Breaking News

বিজেপি জমানায় এই কি কৃষকদের ‘আচ্ছে দিন’

বিজেপি শাসিত রাজস্থান, মহারাষ্ট্র ও গুজরাটের কৃষকরা কেমন আছেন? মোদি সরকার কেমন ‘আচ্ছে দিন’ এনেছে চাষিদের জীবনে?

ফসলের ন্যায্য দাম পাচ্ছেন না চাষিরা, চাষের উপকরণ বীজ–সার– কীটনাশক কিনতে হচ্ছে চড়া দামে, অতিফলন কিংবা অল্পফলন দুইয়েই চাষি লোকসানের মুখে পড়ছেন৷ আত্মহত্যার পথে যেতে বাধ্য হচ্ছেন অনেকেই৷ অথচ বিমা ব্যবসায়ীদের মুনাফা বাড়ানোর জন্য ‘প্রধানমন্ত্রী ফসল বিমা যোজনা’ করে চাষিদের স্বার্থ দেখবার প্রতিশ্রুতি বিলানো চলছে৷

চাষের জমি কেড়ে নেওয়ার প্রতিবাদে রাজস্থানের কৃষকরা গর্ত খুঁড়ে তাতে অর্ধশায়িত অবস্থায় প্রতিবাদ জানাচ্ছেন৷ জয়পুরের নিন্দার গ্রামে একটি হাউজিং প্রকল্পের জন্য চাষিদের ১৩০০ বিঘা জমি জোর করে কেড়ে নেওয়ার প্রতিবাদে এবং যথেষ্ট ক্ষতিপূরণের আশ্বাস না পাওয়ায় প্রতিবাদে সামিল হয়েছেন তাঁরা৷ রাজস্থানের বিজেপি সরকারের জমি অধিগ্রহণের বিরুদ্ধে নদীগর্ভে কবর খুড়ে তার মধ্যে গলা পর্যন্ত ডুবিয়ে শয়ে শয়ে প্রতিবাদকারী প্রতিবাদ জানান৷ এই প্রতিবাদ ২০ অক্টোবর ১৯ দিনে পৌঁছয়৷

মহারাষ্ট্রে বিদর্ভ অঞ্চলের চাষিরা জমিতে চাষ করার জন্য কীটনাশক ব্যবহার করতে গিয়ে ভয়ঙ্কর বিষে আক্রান্ত হচ্ছেন, ইতিমধ্যেই মারা গেছেন ৩৪ জন৷ প্রতি বছর তীব্র জলসংকটে ভয়ঙ্কর ক্ষতিগ্রস্ত হন এই অঞ্চলের চাষিরা৷ এ বছর তার সঙ্গে যুক্ত হয়েছে নতুন সংকট৷ গত বছরেও কীটনাশকের বিষে আক্রান্ত হয়েছিলেন বহু চাষি, কিন্তু সরকারের পক্ষ থেকে কোনও পদক্ষেপ নেওয়া দূরের কথা, এটা উপেক্ষা করা হয়েছে৷ গত ১৬ বছরে কৃষি সংকটে জর্জরিত ১৪ হাজার চাষি আত্মহত্যা করতে বাধ্য হয়েছেন মহারাষ্ট্রে৷

প্রধানমন্ত্রী এবং বিজেপি সভাপতি অমিত শাহ কর্তৃক বহুল প্রচারিত ‘মডেল’ গুজরাটে কৃষকদের মজুরি দেশের মধ্যে সবচেয়ে কম, মহিলা ও পুরুষ উভয় ক্ষেত্রেই৷ কেন্দ্রীয় সরকারের গ্রামীণ উন্নয়ন মন্ত্রকের জুলাই ২০১৭’–র রিপোর্ট অনুযায়ী, কৃষি মজুরদের সম্পর্কে এমনই তথ্য প্রকাশিত হয়েছে৷ দেশের ১৫টি প্রধান রাজ্যের মধ্যে গুজরাটের অবস্থা শোচনীয়৷ পুরুষদের দিনে ২২৩ টাকা, মহিলাদের ২০২ টাকা৷ রিপোর্টে এও জানা গেছে, বিহার–আসাম–পশ্চিম তুলনায় গুজরাটে কৃষি শ্রমিকদের মজুরি নিম্ন, কেরালায় যা সর্বোচ্চ৷ পুরুষ ও মহিলা শ্রমিকদের মধ্যে মজুরি বৈষম্যও তীব্র৷

সরকারের ঢাকঢোল পেটানো ‘১০০ দিনের কাজ প্রকল্প–এনরেগা’ অনুযায়ী যা প্রাপ্য কৃষি শ্রমিকদের, তার ধারেকাছেও পঁৌছনোর কোনও তৎপরতা সরকারের নেই৷ উল্টেএই প্রকল্পে বরাদ্দ ব্যাপক কাটছাঁট করেছে কেন্দ্রীয় সরকার৷ পুরুষ ও মহিলা শ্রমিকদের মধ্যে মজুরি বৈষম্যে প্রশ্ণ উঠেছে, সরকারেরই করা ‘মিনিমাম ওয়েজ অ্যাক্ট’ কার্যকরী হচ্ছে না কেন? তা কি শুধুই লোকদেখানো?

বিজেপি নেতাদের কৃষক দরদ যে শুধুই মুখের বুলি, তা রাজ্যে রাজ্যে কৃষকদের দুর্দশায় স্পষ্ট৷