জাতীয় শিক্ষানীতির কৃপায় প্রাপ্ত অবাঞ্ছনীয় উপহার হিসেবে শিক্ষাক্ষেত্রে পাওয়া অনেক বদলের মধ্যে ডাক্তারিতে ভর্তির পরীক্ষা ‘নিট ইউজি’-র নতুন কিছু নিয়মও তাই।যেমন সিলেবাস থেকে বেশ কিছু চ্যাপ্টার, টপিক বাদ যাওয়া, প্রশ্নপত্রে আবশ্যিক এবং ঐচ্ছিক বিভাগ ইত্যাদি। সদ্য প্রকাশিত একটি নিয়ম অনুযায়ী উচ্চমাধ্যমিক স্তরে কোনও শিক্ষার্থীর জীববিদ্যা না থাকলেও সে নিট পরীক্ষা দিতে পারবে। কেউ যদি একাদশ-দ্বাদশ শ্রেণিতে জীববিদ্যা না পড়ে থাকে, তার মানে সেই বিষয় পড়ার ইচ্ছা তার নেই বা তার ভাল লাগে না অথবা সে এই বিষয়ে অত্যন্ত কাঁচা। যদি কেউ জীববিদ্যাই পছন্দ না করে সে কী ভাবে ডাক্তারি পড়বে? সেখানে তো সব বিষয়গুলিই জীববিদ্যার বিভিন্ন শাখা।
সন্তানকে নিয়ে অতি উচ্চাকাঙক্ষা করা পরিবারের অভাব ভারতে এমনিতেই নেই। তাদের চাপে পড়ে নিট অথবা ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের প্রবেশিকা জয়েন্ট এন্ট্রান্স পরীক্ষার প্রস্তুতি নিতে গিয়ে আত্মহত্যার খবর প্রায়ই শোনা যায়। সেখানে এই ধরনের নিয়ম এই রকম শিক্ষার্থীদের খবরের হার বাড়াবে না কি? এই শিক্ষার্থীরা যখন নিট উত্তীর্ণ হয়ে ডাক্তারি পড়তে যাবে তখন কলেজে ‘থ্রি-ইডিয়েটস’ সিনেমার ফারহানদের সংখ্যা ক্রমেই বাড়বে। একটা প্রজন্মের বহুজনের মানসিক অসুস্থতার কারণ হয়ে দাঁড়াতে পারে এই একটি নিয়ম। কিছু সংবাদমাধ্যম বলছে যে, কিছু সংখ্যক শিক্ষার্থী নাকি অনেক আগে থেকেই এমন নিয়ম চায়। শিক্ষার্থীরা চায়, না তাদের পরিবার চায়?
একদল শিক্ষার্থীর পরিবার এখন চায় ‘সব পরীক্ষাই দিয়ে দেখি যেটায় লেগে যাবে সেটায় ভর্তি হব’ অর্থাৎ ডাক্তারির মতো মানুষের জীবনের সঙ্গে যুক্ত একটা বিষয় নিয়ে তাদের বিশেষ আগ্রহ নেই। এটা নিছক একটা টাকা রোজগারের ছাড়পত্র! আর এ সবেরও শেষে আমার মতো একজন সাধারণ শিক্ষার্থীর মনে এই সন্দেহটিও জাগে যে নিটের অ্যাপ্লিকেশন ফি পরীক্ষার্থী এই নিয়মটি নিটের আবেদনকারীর সংখ্যা বাড়ানোর কোনও ফন্দি নয়তো? উল্লেখ্য, নিটের ফি কিন্তু নেহাত কম নয়।
পল্লবী নস্কর, বাঁশদ্রোণী, কলকাতা