২০০৬-এর অরণ্যের অধিকার আইনে বনাঞ্চলে বসবাসকারী আদিবাসী, চিরাচরিত বনবাসীদের যতটুকু অধিকার ছিল তাকে কেড়ে নিতে সচেষ্ট কেন্দ্রীয় বিজেপি সরকার। সে জন্য তারা এই আইনের সাংবিধানিক ক্ষমতা খর্ব করতে এনেছে বন (সংরক্ষণ) সংশোধনী আইন-২০২৩ ও বন (সংরক্ষণ) রুল-২০২২। এর মাধ্যমে জঙ্গলের অধিকার, তার ব্যবহারের স্বত্ব পুরোপুরি একচেটিয়া মালিকদের পরিচালিত কর্পোরেট কোম্পানিদের হাতে তুলে দিতে বিজেপি সরকার উঠে পড়ে লেগেছে।
এর বিরুদ্ধে অল ইন্ডিয়া জন অধিকার সুরক্ষা কমিটির আহ্বানে ২৩ আগস্ট সারা ভারত প্রতিবাদ দিবস পালিত হল। গুজরাট থেকে আসাম, ত্রিপুরা পর্যন্ত জঙ্গলাকীর্ণ আদিবাসী ও চিরাচরিত বনবাসী জনগোষ্ঠীর বসতিযুক্ত রাজ্যগুলিতে এই প্রতিবাদ দিবস পালিত হয়। বিপুল উৎসাহ ও সংগ্রামী বলিষ্ঠতার সাথে দিনটি পালিত হয়। ওড়িশার ভুবনেশ্বরে রাজভবনের সামনে বিক্ষোভ দেখানো হয়। ময়ূরভঞ্জ, কেওনঝর, সুন্দরগড়, কোরাপুট প্রভৃতি জেলার বিভিন্ন স্থানে বিক্ষোভ দেখানো হয়। পশ্চিমবঙ্গের পুরুলিয়া, বাঁকুড়া, মেদিনীপুর সহ বিভিন্ন জেলাতে বিক্ষোভ কর্মসূচি হয়। বিহারের মুঙ্গের জেলার জঙ্গলসংলগ্ন এলাকা হাভেলি খড়গপুরে বিক্ষোভ হয়। ঝাড়খণ্ডের দক্ষিণে পূর্ব সিংভূম জেলা থেকে শুরু করে বোকারো এবং প্রত্যন্ত উত্তরে গোড্ডাতে প্রতিবাদ কর্মসূচি হয়। আসামের গুয়াহাটি ও ত্রিপুরার আগরতলাতেও প্রতিবাদ দিবসের কর্মসূচি পালিত হয়। কর্ণাটকের মাইসোর জেলাতে প্রতিবাদ দিবস পালিত হয়। গুজরাটের ডাঙ জেলাতেও এই কর্মসূচি পালিত হয়। দাবি তোলা হয়, বন সংরক্ষণ (সংশোধনী) আইন-২০২৩ ও বন সংরক্ষণ রুল-২০২২ অবিলম্বে প্রত্যাহার করতে হবে। অরণ্যের অধিকার আইন-২০০৬ পূর্ণরূপে ও যথাযথ ভাবে চালুকরতে হবে। রাষ্ট্রপতির উদ্দেশে লিখিত এই সব দাবি সংবলিত স্মারকলিপি স্থানীয় প্রশাসনের মাধ্যমে পাঠানো হয়। একই সঙ্গে অল ইন্ডিয়া জন অধিকার সুরক্ষা কমিটি দেশ জুড়ে উপরোক্ত দাবি সংবলিত স্মারকলিপি পোস্টকার্ডের মাধ্যমে রাষ্ট্রপতির কাছে পাঠানোর কর্মসূচি ঘোষণা করেছে। কমিটির পক্ষ থেকে ধারাবাহিকভাবে এই আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার কথাও ঘোষণা করা হয়। নেতৃবৃন্দ বলেন, দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত বিভিন্ন প্রক্রিয়াতে এই আন্দোলনকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়া এবং ক্রমশ শক্তিশালী করে গড়ে তোলা হবে।