এক একটা ভোটপর্ব যায়, তাতে কত টাকা ওড়ে? কত কোটি তা হিসাব করতে গেলে রামা কৈবর্ত-রহিম শেখদের মাথা ঘুরে যায়। নানা রঙের ঝান্ডাধারী বড় বড় দল এত টাকা কোথায় পায়, কে দেয়? কেনই বা দেয়? উত্তরটা জানা—দেয় বড় বড় পুঁজিমালিকরা। দলের তহবিলে এই টাকা পাওয়ার একটা রাজপথ ২০১৭-তে তৈরি করেছিল কেন্দ্রের নরেন্দ্র মোদি সরকার। তার নাম ইলেক্টোরাল বন্ড, বা নির্বাচনী বন্ড।
পুঁজি মালিকরা কেন গদিতে থাকা বা গদিতে যেতে পারে এমন দলের তহবিলে টাকা ঢালে? এর উত্তরও দেশের মানুষের কাছে একেবারে অজানা নয়। এবারে দেখা গেল ১৫ ফেব্রুয়ারি নির্বাচনী বন্ডকে অসাংবিধানিক বলে রায় দিতে গিয়ে সুপ্রিম কোর্টের পাঁচ বিচারপতির বেঞ্চ বলেছে, এই নির্বাচনী বন্ড হল কোনও কিছুর বিনিময়ে কাউকে সুবিধা পাইয়ে দেওয়ার ব্যবস্থা, আদালতের ভাষায় ‘কুইড প্রো কুয়ো’।
এই বন্ডের ইতিহাসটা একটু দেখে নেওয়া যাক। ২০১৭-র মাঝামাঝি কেন্দ্রের ক্ষমতাসীন বিজেপি সরকার নির্বাচনে কালো টাকা রুখবার কথা বলে জনপ্রতিনিধিত্ব আইন, আয়কর আইন, কোম্পানি আইনের সংশোধনীর মাধ্যমে এই নির্বাচনী বন্ড চালুর আইন এনেছিল। তৎকালীন রিজার্ভ ব্যাঙ্কের পরিচালকরা এবং নির্বাচন কমিশনের কর্তারা এর বিরুদ্ধে মত দেন। তাঁরা বলেন, এর ফলে নির্বাচনে খাটা টাকা নিয়ে অস্বচ্ছতা আরও বাড়বে। কিন্তু ২০১৮-র শুরুতেই নরেন্দ্র মোদি সরকার সব আপত্তি উড়িয়ে বন্ড চালু করে দেয়। এর মাধ্যমে কোনও ব্যক্তি বা কর্পোরেট সংস্থা স্টেট ব্যাঙ্ক অফ ইন্ডিয়া থেকে যত খুশি ১ হাজার থেকে ১ কোটি টাকা মূল্যের বন্ড কিনে কোনও রাজনৈতিক দলের হাতে তা তুলে দিতে পারেন। কে টাকা দিলেন তাঁর পরিচয় রাজনৈতিক দলটি ছাড়া কেউ জানবে না। রাজনৈতিক দলটিও প্রাপ্ত বন্ডের কোনও রেকর্ড রাখতে বাধ্য থাকবে না। দাতা এর জন্য আয়করে ছাড় পাবেন।
কারা পেল, কে দিল
২০১৮ থেকে ২০২৩-এর মার্চ পর্যন্ত ১২ হাজার ৮ কোটি টাকা নির্বাচনী বন্ডের মাধ্যমে রাজনৈতিক দলগুলি পেয়েছে। এর ৫৫ শতাংশ অর্থাৎ ৬ হাজার ৫৬৪ কোটি টাকা পেয়েছে একা বিজেপি। কংগ্রেস পেয়েছে ১ হাজার ১৩৫ কোটি টাকা, তৃণমূল কংগ্রেস পেয়েছে ১ হাজার ৯৩ কোটি টাকা (দ্য ওয়্যার ও ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস, ১৬.০২.২০২৪)। অন্যান্য যারা বেশি টাকা পেয়েছে তাদের মধ্যে আছে বিজেডি, ডিএমকে, বিআরএস, ওয়াইএসআর কংগ্রেস, আপ, টিডিপি, শিব সেনা ইত্যাদি।
কে দিল? সাধারণ মানুষের পক্ষে জানা কঠিন। এমনকি সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশে স্টেট ব্যাঙ্ক যদি ৬ মার্চের মধ্যে নির্বাচন কমিশনকে বন্ড ক্রেতাদের তালিকা দেয়ও, এবং নির্বাচন কমিশন ৩১ মার্চের মধ্যে তা প্রকাশও করে দেয়, তাতে বড়জোর জানা যেতে পারে কার এই বন্ড কিনেছিল। কে কাকে দিয়েছ তা জানা কঠিন, কারণ রাজনৈতিক দলগুলোর কাছে এর রেকর্ড রাখার বাধ্যবাধকতা নেই। তবু চেষ্টা করা যাক নির্বাচনী বন্ডে টাকা ঢেলেছে কারা তা আন্দাজ করতে। দেখা যাচ্ছে শুধু ২০২৪-এর জানুয়ারিতে ৫৭০ কোটি টাকা নির্বাচনী বন্ডে ঢালা হয়েছে। এর ৯৪.৪ শতাংশই ১ কোটি টাকা মূল্যের। অর্থাৎ সাধারণ মানুষ নন, কর্পোরেট কোম্পানি এবং অতি ধনীরাই এতে টাকা ঢেলেছেন। তথ্য বলছে, বিজেপি সহ বেশিরভাগ বড় সংসদীয় রাজনৈতিক দলের আয়ের বেশিটাই এসেছে হয় নির্বাচনী বন্ড থেকে না হলে অন্যভাবে কর্পোরেট কোম্পানি বা ব্যক্তিগত বৃহৎ পরিমাণ ডোনেশন থেকে। সাধারণ মানুষের দেওয়া ছোট মূল্যের চাঁদা সেখানে নগণ্য। কোনও কোনও দলের ক্ষেত্রে নির্বাচনী বন্ড থেকে আয় মোট আয়ের ৬০ থেকে ৯০ শতাংশের বেশি। তার মধ্যে বিজেপি, তৃণমূল অনেকেই আছে। অ্যাসোসিয়েশন ফর ডেমোক্রেটিক রিফর্মস (এডিআর)-এর রিপোর্ট অনুযায়ী ৬টি জাতীয় দলের নির্বাচনী বন্ডের আয় ২০১৭-১৮ থেকে ২০২২-এর মধ্যে বেড়েছে ৭৪৩ শতাংশ, অন্যান্য কর্পোরেট বা ব্যক্তিগত বড় ডোনেশন বেড়েছে ৪৮ শতাংশ। সব স্বীকৃত রাজ্য-দলগুলির সম্মিলিতভাবে নির্বাচনী বন্ড থেকে আয় বেড়েছে ১৪০২৬.৪ শতাংশ, কর্পোরেট এবং বড় চাঁদা বেড়েছে ৩৮৯ শতাংশ (এডিআর রিপোর্ট, ১৪.০৮.২০২৩)। তাহলে, নাম ধরে বলা না গেলেও কারা এত বিপুল টাকা বড় বড় রাজনৈতিক দলগুলির পিছনে ঢেলেছে তা বুঝতে অসুবিধা হয় কি?
নির্বাচনী বন্ড সংক্রান্ত সুপ্রিম কোর্টের রায়ের পরে বিজেপি নেতা রবিশঙ্কর প্রসাদ দলের পক্ষ থেকে সংবাদমাধ্যমে দাবি করেছেন, এই বন্ড বাতিল হলে আবার ভোটে কালো টাকার রমরমা ফিরে আসবে। বাস্তবটা কি তাই? বিজেপি সরকার এই বন্ড চালুর কিছুদিন পরে কোম্পানি আইন সংশোধন করে কিছু বিধিনিষেধ তুলে নেয়। তাতে যে কোনও কালো টাকার মালিকও একটা ভুয়ো কোম্পানি খুলে ফেলে শাসকদলের তহবিলে বিনিয়োগ করার সুযোগ পায়। কালো টাকার বিরুদ্ধে লড়াইয়ের কী অপূর্ব নিদর্শন! আর বিজেপি যে রাজনৈতিক ‘ওয়াশিং মেশিন’ তা এই দলের কার্যকলাপে এখন চালু কথা। বিজেপি সহ অন্যান্য বৃহৎ সংসদীয় দলগুলো রাজ্যে রাজ্যে নির্বাচনে যে বিপুল টাকা ওড়ায় তা সাদা উৎস থেকে কতটা আসতে পারে? এই প্রসঙ্গে একটা পুরনো তথ্য একটু ঝালিয়ে নিতে ক্ষতি কী? নরেন্দ্র মোদি প্রধানমন্ত্রী হওয়ার পর প্রজাতন্ত্র দিবসে সোনার সুতো দিয়ে সর্বাঙ্গে নিজের নাম লেখা ১০ লাখ টাকা দামের যে কোটটি পরেছিলেন তা নিলামে কিনতে যাঁরা ঝাঁপিয়েছিলেন, তাঁদের সকলের বিরুদ্ধে নানা আর্থিক দুর্নীতির অভিযোগ ছিল। এমনকি যিনি কিনতে সফল হয়েছিলেন, তিনিও তাই। এঁদের মতো অনেকেই কি বিজেপির তহবিলে শক্তি জোগাননি?
কেন এত গোপনীয়তা?
সরকার কোর্টে দাবি করেছিল, যারা রাজনৈতিক দলকে টাকা দিচ্ছে তাদের গোপনীয়তা বজায় রাখা প্রয়োজন স্বচ্ছতার জন্যই। তাদের পরিচয় জানার অধিকার ভোটারদের থাকতে পারে না। এ জন্যই নির্বাচনী বন্ড পুরোপুরি গোপন এমনকি তথ্যের অধিকার আইনের আওতার বাইরে। আদালতে প্রশ্ন উঠেছে, একজন সাধারণ মানুষ কোনও রাজনৈতিক দলের আদর্শকে ভালবাসলে যাতে চাঁদা দেওয়া থেকে শুরু করে রাজনৈতিক মত প্রকাশে বাধা না পান সেটা অবশ্যই নিশ্চিত করতে হবে। কিন্তু তার সাথে রাজনৈতিক তহবিলে বিপুল অঙ্কের টাকা ঢালা অতি ধনী বা কর্পোরেট কোম্পানির পরিচয় গোপন রাখার প্রশ্নটা কি এক? আদালতও বলেছে, কর্পোরেট কোম্পানি টাকা দেয় ব্যবসায়িক সুবিধার লক্ষ্যে। সরকার এবং রাষ্ট্রকে দিয়ে সেই সুবিধা পাইয়ে দেওয়ার ব্যবস্থাকেই এখন স্বচ্ছতা বলতে হবে! বিজেপি যদি এতই স্বচ্ছতার দাবিদার হয় তাহলে কারা তাদের টাকা দিয়ে সমর্থন জানালো তা নিজের সমর্থক এবং ভোটারদের জানাতে ভয় কেন?
প্রশ্ন আরও, নির্বাচনী বন্ডের সিংহভাগ সব সময় শাসক দলের কাছেই গেছে কেন? বিজেপি নেতারাই যুক্তি দিয়েছেন, এখন তাঁরা সরকারে আছেন বলেই বৃহৎ পুঁজির মালিকরা তাঁদের দলের পিছনে দেদার টাকা খরচ করতে রাজি, কংগ্রেস যখন দীর্ঘদিন সরকারে ছিল তারা এই বৃহৎ পুঁজি মালিকদের টাকা বেশি পেয়েছে। কেন এই মালিকরা শাসক দলগুলির পিছনে টাকা ঢালে, তা কি দেশের মানুষের অজানা?
স্মরণ করা যেতে পারে, কিছুদিন আগে শিল্পপতি গৌতম আদানি নিজ মুখেই বলেছিলেন কংগ্রেসের আমলে তাঁর সাথে কংগ্রেসের বিশেষ সম্পর্ক ছিল, বর্তমান আমলে বিজেপির সাথে ব্যাপারটা এমনই। আরও স্মরণ করা দরকার, কয়েক বছর আগে বিজেপি সরকারের তেলমন্ত্রী একটি আলোচনা প্রসঙ্গে বলেছিলেন, তেলের দাম নির্ধারণে কর্পোরেট মালিকদের মত নিয়েই তাঁরা পা ফেলেন। এ ছাড়া বৃহৎ পুঁজিপতিদের লক্ষ লক্ষ কোটি টাকা ব্যাঙ্ক ঋণ মকুব করে দেওয়া, তাদের হাতে দেশের সম্পদ বেচে দেওয়া, তাদের স্বার্থে একের পর এক আইন দেখার পরেও এই মালিকরা কেন শাসকদলকে বেশি টাকা দেয় তা কি আরও স্পষ্ট করে বলার দরকার পড়ে?
এতে কার ক্ষতি?
গান্ধীজিকে লালা লাজপত রাই বলেছিলেন, কংগ্রেস যদি পুঁজিপতিদের থেকে টাকা নিয়ে চলে তাহলে কংগ্রেস রাজনীতিকে তারাই প্রভাবিত করবে। ফলে তা নেওয়া উচিত নয়। বলেছিলেন, আপনি দেশের সাধারণ মানুষের কাছে টাকা চান, তারাই তহবিল ভরে দেবে। গান্ধীজি তা শোনেননি। এখন কী দেখছি আমরা? গোটা গণতান্ত্রিক ব্যবস্থাটাই আজ প্রহসনে পরিণত হয়েছে। নির্বাচনে বিপুল খরচ করে রাজনৈতিক দলগুলি ভোট কেনে কখনও সরাসরি, না হলে পরোক্ষে। ইংল্যান্ডের মতো ভারতের নির্বাচনেও ফেসবুকের মালিক কোম্পানিকে টাকা দিয়ে শাসকদলের পক্ষে জনমত তৈরির দায়িত্ব দেওয়া হয়েছিল মানুষ জানে। এখন বিজেপি, কংগ্রেস, তৃণমূল বা রাজ্যে রাজ্যে নানা দলের ঝান্ডা ধরে যারা মিটিং মিছিল করে তারা আদর্শের টানে আসে? এখন এইসব দলের বেশিরভাগ নিচুতলার কর্মী টাকার বিনিময়ে মজুরে পরিণত বাহিনী মাত্র। এর সাথে বিজেপির বিখ্যাত আইটি সেলের মিথ্যা প্রচারের বিপুল শক্তি, টিভি, খবরের কাগজের ঢাউস বিজ্ঞাপন, রাস্তা জুড়ে হোর্ডিং এ রকম কতকিছু। এমনকি দলের নীতি নির্ধারণও এখন আর দলের সাধারণ সদস্য তো বটেই নেতাদেরও ভাবার বিষয় নয়! শোনা যায় নানা ‘ভোট কুশলী’ কেম্পানির নাম। এ ছাড়া আছে নেতা কেনার জন্য টাকা ও সুবিধার থলি। এক একজন নেতা-মন্ত্রী যে দলের হয়ে জেতেন সে দলে কতদিন টিকবেন বলা মুশকিল। মহারাষ্ট্র, মধ্যপ্রদেশ, কর্ণাটকে এমন কেনা বেচার মাধ্যমে সরকার গড়ার খেলা কি মানুষ ভুলে যেতে পারে? এর সাথে যুক্ত আমলাদের ও পুলিশকে কেনা, নির্বাচন কমিশনের উপর প্রভাব বিস্তারের মেশিনারি। এর পরেও কিছু ভোট ম্যানেজ না হলে সরাসরি পেশি শক্তিক জোর দেখানোর জন্য অস্ত্রের সমারোহ। বুর্জোয়া পেটিবুর্জোয়া দলগুলির ভোট রাজনীতিতে সাধারণ মানুষের কার্যত নির্ণায়ক কোনও ভূমিকাই নেই। তাই তাদের ওপর দলগুলোর নির্ভরতাও নেই। মনে রাখা দরকার, বুর্জোয়া ব্যবস্থায় সমাজের সম্পদের ওপর পুঁজিপতি শ্রেণির মালিকানাই তাদের শক্তির উৎস। মহান লেনিন তাঁর ‘রাষ্ট্র ও বিপ্লব’ গ্রন্থে সর্বহারা শ্রেণির মহান শিক্ষক এঙ্গেলসকে উদ্ধৃত করে দেখিয়েছেন, ‘একটা গণতান্ত্রিক প্রজাতন্ত্রে সম্পদ পরোক্ষভাবে কিন্তু নিশ্চিতরূপে তার শক্তি প্রয়োগ করে’। মহান শিক্ষক মার্ক্সের শিক্ষা তুলে ধরে লেনিন আরও দেখিয়েছেন, বুর্জোয়া ব্যবস্থায় নির্বাচন মানে, ‘কয়েক বছর অন্তর শোষিত মানুষকে অনুমতি দেওয়া–শোষক শ্রেণির কোন কোন প্রতিনিধি সংসদে তাদের প্রতিনিধি হবে, তাদের নিপীড়ন করবে তা বেছে নেওয়ার।’
এই দলগুলো সকলেই পুঁজিপতি শ্রেণিরই সেবাদাস। তাদের ভরণপোষেণের দায়ও এই শ্রেণির হাতেই আছে। তাই এ রকম কোনও দল যখন কেন্দ্র বা রাজ্যে বিরোধী আসনেও থাকে, তখনও পুঁজিপতি শ্রেণি তাদের পক্ষের রাজনীতিকে বাঁচিয়ে রাখতে কম বেশি টাকা জুগিয়ে চলে। দুঃখের হলেও সত্য, সিপিএমের মতো বামপন্থী বলে পরিচিত দল নির্বাচনী বন্ডে টাকা না নিলেও কর্পোরেট মালিকদের থেকে অন্যভাবে চাঁদা নিয়েছে। তা অবশ্যই এখন ক্ষমতায় থাকা দলগুলির তুলনায় অনেক কম। কিন্তু তাদের রাজনীতির মধ্যেই মিশে থাকা শ্রম-পুঁজির মধ্যেকার আপসের লাইন পুঁজিপতি শ্রেণির কাছে তাদের দর পুরোপুরি কমে যেতে দেয়নি। তাই জনসমর্থন হারালেও তাদের রাজনীতির স্রোতে ভাসিয়ে রাখার দায়িত্বটা শাসক শ্রেণিগতভাবে পুঁজিপতিরা, কর্পোরেট কোম্পানি থেকে শুরু করে তাদের মালিকানাধীন বৃহৎ সংবাদমাধ্যম অনুভব করে।
একটা দলের রাজনীতি কার স্বার্থে পরিচালিত তার ওপর নির্ভর করে কে তাকে টাকা দেবে। পুঁজিপতি শ্রেণির পক্ষের দল হলে তারা দেবে, সাধারণ মানুষের স্বার্থ নিয়ে লড়লে টাকা দেবে জনগণ। তাই দেখা যায় এস ইউ সি আই (সি)-র সমস্ত কর্মকাণ্ড পরিচালিত হয় রাস্তায় দাঁড়িয়ে কিংবা বাড়ির দরজায় দরজায় গিয়ে পাঁচ দশ টাকা চাঁদা জোগাড় করে এবং দলের সদস্য ও শুভানুধ্যায়ীদের দেওয়া চাঁদায়। এভাবে দল চালানোর ক্ষমতা বুর্জোয়া দলগুলির একেবারেই নেই। আর আজ বামপন্থী বলে পরিচিত অন্যগুলির ক্ষেত্রেও তা নিঃশেষিত।
কিন্তু মানুষকে বুঝতে হবে, ভোট রাজনীতির নামে এই জিনিস চলতে দিলে ক্ষতি তাদেরই। তাই নির্বাচনেও সমাজমুক্তির রাজনীতিটাকে ঠিক ভাবে চেনা দরকার। না হলে সর্বনাশ হবে খেটে খাওয়া মানুষেরই।