বিশ্বসাম্যবাদী আন্দোলনের মহান নেতা, রুশ বিপ্লবের রূপকার কমরেড লেনিনের মৃত্যুশতবর্ষ পূর্তি হল এ বছর ২১ জানুয়ারি। এই মহান মানুষটির নেতৃত্বেই ১৯১৭ সালের নভেম্বরে পুঁজিবাদবিরোধী সমাজতান্ত্রিক বিপ্লবের মধ্য দিয়ে রাশিয়ার বুকে জন্ম নিয়েছিল বিশ্বের প্রথম শোষণহীন রাষ্ট্র। শত শত বছর ধরে লাঞ্ছিত-নিপীড়িত মানুষ শোষণমুক্তির যে স্বপ্ন দেখেছে, যে স্বপ্ন দেখেছেন নিপীড়িত মানবাত্মার ক্রন্দনে ব্যথিত দরদি মনের মহৎপ্রাণ মানুষেরা, তাদের সকলের আকাঙক্ষাকে বাস্তব রূপ দিয়েছিল এই বিপ্লব। ‘স্বর্গ’ বা ‘পরলোক’ নয় এই মর্ত্য পৃথিবীতেই যে শোষণ-বঞ্চনামুক্ত এক আদর্শ মানবসমাজ গড়ে তোলা সম্ভব, তার সজীব নিদর্শন তুলে ধরেছিলেন মহান লেনিন সমাজতান্ত্রিক রাশিয়া প্রতিষ্ঠার মধ্য দিয়ে। সমাজবিজ্ঞানের সর্বোন্নত দর্শন মার্ক্সবাদ ও দ্বন্দ্বমূলক বস্তুবাদকে হাতিয়ার করে মহান মার্ক্সের সুযোগ্য উত্তরসূরী কমরেড লেনিনের নেতৃত্বে বলশেভিক পার্টি এই বিপ্লবকে সফল করেছিল– যার মধ্যে দিয়ে রাশিয়ায় যুগ-যুগান্তের ক্ষুধা, ব্যাধি, দারিদ্র, অভাব, বেকারি, শিক্ষা ও স্বাস্থ্যহীনতা দূর করা সম্ভব হয়েছিল। শত শত বছরের পশ্চাৎপদতাকে ঠেলে সরিয়ে সোভিয়েত সমাজতান্ত্রিক রাষ্ট্র মাত্র কয়েক বছরের মধ্যেই পৌঁছে গিয়েছিল জ্ঞান-বিজ্ঞান, শিল্প-সংস্কৃতি, শিক্ষা ও সামাজিক পরিস্থিতির উন্নতির চরম শিখরে। চিরকালের লাঞ্ছিত নারী পেয়েছিল আত্মবিকাশের পথ, পুরুষের সঙ্গে সমান মর্যাদায় সামাজিক উৎপাদনে অংশগ্রহণ করতে সক্ষম হয়েছিল। এই উন্নতি ছিল মানবসভ্যতার ইতিহাসে এক সম্পূর্ণ নতুন ঘটনা।
বিপ্লব-পূর্ব রাশিয়ায় জারতন্ত্রের অধীনে মধ্যযুগীয় পশ্চাৎপদতা, সামন্ততান্ত্রিক সংস্কৃতি ও অর্থনীতি ছিল দেশ জুড়ে। ১৮ শতকের শেষ ভাগ থেকে ১৯ শতকের শেষার্ধ এই ১০০ বছরে রাশিয়া ৫১টি ভয়াবহ দুর্ভিক্ষ দেখেছিল। খিদে ছিল মানুষের নিত্যসঙ্গী। এর উপর লেগে থাকত যুদ্ধ। প্রথম বিশ্বযুদ্ধে দেশের কৃষক ও শ্রমিক পরিবারগুলির বড় অংশের পুরুষকে যুদ্ধে সৈনিক হতে হয়েছিল। ফলে সংসারের সব কাজই সামলাতে হত মেয়েদের। অপরদিকে পেট্রোগ্রাড, মস্কো প্রভৃতি পশ্চিমের শহরগুলিতে গড়ে ওঠা শিল্প কলকারখানাগুলিতে গ্রামের মানুষ কাজের জন্য দলে দলে ভিড় করতে লাগল। বাসস্থানের অভাব, খিদে ও ঠাণ্ডার সাথে লড়াই করে তাদের জীবন কাটত। পুরুষ শ্রমিকরা ১০-১২ ঘন্টা করে কারখানার হাড়ভাঙা খাটুনির পর মদ ও ফুর্তির আসরে টাকা উড়িয়ে অবসন্ন শরীরে বাড়ি ফিরে প্রভুত্ব করত স্ত্রীদের উপর। প্রতিবাদ করলে জুটত মার। ছেলে-মেয়েদের খিদের যন্ত্রণা আর কান্না ছিল নিত্যসঙ্গী। ম্যাক্সিম গোর্কির ‘মাদার’ উপন্যাসে আমরা এর বর্ণনা পাই। সন্তানদের মুখে অন্ন তুলে দিতে মেয়েরাও বিভিন্ন কারখানায় কাজে যোগ দিতে লাগল। কারখানাগুলিতে নারী শ্রমিক নিয়োগ করা হত অত্যন্ত মজুরিতে। সারাদিনের খাটুনির পর বাড়িতে স্বামীর আধিপত্য ও অত্যাচার সহ্য করতে তারা বাধ্য ছিল। দুশ্চরিত্র স্বামীকে ত্যাগ করার অধিকারও নারীদের ছিল না। সামন্তী সংস্কৃতির নিগড়ে বাঁধা জীবনে পুরুষই ছিল পরিবারের হর্তাকর্তা। নারীরা বাস্তবে ছিল পুরুষদের সম্পত্তি। হুকুম তামিল করা, রান্নাবান্না, বাচ্চা দেখভাল, ঘর-গেরস্থালির কাজ থেকে চাষের কাজ সবই করতে হত মহিলাদের। কিন্তু ছিল না কোনও ভোট দেওয়ার অধিকার। এমনকি কোনও নারীর নামে পাসপোর্ট পর্যন্ত দেওয়া হত না। অধিকাংশ নারী ছিল শিক্ষার আলো থেকে বঞ্চিত। পতিতাবৃত্তি বেছে নিতে বাধ্য হত বহু নারী।
মহান লেনিন দেখিয়েছেন, নারীদের এই সকল শোষণ যন্ত্রণা থেকে মুক্তি এবং প্রকৃত স্বাধীনতা কেবলমাত্র সাম্যবাদ প্রতিষ্ঠার মারফতই আসতে পারে। তিনি বলেছেন, উৎপাদনের উপায়ের উপর ব্যক্তিগত মালিকানার সঙ্গে নারীদের সামাজিক ও মানবিক অবস্থার যে অবিচ্ছেদ্য সম্বন্ধ সে কথা দৃঢ়ভাবে তুলে ধরতে হবেই। তার থেকেই আমাদের নীতি আর নারীবাদ(ফেমিনিজম)-এর মধ্যে স্পষ্ট ও মৌলিক পার্থক্য বোঝা যাবে। এইগুলোই নারীদের প্রশ্নকে সামাজিকপ্রশ্ন ও শ্রমিক সমস্যার অংশ হিসেবে বুঝবার ভিত্তি জোগাবে। লেনিন তাঁর বিপ্লবী কর্মজীবনে শ্রমিক ও কৃষক রমণীদের মুক্তির বিষয়ে বহুপ্রবন্ধ লিখেছেন, বত্তৃতা দিয়েছেন। এসবের মাধ্যমে তিনি দেখিয়েছেন শ্রমিক শ্রেণির মুক্তিসংগ্রাম, সমাজতন্ত্রের সমগ্র সংগ্রামের সঙ্গেই নারীর মুক্তি অবিচ্ছেদভাবে জড়িত।
বিপ্লবী ক্রিয়াকলাপের একেবারে শুরুতেই কমরেড লেনিন নারী-শ্রমিক ও কৃষকদের অবস্থা পরিবর্তনের জন্য লড়াই এবং শ্রমিক আন্দোলনে নারীদের টেনে আনার দিকে বিশেষ মনোযোগ দেন। পিটার্সবার্গে শ্রমিকদের মধ্যে কাজ করতে গিয়ে তিনি প্রচুর ‘বেআইনি’ প্রচারপত্র প্রকাশ করেন। এগুলো গোপনে শ্রমিকদের মধ্যে ছড়িয়ে দেওয়া হত। ‘লাফার্ম’ সিগারেট কারখানার নারী-শ্রমিকদের উদ্দেশ্যে তিনি দুটি প্রচারপত্র প্রকাশ করেন। ১৮৯৫ সালে থর্নটন কাপড় কলের শ্রমিকদের প্রচারপত্রের শিরোনামে লেখেন– ‘থর্নটন কলের নারী-পুরুষ শ্রমিকদের প্রতি’। এটা একটা ছোট্ট ঘটনা কিন্তু খুবই বৈশিষ্ট্যসূচক। নির্বাসনে থাকার সময় অনেক প্রবন্ধে তিনি নারী শ্রমিকদের অবস্থা বর্ণনা করেন। কারাবাসে থাকাকালীন শ্রমিক কৃষকদের তৎকালীন অবস্থা, একই সাথে নারী শ্রমিকদের দুর্দশা বিষয়ে তিনি অনুসন্ধান করেন এবং বিভিন্ন পরিসংখ্যান ও রিপোর্টের ভিত্তিতে অত্যন্ত খুঁটিয়ে অধ্যয়ন করেন। ১৮৯৬ থেকে ১৮৯৯ সাল জুড়ে ডেভেলপমেন্ট অফ ক্যাপিটালিজম ইন রাশিয়া লিখতে গিয়ে লেনিন বারবার বিশ্লেষণ করেছেন রাশিয়ার শ্রমিক শ্রেণির দুঃসহ পরিস্থিতির মধ্যেও মহিলাদের উপর শোষণের দ্বিগুণ মাত্রার কথা। এই গ্রন্থে তিনি বর্ণনা করেছেন কীভাবে পারিবারিক উৎপাদন ও ছোট ছোট উৎপাদনের কাজে আটকে থেকে মেয়েরা শোষিত হয়। কীভাবে বৃহৎ শিল্প কলকারখানার কাজের প্রভাবে নারী শ্রমিকদের দিগন্ত প্রসারিত হচ্ছে, সংগ্রামে শিক্ষিত হয়ে উঠছেন তাঁরা। তার ফলে পরনির্ভরতা কমে যাচ্ছে, পিতৃতান্ত্রিক পরিবারের বাঁধন খসে পড়ছে। উৎপাদন ব্যবস্থার সঙ্গে তাঁদের আরও সরাসরি সম্পর্ক গড়ে উঠতে থাকায় পুরুষতন্ত্রের সম্পর্কগুলি ছাপিয়ে গিয়ে সমাজের পরিসরে একজন স্বতন্ত্র শ্রমিক হিসেবে নিজের জায়গা তৈরি করতে সক্ষম হচ্ছেন শ্রমিক শ্রেণির মহিলারা। তিনি আরও দেখান– শ্রমজীবী নারী আন্দোলনের উদ্দেশ্য শুধু অর্থনৈতিক ও সামাজিক ক্ষেত্রে আনুষ্ঠানিক সমান অধিকার নয়। এর প্রধান কাজ সামাজিক উৎপাদনের কাজের মধ্যে নারীদের টেনে আনা, তাদের ‘পারিবারিক দাসত্ব’ থেকে উদ্ধার করা।
তিনি নারীদের তুচ্ছ ঘরকন্নার কাজ থেকে মুক্ত করে বৃহৎ সমাজতান্ত্রিক অর্থনীতির কর্মী হিসেবে গড়ে তুলতে চেয়েছেন। তিনি বলেছেন–বুর্জোয়া গণতন্ত্র শুধু মুখেই সাম্য ও স্বাধীনতার প্রতিশ্রুতি দেয়। কাজের বেলায় একটি বুর্জোয়া গণতান্ত্রিক দেশ, এমনকি সবচেয়ে উন্নত দেশও মানবজাতির অর্ধেক যে নারীসমাজ, তাদের আইনত পুরুষের সমান অধিকার অথবা পুরুষদের শাসন ও দমন থেকে মুক্তি দেয়নি। বুর্জোয়া গণতন্ত্র শুধু জাঁকালো গালভরা কথার বড় বড় প্রতিশ্রুতির আর স্বাধীনতা ও সাম্যের নামে আড়ম্বর ভরা ধ্বনির গণতন্ত্র। কিন্তু কাজের বেলায় এই গণতন্ত্র নারীদের স্বাধীনতাহীনতা ও নিকৃষ্ট অবস্থা, একই সাথে সমস্ত শোষিত শ্রমিকের স্বাধীনতাহীনতা ও নিকৃষ্ট অবস্থাকে চাপা দিয়ে রাখে।
লেনিনের নেতৃত্বে বলশেভিক পার্টি মহিলা শ্রমিকদের রাজনৈতিক সচেতনতা বাড়ানোর কাজে বাড়তি গুরুত্ব দিয়েছেন। যার মধ্য দিয়ে শ্রমিক শ্রেণির মহিলারা বুঝেছিলেন জারতন্ত্রের ভয়ঙ্কর নীতিগুলোর জন্যই দারিদ্র্য ও অধীনতায় জরাজীর্ণ অসহায় জীবন তাদের। উনিশ শতকের শেষ দশকে মার্ক্সীয় পাঠচক্রে যোগদান করতে থাকেন একের পর এক মহিলা। মার্ক্সীয় দর্শনের চর্চা, আগামী দিনের বিপ্লবের রূপরেখা বিষয়ে গভীর তত্ত্বগত আলোচনাতেও অংশ নিতে থাকেন মহিলা সংগঠকরা। তাঁরা মূলত কলে-কারখানায় ছড়িয়ে গিয়ে মহিলা শ্রমিকদের সংগঠিত করার কাজ করতেন। এই কাজ বিস্তার লাভ করেছিল মহিলা দর্জি, গৃহপরিচারিকা, গ্রামাঞ্চলের খেতমজুর মহিলাদের মধ্যে। বিপ্লবের প্রস্তুতিপর্বে এরকম বহু দায়িত্বশীল ভূমিকা পালন করেছেন মহিলা সংগঠকরা। শহরের বস্ত্র ও অন্যান্য হালকা শিল্পে যেখানে মহিলা শ্রমিকরা বেশি কাজ করতেন, সেখানে বলশেভিক মহিলা সংগঠকরা মতাদর্শগত প্রচার করতেন। এর ফলে হাজার হাজার নারী শ্রমিক নভেম্বর বিপ্লবে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নিয়েছিলেন।
নভেম্বর বিপ্লবের পরপরই কমরেড লেনিনের নেতৃত্বে সোভিয়েত সরকার যুগান্তকারী সব পদক্ষেপ নেয়। নির্বাচনে, সম্পত্তিতে, শিক্ষায় ও চাকরিতে নারীদের কোনও শর্ত ছাড়া সমান অধিকার প্রদান করা হয়। নারী পুরুষ উভয়ের জন্যই ন্যূনতম মজুরি ও আট ঘন্টা কাজের সময় নির্ধারণ করা হয়। নারীদের সামাজিক উৎপাদনের প্রক্রিয়ায় যুক্ত করতে, রান্নাঘর ও আঁতুড় ঘরের বোঝা দূর করতে যৌথ রান্নাঘর, লন্ড্রি, শিশুদের জন্য কিন্ডারগার্টেন করা হয়। পুরো বেতনে মাতৃত্বকালীন ছুটির পাশাপাশি প্রসূতি মায়েদের জন্য পার্ট টাইম চাকরি এমনকি কর্মক্ষেত্র থেকে তিন ঘন্টা পর পর শিশুকে মাতৃদুগ্ধ খাওয়ানোর জন্য ছুটি দেওয়া হয়। সমাজতান্ত্রিক বিপ্লব কীভাবে নারীমুক্তির পথ উন্মুক্ত করেছে তার বাস্তব প্রমাণ উল্লেখ করে ১৯১৮-তে লেনিন বলেন, নারীদের অবস্থার কথা ধরা যাক। ক্ষমতা হাতে পাবার প্রথম বছরই আমরা এ বিষয়ে যতখানি করেছি পৃথিবীতে এমন একটাও গণতান্ত্রিক দেশ নেই যে বছরের পর বছর ধরে তার শতাংশের এক অংশ করতে সক্ষম হয়েছে। এমনকি সবচেয়ে উন্নত বুর্জোয়া গণতান্ত্রিক দেশও নয়। এ কথা অক্ষরে অক্ষরে সত্য যে, যেসব আইন পুরুষদের কাছে নারীকে হেয় করে রেখেছিল, বিবাহ বিচ্ছেদের যেসব বাধা নিষেধ ও বিরক্তিকর পদ্ধতি ছিল, তথাকথিত অবৈধ সন্তানদের সম্বন্ধে ও তাদের পিতাদের অনুসন্ধান করে বেড়ানো প্রভৃতি বিষয়ে যেসব জঘন্য আইন ছিল আমরা তার লেশমাত্র চিহ্ন অবশিষ্ট রাখিনি। এ বিষয়ে আমরা যা করেছি তার জন্য হাজার বার গর্বিত হওয়ার অধিকার আমাদের আছে।
বিপ্লব পরবর্তী সোভিয়েত সরকার অত্যন্ত সহানুভূতির সঙ্গে বৈজ্ঞানিক পদ্ধতি অবলম্বন করে ধাপে ধাপে দেশ থেকে পতিতাবৃত্তি নির্মূল করতে সক্ষম হয়েছিল। পতিতা নারীদের সমাজের মূল স্রোতে ফিরিয়ে এনে মর্যাদার সাথে বাঁচার ব্যবস্থা করা হয়েছিল। সকল শিশুর দায়িত্ব রাষ্ট্র নিয়েছিল। ফলে সে দেশে আমাদের দেশের মতো রাস্তায়, ফুটপাতে, রেলস্টেশনে, চায়ের দোকানে অন্নহীন, শিক্ষাহীন অসহায় পথশিশুর চিহ্ন ছিল না। সোভিয়েত সমাজতন্ত্রের সর্বদিক দিয়ে এক নিরবিচ্ছিন্ন সংগ্রামের মাধ্যমে শিক্ষা, সংস্কৃতি, বিজ্ঞান, খেলাধূলা সমস্ত ক্ষেত্রে সে দেশের নারীরা পৃথিবীতে দৃষ্টান্ত সৃষ্টি করেছিল।
মহান লেনিনের মৃত্যুশতবর্ষে নারীমুক্তিকে বাস্তবায়িত করার পথপ্রদর্শনে তাঁর অবদানের কথা প্রতিটি দেশের শোষিত লাঞ্ছনাবিদ্ধ নারীদের কাছে পৌঁছে দেওয়া আজ একান্ত প্রয়োজন।