পাঠকের মতামতঃ গণদাবী শত্রু-মিত্র চেনাচ্ছে

গণদাবীতে ‘শাসক দলের রাজনীতির কাছে বিরোধীদের নির্লজ্জ আত্মসমর্পণ’ শীর্ষক লেখাটি (৭৭ বর্ষ ৪৪ সংখ্যা) খুবই ভাল হয়েছে।

বিগত কয়েকটি সংখ্যা ধরে বিশেষত পহেলগাঁও ঘটনার পর ভারত ও পাকিস্তানের কৃত্রিম যুদ্ধের মহড়া এবং তাকে কেন্দ্র করে দেশের অভ্যন্তরে মুসলিম বিদ্বেষ সৃষ্টি এবং সর্বোপরি সংসদীয় বিরোধী দলগুলির দেশপ্রেমিক সাজতে শাসক দলের কাছে নির্লজ্জ আত্মসমর্পণ– বিষয়গুলি নিয়ে ধারাবাহিকভাবে যে প্রবন্ধগুলি লেখা হয়েছে, তাতে সাধারণ মানুষের কাঠগড়ায় বিজেপিকে তুলে ধরে রীতিমতো চাবকানো হয়েছে এবং সাথে সাথে বিরোধী দলগুলোর বিরোধী ভূমিকার আলখাল্লাটাকে টেনে ছিঁড়ে ফেলে একেবারে বেআব্রু করে দেওয়া হয়েছে। বাইরে প্রচারমাধ্যমের ঢক্কানিনাদ যতই শাসকদলের প্রচারের লক্ষ্যকে সামনে তুলে ধরার চেষ্টা করুক না কেন, গণদাবীর প্রবন্ধগুলি চাঁচাছোলা ভাষায় অভিমুখটাকে ঘটনার মূল বাস্তবতায় টেনে নিয়ে আসে। মূল বিষয়টা ছিল পহেলগাঁওয়ে পর্যটক হত্যা ও সন্ত্রাসবাদ। সরকারের কোনও পদক্ষেপই এর উপরে আলোকপাত তো করেইনি, বরং উগ্র দেশপ্রেম ও সাম্প্রদায়িক জিগির তুলে প্রকৃত ঘটনাকে চাপা দিতে চেয়েছে। বিরোধী দলগুলিও তাদের ভোটের রাজনীতির স্বার্থে মূল প্রশ্নগুলো এড়িয়ে গিয়ে শাসকদের কাছে আত্মসমর্পণ করল। মেকি কমিউনিস্ট সিপিএমও এই গভীর সংকটের মুহূর্তে শোষিত শ্রমজীবী মানুষের পাশে না দাঁড়িয়ে একই সুরে গলা মেলাল। সেখানে গণদাবী তার প্রবন্ধগুলির মধ্য দিয়ে শোষিত মানুষের স্বার্থকে যুক্তির প্রখরতায় তুলে ধরেছে। এটাই একটা বিপ্লবী দলের মুখপত্রের কাজ। একদিন বিপ্লবী মুখপত্রই মার্ক্সের সাথে এঙ্গেলসকে, লেনিনের সাথে স্ট্যালিনকে যথার্থ শ্রেণিচেতনায় মিলিয়েছিল। আশা করি, তেমনই একদিন এই পথেই এ দেশের শ্রমজীবী শোষিত মানুষ আন্দোলনের শ্রেণিচেতনায় চিনে নেবে তাদের বিপ্লবী মুখপত্র এবং তার দলকে।

তপন চক্রবর্তী, বেহালা

এই লেখাটি গণদাবী ৭৭ বর্ষ ৪৫ সংখ্যা  ২০ – ২৬ জুন ২০২৫ এ প্রকাশিত