, অধ্যাপক চন্দ্রশেখর চক্রবর্তী, অধ্যাপক অলোকেন্দু সেনগুপ্ত, অধ্যাপক ধ্রুবজ্যোতি মুখোপাধ্যায়, অধ্যাপক তরুণ নস্ক্র, অধ্যাপক প্রদীপ দত্ত, অধ্যাপক মানস জানা, শিক্ষক তপন সামন্ত, শিক্ষক কার্তিক সাহা প্রমুখ৷

(গণদাবী : ৭১ বর্ষ ৫০ সংখ্যা)