মাধ্যমিক-উচ্চ মাধ্যমিকের ঘোষিত মূল্যায়ন পদ্ধতি অবৈজ্ঞানিকঃ এ আই ডি এস ও

মাধ্যমিক-উচ্চমাধ্যমিক ছাত্রছাত্রীদের মূল্যায়ন সংক্রান্ত সরকারি সিদ্ধান্ত প্রসঙ্গে এ আই ডি এস ও-র পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য কমিটির সম্পাদক মণিশঙ্কর পট্টনায়ক ১৯ জুন এক বিবৃতিতে বলেন, পর্ষদের এই ঘোষণা ছাত্রছাত্রীদের মেধার যথার্থ বিচারের ক্ষেত্রে ন্যূনতম বিজ্ঞানসম্মত পদ্ধতি অবলম্বন করবে না এবং স্বভাবতই শিক্ষার্থীদের হতাশ করবে। পরবর্তী স্তরে শিক্ষার সুযোগের ক্ষেত্রে যোগ্যতার বিচারে চূড়ান্ত বিশৃঙ্খলা ও অরাজকতা সৃষ্টি করবে।

প্রথমত, যে কোনও ক্ষেত্রেই ছাত্রছাত্রীদের জ্ঞানলাভের অগ্রগতির বর্তমান পরিস্থিতি নির্ধারণ যদি ২ বছর বা ৩ বছর আগের পড়াশুনার মানের ভিত্তিতে হয়, তাহলে তা হয় ছাত্রছাত্রীদের প্রতি একটি চূড়ান্ত অবিচার। অথচ পর্ষদের পক্ষ থেকে এই পদ্ধতিটিকেই অতিরিক্ত গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে। এটি একটি অবৈজ্ঞানিক ও অমানবিক পদক্ষেপ।

দ্বিতীয়ত, অসন্তুষ্ট পরীক্ষার্থীদের জন্য পরে অফলাইনে পরীক্ষার কথা বলা হয়েছে। যদিও এই সিদ্ধান্ত আমাদের সংগঠনের দেওয়া ‘পরিস্থিতিকে নিয়ন্ত্রণে আনার উপযুক্ত ভূমিকা গ্রহণ করে ক্লাসরুম পরীক্ষার’ প্রস্তাবকে প্রকারান্তরে গ্রহণ করেছে, কিন্তু এমনভাবে গ্রহণ করা হল, যা ছাত্রছাত্রীদের মানসিক অবসাদের ও হতাশার দিকে ঠেলে দেবে। কারণ অফলাইন পরীক্ষা যারা দিতে চাইবে, তারা যখন দেওয়ার সুযোগ পাবে, তখন এই শিক্ষাবর্ষ চালু হয়ে যাবে এবং সেই শিক্ষাবর্ষে অফলাইন পরীক্ষার্থীরা ভর্তি হতে পারবে কিনা তার কোনও নিশ্চয়তানেই। ফলে কেউ পরীক্ষা দিতে চাইলে তার একটি শিক্ষাবর্ষ নষ্ট হয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। স্বভাবতই শিক্ষাবর্ষ নষ্ট হয়ে যাওয়ার ভয়ে তারা পর্ষদের বর্তমান মূল্যায়নকেই মেনে নিতে বাধ্য হবে। যা চূড়ান্ত অমানবিক।

আমরা সরকারের কাছে দাবি জানিয়ে আসছি, ছাত্রছাত্রীদের উপযুক্ত সতর্কতার দায়িত্ব গ্রহণ করে সীমিত পরিসরে তারা ক্লাসরুম পরীক্ষা গ্রহণ করুক। আমরা আবারও দাবি করছি, সরকার এই দায়িত্ব অস্বীকার না করে লক্ষ লক্ষ ছাত্রছাত্রীর ভবিষ্যতের প্রতি দায়িত্বশীল হয়ে তাদের বর্তমান প্রস্তুতির মূল্যায়ন করার উপযুক্ত পরীক্ষার ব্যবস্থা করুক।

গণদাবী ৭৩ বর্ষ ৩৬ সংখ্যা