মিজোরামে ২৫ জন পরিযায়ী শ্রমিকের মৃত্যু, দোষীদের শাস্তির দাবি

মিজোরামের কুরুং নদীর নির্মীয়মান রেল সেতুর ইস্পাতের প্রধান কাঠামো ভেঙে পড়ে মালদা জেলার ২৩ জন সহ ২৫ জন শ্রমিকের মর্মান্তিক মৃত্যুর ঘটনায় গভীর শোক প্রকাশ করে এস ইউ সি আই (সি)-র পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য সম্পাদক কমরেড চণ্ডীদাস ভট্টাচার্য ২৪ আগস্ট এক প্রেস বিবৃতিতে বলেন, কুরুং নদীর উপর নির্মীয়মান রেল সেতুর উপর দুর্ঘটনায় এত জন পরিযায়ী শ্রমিকের বেদনাদায়ক মৃত্যু প্রমাণ করল, বৃহৎ নির্মাণসংস্থাগুলি কর্মস্থলে শ্রমিকদের সুরক্ষা ও নিরাপত্তার ব্যাপারে কতটা দায়িত্বজ্ঞানহীন। কেবল মুনাফার লোভে সুরক্ষা সংক্রান্ত পরিযায়ী শ্রমিক আইন-১৯৭৯-কে নিষ্ক্রিয় করে রাখার ফলে বারবার এমন ঘটনা ঘটছে। গত বছর মণিপুরে রেললাইন পাততে গিয়ে ৬০ জন পরিযায়ী শ্রমিকের মৃত্যু ঘটেছিল। কেন্দ্রীয় সরকার এই নির্মাণসংস্থাগুলিকে আইন মানতে বাধ্য না করে নিহতদের পরিবারবর্গকে কেবল ২ লক্ষ টাকা ক্ষতিপূরণ দিয়ে দায়িত্ব সারতে চাইছে। নিহতদের পরিবারের প্রতি এ আচরণ অত্যন্ত হৃদয়হীন। এমন পরিস্থিতিতে পশ্চিমবঙ্গ সরকারও দায়সারাভাবে ১০০ দিনের কাজের টাকা না দেওয়ার অজুহাত তুলে কেন্দ্রকে দোষারোপ করেছে। এই চাপান-উতোর চলতেই থাকে। রাজ্যে কেন শ্রমিকরা কাজ পান না, তার সঠিক কারণ না দেখে গতকাল মুখ্যমন্ত্রী ঋণ নিয়ে এঁরা কেন চা-বিস্কুট, ঘুগনি, পাউরুটি, চপ বানানোর দোকান খুলছেন না, তা নিয়ে বিস্ময় প্রকাশ করে বলেছেন রাজ্যের অর্থনীতি এগিয়ে চলেছে। আমরা দুই সরকারের এই হৃদয়হীন আচরণের তীব্র নিন্দা করছি এবং দাবি করছি– অতি দ্রুত মিজোরামের এই ঘটনার উপযুক্ত তদন্ত করে দোষীদের চরম শাস্তি দিতে হবে, মৃতদের পরিবার পিছু একজনের স্থায়ী চাকরি এবং পরিবারবর্গকে উপযুক্ত ক্ষতিপূরণ দিতে হবে। নির্মাণসংস্থাগুলিকে পরিযায়ী শ্রমিক আইন-১৯৭৯ মানতে বাধ্য করতে হবে। দলের মালদা জেলা কমিটির পক্ষ থেকে ২৪ আগস্ট শোকবেদি স্থাপন করে মৃতদের শ্রদ্ধা জানিয়ে মাল্যদান করা হয় এবং পরদিন শোকগ্রস্ত পরিবারগুলির সাথে দেখা করে সমবেদনা জানানো হয়।

অল ইন্ডিয়া মাইগ্র্যান্ট ওয়ার্কার্স অ্যাসোসিয়েশনের পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য সম্পাদক জয়ন্ত সাহা গভীর দুঃখ প্রকাশ করে বলেন, পরিযায়ী শ্রমিক আইন-১৯৭৯কে গুরুত্ব সহকারে বাস্তবায়িত করতে হবে এবং পরিযায়ী শ্রমিকদের সুরক্ষা ও নিরাপত্তা সুনিশ্চিত করার পরই যে কোনও নির্মাণ কাজ শুরু করতে হবে। আমরা সংগঠনের পক্ষ থেকে রাজ্যের সমস্ত পরিযায়ী শ্রমিক সহ সর্বস্তরের শ্রমজীবী ও শুভবুদ্ধিসম্পন্ন সাধারণ মানুষের কাছে এই দাবিতে তীব্র ধারাবাহিক আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার আহ্বান জানাচ্ছি।