রাজ্যের অন্যান্য জেলার মতো উত্তর দিনাজপুরের চাষিদেরও নির্ধারিত দামের থেকে অনেক বেশি দিয়েই সার কিনতে হয়। নির্ধারিত মূল্যে যে সার পাওয়া যেতে পারে চাষিরা প্রায় তা ভুলতে বসেছে। এই অবস্থায় ২৪ অক্টোবর উত্তর দিনাজপুর জেলার ইটাহার ব্লকে গুলন্দর ও দুর্গাপুর অঞ্চলের দুটি সভায় যখন এআইকেকেএমএস নেতারা যখন বললেন, ন্যায্য মূল্যে সার পাওয়াটা চাষিদের অধিকার এবং তা সম্ভর যদি চাষিরা সংগঠিত ভাবে এটা দাবি করেন। স্বাভাবিক ভাবেই নেতৃত্বের এই বক্তব্যে চাষিরা তৎক্ষণাৎ রাজি হন এবং পরদিন সারের জন্য ডিলারের কাছে উপস্থিত হন। কিন্তু কালোবাজারিতে অভ্যস্ত হয়ে পড়া দোকানদার নানা অজুহাতে কৃষকদের ফিরিয়ে দেন, বলেন পরদিন সকালে আসতে।
২৬ অক্টোবর সকাল দশটার মধ্যে কৃষকরা উপস্থিত হয়ে দেখেন, সেই ডিলার তার নিজের কিছু লোকজন জড়ো করেছে, সঙ্গে রয়েছে দু’গাড়ি পুলিশ। ষড়যন্ত্র বুঝতে এআইকেকেএমএস নেতাদের অসুবিধা হয় না। কিন্তু ডিলারের আচরণে কৃষকরা উত্তেজিত হয়ে পড়েন। ততক্ষণে কৃষকদের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়ায় হাজারের কাছাকাছি। কৃষক নেতারা সকলকে নিয়ে একটি সভা করেন এবং ষড়যন্তে্রর কথা স্মরণ করিয়ে দিয়ে তাঁদের উত্তেজিত হতে না করেন। এরপর ডিলার এবং পুলিশের সঙ্গে কৃষক নেতাদের আলোচনায় ডিলার এমআরপি রেটে সার দিতে রাজি হন। সংগঠিত আন্দোলনের এই জয়ে কৃষকরা উল্লাসে ফেটে পড়েন। নেতৃত্ব দাঁড়িয়ে থেকে প্রত্যেক চাষিকে সার বিক্রি করতে ডিলারকে বাধ্য করেন। চাষিরা এই আন্দোলনকে আরও শক্তিশালী করার ঘোষণা করেন। কৃষকরা উপস্থিত নেতাকর্মীদের বারবার অনুরোধ করেন তাদের গ্রামে গ্রামে মিটিং করার জন্য। দূরের গ্রাম থেকেও চাষিরা নেতাদের ফোন করতে থাকেন তাদের এলাকায় মিটিং করার জন্য এবং গ্রামে গ্রামে ন্যায্য মূল্যে সারের দাবি সহ চাষিদের অন্য দাবিগুলি নিয়ে মিটিং চলছে। চলছে আরও বড় আন্দোলন গড়ে তোলার প্রস্তুতি। কর্মসূচিতে নেতৃত্ব দিয়েছেন তপন কুমার দাস, হবিবুর রহমান, মহিদুর রহমান, সনাতন দত্ত, জাকির হোসেন প্রমুখ।