রাজ্যের সরকারি সাহায্যপ্রাপ্ত ন’টি বিশ্ববিদ্যালয়ে এখন কোনও উপাচার্য নেই। অচিরেই আরও দুটি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যের মেয়াদ শেষ হতে চলেছে। ফলে বিশ্ববিদ্যালয়গুলির দৈনন্দিন কাজে অচলাবস্থা তৈরি হয়েছে। অবিলম্বে এই বিশ্ববিদ্যালয়গুলিতে উপাচার্য নিয়োগের দাবি করে এআইডিএসও-র পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য কমিটির সম্পাদক কমরেড বিশ্বজিৎ রায় ২৩ ফেব্রুয়ারি এক বিবৃতিতে বলেন,
উপাচার্যহীন অবস্থায় বিশ্ববিদ্যালয়গুলির দৈনন্দিন কাজ ব্যাহত হওয়ায় প্রবল সমস্যার সম্মুখীন হতে হচ্ছে ছাত্রছাত্রীদের। বিদ্যাসাগর বিশ্ববিদ্যালয়ে উপাচার্যের অনুপস্থিতির কারণে স্নাতকোত্তর দূর-শিক্ষায় দ্বিতীয় বর্ষের কলা বিভাগের পরীক্ষার ১০০ দিন পরেও উপাচার্যের সইয়ের অভাবে ফল প্রকাশ করা যাচ্ছে না। পূর্ব মেদিনীপুরের মহাত্মা গান্ধী বিশ্ববিদ্যালয়ের শুধুমাত্র উপাচার্যের পদটিই স্থায়ী ছিল, বাকি পূর্ণ সময়ের অধ্যাপক ও শিক্ষাকর্মী পদে সরকার কোনও নিয়োগ করেনি।
এই অবস্থায় বিশ্ববিদ্যালয়ের পঠন পাঠন চূড়ান্ত অব্যবস্থার সম্মুখীন এবং তা ছাত্রছাত্রীদের মানসিক ভাবেও বিপর্যয়ের দিকে ঠেলে দিচ্ছে। একই পরিস্থিতি কলকাতা, উত্তরবঙ্গ, দার্জিলিং হিল, বিশ্ব বাংলা, আলিপুরদুয়ার বিশ্ববিদ্যালয়ের। উপাচার্যহীন বিশ্ববিদ্যালয়গুলিতে এমনকি সেনেট-সিন্ডিকেটের মিটিংয়ের অভাবে থমকে রয়েছে বহু প্রশাসনিক সিদ্ধান্ত। শুধু তাই নয়, ১০টি জেলায় ছড়িয়ে থাকা ৩০০-র বেশি কলেজ অভিভাবকহীন অবস্থায় থাকায় নানা সংকট তৈরি হয়েছে। তিনি উদ্বেগ প্রকাশ করে বলেন, রাজ্যের একাধিক উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠান মাসাধিককাল অভিভাবকহীন অবস্থায় থাকলেও সরকার সম্পূর্ণ উদাসীন। রাজ্যে নিয়োগ পরীক্ষায় একের পর এক দুর্নীতি হয়ে চলেছে। শিক্ষক নিয়োগে পাহাড়প্রমাণ দুর্নীতি সামনে এসেছে। এমনকি উচ্চশিক্ষায় উপাচার্য নিয়োগেও চূড়ান্ত অস্বচ্ছতা দেখা যাচ্ছে। যার পরিণতিতে রাজ্যে ২৫ জন উপাচার্যের নিয়োগকে কেন্দ্র করে যে পরিবেশ সৃষ্টি হয়েছে তা খুবই উদ্বেগের। খবরে প্রকাশ, ২৪ জন উপাচার্যের নির্বাচনে আচার্যের স্বাক্ষর নেই, এতে প্রশ্ন ওঠে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের গণতান্ত্রিক পরিবেশ ও স্বচ্ছতা নিয়ে। বহু নিয়োগের ক্ষেত্রে ইউজিসির বিধিও মানা হয়নি, যা হাইকোর্টে বিচারাধীন। এর ফল ভোগ করতে হচ্ছে ছাত্রছাত্রীদের। এআইডিএসও-র অভিযোগ, বিজেপি সরকারের জাতীয় শিক্ষানীতি-২০ খোলাখুলিভাবে প্রয়োগের মাধ্যমে বেসরকারিকরণের লক্ষে্যই রাজ্য সরকার এই পরিস্থিতি তৈরি করছে সুপরিকল্পিত ভাবে। এই পরিস্থিতির দ্রুত অবসান এবং বিশ্ববিদ্যালয়গুলিতে অচলাবস্থা কাটানোর দাবি জানিয়েছে এআইডিএসও। সংগঠনের পক্ষ থেকে ২৪ ফেব্রুয়ারি উপাচার্যহীন বিশ্ববিদ্যালয়গুলিতে ডেপুটেশন দেওয়া হয়। ২৭ ফেব্রুয়ারি আচার্যের কাছে ও শিক্ষাদপ্তরে ডেপুটেশন দেওয়া হয়। পাশাপাশি কলকাতা সহ জেলায় জেলায় বিক্ষোভ হয়।