‘আচ্ছা, আমাদের কেন্দ্রীয় নেতাদের কাউকে একদিন কেরালায় আর তার পরের দিন পশ্চিমবঙ্গে সভায় বত্তৃতা দিতে হলে তাঁরা কী বলবেন বলুন তো’? হিন্দ সিনেমার মোড়ে চায়ের দোকানের আড্ডায় প্রশ্নটা ছুঁড়ে দিলেন যিনি, তিনি এলাকায় সিপিএমের পরিচিত মুখ। কথাটা লুফে নিলেন যিনি, তিনিও সিটুর সঙ্গে যুক্ত। বললেন– কেরালায় নেতাদের গলা ফাটিয়ে বলতে হবে কংগ্রেসের বিরুদ্ধে, আর পরের দিন উড়ে এসে বাংলায় সেই কংগ্রেসকে দেখাতে হবে প্রগতিশীল, ধর্মনিরপেক্ষ শক্তি হিসাবে!
একই কংগ্রেসের দুই চরিত্র? খোঁচা দিলেন একেবারেই রাজনীতির বৃত্তের বাইরের এক প্রবীণ, কংগ্রেস যদি বিজেপির বিরুদ্ধে আন্দোলনের শক্তি হয়, সারা ভারতেই তা হওয়ার কথা। তা হলে কেরালায় সমীকরণটা বদলে যাচ্ছে কেন? খোদ রাহুল গান্ধী কেরালায় তোমাদের শরিক সিপিআইয়ের বিরুদ্ধে প্রার্থী। কেরালায় সিপিএম সরকারের মূল প্রতিদ্বন্দ্বী কংগ্রেস বলেই কি সে রাজ্যে তারা বিজেপির বিরুদ্ধে আন্দোলনের শক্তি থাকল না! খালি হয়ে যাওয়া চায়ের ভাঁড়টাকে জোরে ছুঁড়ে ফেলে বলে উঠলেন প্রথম জন, নেতারা প্রচার করতে বলছেন, কিন্তু এ সব কথা বলব কী করে? যা খুশি বোঝাতে চাইলেই কি মানুষ মেনে নেবে?
আর চুপ থাকতে না পেরে বলে উঠলাম, মানুষ মানবে কি না পরের কথা, আপনারা মানছেন কি? উত্তরটা দিতে গিয়ে একটু থমকালেন তিনি– ৩০ বছর এই দলটা করছি, দলের নেতাদের কথাকে বেদবাক্য বলে মেনেছি চিরকাল। কিন্তু এবার একটু অসুবিধা হচ্ছে। এই সুবোধ মল্লিক স্কোয়ারের খাদ্য আন্দোলনের শহিদ বেদিতে মালা দিতে গিয়ে কংগ্রেসী অত্যাচারের কাহিনী কত বলেছি। এই এলাকার গলিতে গলিতে কংগ্রেসী গুণ্ডাদের বোমাবাজির কথা এলাকার মানুষ কি ভুলে গেছে! কলেজে কলেজে ছাত্র পরিষদের গুণ্ডামির শিকার হতে দেখেছি দলের কর্মীদের। মধ্য কলকাতার পুরনো কংগ্রেসী নেতাদের মুখেই ছোটবেলায় শুনতাম দেশভাগের সময়ে সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা পরিচালনায় তাঁদের ভূমিকার কথা, বড় গর্বের বিষয় ছিল এটা তাঁদের কাছে। আবার এঁরাই উদ্বাস্তুদের বিরুদ্ধে নানা টিকা-টিপ্পনি ছুঁড়ে বামপন্থীদের ব্যঙ্গ করতেন। আজও মধ্য কলকাতার পুরনো এক কংগ্রেসী নেতার ছবি সামনে রেখে ‘হিন্দু সংহতির’র নামে মাথায় ফেট্টি বাঁধা উগ্র সাম্প্রদায়িক স্লোগান দেওয়া মিছিল হয়। জরুরি অবস্থার নায়ক কংগ্রেস নেত্রী ইন্দিরা গান্ধী। দেওয়ালে আমরাই ওদের হাত চিহ্নকে ব্যঙ্গ করে বড় বড় নখওয়ালা রক্তাক্ত হাত এঁকেছি। কংগ্রেস বললেই মধ্য কলকাতার মানুষের এই সব কথা মনে পড়বেই। তাই বড় কষ্ট হচ্ছে, মন মানতে চাইছে না নেতাদের কথা মতো কংগ্রেসকে সেকুলার, গণতান্ত্রিক শক্তি হিসাবে তুলে ধরতে। ভোটের দিনে কংগ্রেসের বোতাম টিপতে হবে ভাবলেও শিউরে উঠছি।
আবার যাদবপুরের ৮বি মোড়ের গলিতে চায়ের দোকানের বামপন্থী আড্ডায় উপস্থিত এক সিপিএম কর্মীর খটকা লাগছে– রাজ্যে সাধারণ মানুষ তৃণমূলের চুরি-দুর্নীতির বিরুদ্ধে ফেটে পড়ছে, অথচ জনগণের মধ্যে সিপিএমকেই চাই দাবি উঠছে না কেন? প্রশ্নের ঝড় বইয়ে দিলেন– কেন পশ্চিমবঙ্গেও সংকীর্ণ চাওয়া-পাওয়ার হিসাবটাই ভোট আলোচনার প্রধান বিষয় হতে পারছে? কেন বিজেপি এ রাজ্যে প্রধান বিরোধী হিসাবে উঠে আসতে পারছে? তিনি নেতাদের প্রশ্ন করে উত্তর পেয়েছেন, তৃণমূলের রাজনীতিই এর জন্য দায়ী। কিন্তু শুধুই তাই! এ নিয়ে ধন্দ আছে তাঁর। তাঁর প্রশ্ন, ধর্মভিত্তিক দল আইএসএফকে নিয়ে কোন আশায় সিপিএম নেতারা এতদিন ধরে বসে রইলেন? তাঁকে জিজ্ঞাসা করলাম, ৩৪ বছর একটানা সরকার চালানো একটা বামপন্থী দলের কর্মী-সমর্থক-শুভানুধ্যায়ীদের পরিবারগুলিতে বামপন্থী রাজনীতি, বামপন্থী সংস্কৃতি, বামপন্থী মূল্যবোধের চর্চা গড়ে উঠল না কেন? এই বিশাল শক্তিটাই তো বিজেপির সাম্প্রদায়িক রাজনীতি, তৃণমূলের দুর্নীতির বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়াতে পারে। কোথায় তারা? তিনি বলে উঠলেন, দূর মশাই, আপনারাও যেমন, এ জন্যই আপনারা গদিতে যেতে পারলেন না! ভোটে জেতাটাই আসল কথা, না হলে কি এই সব আদর্শ ধুয়ে জল খাব! বিপ্লব, সমাজপরিবর্তন, ওসব বইয়ের কথা। নেতাদের পাবলিক মিটিংয়ে নীতিটিতি নিয়ে কিছু বলতে হয় বলেন। এগুলো নিয়ে আমরা মাথা ঘামাই না। ভোটের হিসাব বলে, যা দিলে লোকে দলে থাকবে তা দিতে হবে। ক্ষমতায় থাকার সময় আমাদের নিখুঁত হিসাব থাকত, কী কী সুবিধা দিলে কোন পাড়ার ভোট হবে। দরকারে ধর্ম-জাতপাতের হিসাবও কষতে হবে। তিনি বলে চললেন, আরে মশাই দুর্নীতিটা করতে গেলেও মাথা লাগে। পিছনের দরজা দিয়ে টাকার সোর্স না থাকলে আমাদের পার্টির পঞ্চায়েত থেকে কাউন্সিলরদের এত চাকচিক্য কয় বছরে এমনি বেড়েছিল? তবে এখনকার মতো প্রকাশ্যে ল্যাজেগোবরে অবস্থা হত না। নেতারা ঠিক সামলে দিতেন। পার্টি বাড়াতে গেলে দলবাজি লাগবেই, নীতিকথা দিয়ে হবে না মশাই। থানাকে পার্টি অফিস বানানো? সে তো কংগ্রেস আমল থেকেই শুরু, আমরা তা পাল্টাতে যাব কেন? দল রাখতে গেলে এ সব করতেই হয়। বললাম, তা হলে বুর্জোয়া রাজনীতির বিকল্প রাজনীতি তুলে ধরা, যেটা বামপন্থীদের আসল কাজ, তার কী হবে! ভদ্রলোক একটু দ্বিধান্বিত, দলে ওসব কথা কেউ কোনও দিন বলেনি। কে জানে হয়ত আপনিই ঠিক, বামপন্থা ছেড়ে সরকারি ক্ষমতাকেই প্রধান করলে এমনই বোধহয় হয়! মাথাটা গুলিয়ে যাচ্ছে, পরে ভাবব।
উত্তর কলকাতার মৌলালির কাছে গলিতে একটি পুরনো বামপন্থী ইউনিয়নের অফিস সামলানো এক প্রবীণ কর্মীর কাছে শোনা গেল, এখনও সিপিএমের নিচুতলায় চাপা স্রোত আছে এ রাজ্যে ‘আগে রাম পরে বাম’-এর পক্ষে। বললাম, এটা কি বামপন্থী হিসাবে আত্মঘাতী কাজ নয়? সুবিধা বিতরণ, দুর্নীতিতে প্রশ্রয় দেওয়া, স্বজন পোষণ, দলবাজি এগুলোই যদি দল বাড়ানোর রাস্তা হয়, তা হলে যে বেশি দেবে ভোট বা’ সেদিকেই ভারী হবে না কি? এ ছাড়া, গায়ের জোরে পাড়ার় দখল রাখা, যুক্তি শুনব না, আমরা ২৩৫ ওরা ৩০ ওদের কথা শুনতে হবে!– এই মানসিকতা কি অন্ধতা বাড়ায় না? তাতে কি বিজেপির মতো সাম্প্রদায়িক শক্তির জমি তৈরি হয় না? বিজেপিকে জায়গা করে দেওয়ার ক্ষেত্রে সিপিএমের ভূমিকা কি নেই? ১৯৭৭-এ জনসংঘ-আরএসএসকে নিয়ে গঠিত জনতা পার্টির সরকারকে সমর্থন, ১৯৮৮- তে কলকাতার শহিদ মিনার ময়দানে অটলবিহারী বাজপেয়ীর সঙ্গে সিপিএম নেতা জ্যোতি বসুর যৌথ সভা, ১৯৮৯-তে বিজেপির সাথে মিলে ভিপি সিং সরকারকে সমর্থন, ১৯৯০-এ আদবানিজির রামরথকে পশ্চিমবঙ্গে অবাধে ঢুকতে দেওয়া, ঝলাদায় সে রথের কারণে দাঙ্গা এরই তো উদাহরণ! উনিও মানলেন, ১৯৯২-এ বাবরি মসজিদ ভাঙার পর কলকাতার ট্যাংরা সহ কিছু জায়গায় দাঙ্গা হতেই পারত না পিছনে সিপিএমের প্রচ্ছন্ন মদত না থাকলে। ২০০২-তে পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য সমস্ত মাদ্রাসাকে সন্ত্রাসবাদের আখড়া বলে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বিজেপি নেতা এলকে আদবানির প্রশংসা কুড়িয়েছিলেন। এই আদবানিজি ২০০৫ এবং ২০০৮-এ সিপিএম নেতা বুদ্ধদেব ভট্টাচার্যের বিশ্বায়নের অনুসারী আর্থিক সংস্কারের দৃষ্টিভঙ্গিকে খুব প্রশংসা করেছিলেন। বিজেপির মতো একচেটিয়া পুঁজিপতিদের অতি বিশ্বস্ত একটা দলের নেতা সিপিএমের সরকারের আর্থিক নীতির প্রশংসা করছে! অবাক লাগে না? বললাম, যে কোনও ভাবে হোক না কেন, সরকারে টিকে থাকার জন্য পুঁজিপতিদের তোয়াজ করে চাষিকে উচ্ছেদ করা, বিরোধী পক্ষে থাকলে গদি ফিরে পাওয়ার লোভে যার সাথে পারি তার হাত ধরে ঝুলে পড়া– এগুলো কি বামপন্থার শক্তি বাড়ায়? এই ধরনের নানা কৌশলে কোনও বামপন্থী দল যদি কিছু আসন পেয়েও যায় তাতে বামপন্থা শক্তিশালী হয় কি? চুপ করে রইলেন বামপন্থার প্রতি বিশ্বাস নিয়ে এতদিন চলা মানুষটি। দীর্ঘশ্বাসের শব্দটা চাপতে পারলেন না, চশমাটা খুলে চোখ মোছার ভঙ্গিতেই ধরা পড়ল দলের ভূমিকায় ক্ষতবিক্ষত হওয়া মনের ছবিটা।
নিউটাউনের এক পুরনো সিপিএম কর্মী বাড়িতে ডেকে বসালেন। একসময় এই রাজারহাট-নিউটাউন এলাকায় সিপিএমের দাপটে বিরোধীদের মাথা তোলা দূরে থাক, প্রকাশ্যে কোনও কথা বলাই ছিল ঝুঁকির কাজ। এই এলাকার প্রতি পাড়ায় ছিল সিপিএমের লোক। বলছিলেন, সরকারি গদি থেকে আমরা চলে যাওয়ার পরেই সংগঠনের দশা বেহাল। এখন কংগ্রেসের সাহায্য ছাড়া আমাদের পার্টি নেতারা উঠে দাঁড়ানোর কথা ভাবতেই পারছে না! তৃণমূলের এত দুর্নীতি, তা নিয়ে সমাজমাধ্যমে অনেক প্রচার হচ্ছে। বিজেপির বিরুদ্ধে নেতারা অনেক কথা বলেন, কিন্তু রাস্তায় নেমে আন্দোলন কোথায়? বললাম, ভেবে দেখবেন, এটা কি সরকারি ক্ষমতা-সর্বস্বতার রাস্তায় গিয়ে বামপন্থা বিসর্জন দেওয়ার ফল নয়? ভদ্রলোক বলে গেলেন– এ ভাবে ভাবিনি কোনও দিন, দল ক্ষমতায় থেকেছে অনেকদিন তাতেই আমরা অভ্যস্ত হয়ে গেছিলাম। ১৯৬০-৭০-এর দশকের মতো লড়াইয়ের কথা এখন আমরা ভাবতে পারছি না বোধহয়!
কোচবিহারের এক সিপিএম কর্মী ব্যথিত, ওই জেলার কংগ্রেস নেতারা বর্ষীয়ান সিপিএম নেতা বিমান বসু সম্বন্ধে যে কটূক্তি করেছেন তা শুনে। প্রশ্ন করলাম, কংগ্রেস আবার কেন্দ্রের গদিতে বসলে বিজেপির থেকে মূলগত কী পার্থক্য ঘটাবে? সাম্প্রদায়িকতা, রামমন্দির রাজনীতি, গণতন্ত্র-হরণের আইন ইত্যাদি প্রশ্নে কংগ্রেস ও বিজেপির বিশেষ কিছু পার্থক্য আছে কি? কংগ্রেসই ভারতে উদার-অর্থনীতি, বিশ্বায়নের ফরমুলার প্রণেতা। এনআরসি, সিএএ-র মাধ্যমে বিভাজনের রাজনীতির শুরুও কংগ্রেসের হাতে। জাতীয় পুঁজিপতি শ্রেণি এ দেশে ফ্যাসিবাদের ভিত প্রতিষ্ঠার কাজটা কংগ্রেসের সাহায্যেই শুরু করেছে। বিজেপি তাকে আরও জোরদার করছে, মজবুত করছে। একই শ্রেণির দুটি দলের একটিকে প্রগতিশীল বলে চিহ্নিত করার চেষ্টা কি বামপন্থার কর্মসূচি? একই লোক কয়েক ঘণ্টার ব্যবধানে কখনও কংগ্রেস কখনও বিজেপিতে গিয়ে স্বচ্ছন্দে নেতা বনে যাচ্ছে। এই দুই দলের রাজনীতির মূলগত পার্থক্য কিছু আছে? কংগ্রেস হাইকম্যান্ড তো শেষ পর্যন্ত তৃণমূলের সাথে ঐক্যের চেষ্টা চালিয়ে গেছেন। ভোটের পর পরিস্থিতি বদলালে তারা পরস্পরের হাত ধরবে না, এমন গ্যারান্টি আছে? এই কংগ্রেস তৃণমূলের বিরুদ্ধে কেমন জোট শরিক হবে? কংগ্রেস এবং তৃণমূল উভয় দলই তথাকথিত নরম হিন্দুত্ব এবং সাম্প্রদায়িক ভোটব্যাঙ্কের রাজনীতি খোলাখুলিভাবে করছে। তা ছাড়া কংগ্রেস দুর্নীতির বিরুদ্ধে আন্দোলনের নির্ভরযোগ্য শক্তি হল কবে?
তা হলে বিজেপির সর্বনাশা রাজনীতির বিরুদ্ধে, তৃণমূলের দুর্নীতি অপশাসনের বিরুদ্ধে বিকল্প রাজনীতির পতাকা নিয়ে দাঁড়াতে পারে কোন শক্তি? সংগ্রামী বামপন্থার শক্তি ছাড়া, তার নেতৃত্বে শক্তিশালী বামপন্থী আন্দোলন ছাড়া এর কোনও বিকল্প আছে কি? দিল্লির কৃষক আন্দোলন থেকে শুরু করে সারা দেশে নানা আন্দোলন এ কথাই বারবার প্রমাণ করেছে যে, দেশের মানুষ আন্দোলন চাইছেন। এই আন্দোলনের প্রস্তাবই বারবার সিপিএম সহ বামপন্থী দলগুলির নেতাদের কাছে রেখেছে এস ইউ সি আই (সি)। অথচ বামপন্থার নামে সংস্কারবাদের পথ ধরে কংগ্রেস, আইএসএফকেই বেশি নির্ভরযোগ্য মনে করল সিপিএম!
সিপিএম দলের কর্মী, সমর্থক যাঁরা আজও বামপন্থার প্রতি আকর্ষণ থেকে রাজনীতি করেন, সিপিএম নেতৃত্বের কংগ্রেসের মুখাপেক্ষী ভূমিকায় যারা ব্যথিত, তাঁদের কাছে অনুরোধ, ভেবে দেখুন– এই আপসের পথে, সংস্কারবাদের পথে নানা কৌশলে কিছু এমএলএ-এমপি পেলেই কি বামপন্থা শক্তিশালী হবে? বামপন্থী আদর্শ ছাড়া বামপন্থা শক্তিশালী হয় কি? যদি তা হত, তা হলে ভোটে হেরে সব সম্বল-শক্তি হারিয়ে ফেলার মতো দশা সিপিএমের হত কি? এটা বামপন্থার নামে সংস্কারবাদ ও ভোটসর্বস্বতারই রোগ লক্ষণ নয় কি? আসলে বামপন্থা পরিত্যাগের লক্ষণ এটা। বামপন্থার সংগ্রামী পথে অবিচল থেকে একটা আসনও না জিতলেও বামপন্থী আদর্শটার মর্যাদাহানি ঘটে না। এই পথে থাকলে তার মধ্য দিয়ে শক্তি সঞ্চয় করে বামপন্থার ভিত্তিতেই নির্বাচনেও নিজের কোমরের জোরে দাঁড়ানো সম্ভব হয়। তাতে গণআন্দোলন শক্তিশালী হয়, আগামী দিনের সমাজবদলের রাস্তা প্রশস্ত হয়।এস ইউ সি আই (সি) সেই চ্যালেঞ্জটাই নিয়েছে। এখানেই স্পষ্ট হয়ে যাচ্ছে এস ইউ সি আই (সি)-র বিপ্লবী বামপন্থা আর সিপিএমের সংস্কারবাদী বামপন্থার পার্থক্য।