কলকাতা মেডিকেল কলেজের ছাত্র সংসদ নির্বাচনকে কেন্দ্র করে রাজ্য সরকারের স্বৈরাচারী রূপ আবারও একবার প্রকাশ্যে এল। দীর্ঘদিন ধরে ছাত্র সংসদ নির্বাচনের দাবিতে দফায় দফায় ছাত্র আন্দোলন চলছিল, যে আন্দোলনের অংশীদার এআইডিএসও কর্মীরাও। আন্দোলনের চাপে কলেজ কর্তৃপক্ষ ২২ ডিসেম্বর ছাত্র সংসদ নির্বাচনের দিন ধার্য করে। কিন্তু ৫ ডিসেম্বর কলেজ কাউন্সিলের মিটিং চলার সময় জানানো হয় ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নির্দেশে অনির্দিষ্টকালের জন্য নির্বাচন স্থগিত করা হচ্ছে। রাজ্য সরকারের এই নির্দেশ কলেজের স্বায়ত্তশাসনের উপরে একটা মারাত্মক আঘাত।
বিজেপির হাতের পুতুল ন্যাশনাল মেডিকেল কমিশনের দেখানো পথে দীর্ঘদিন ধরেই তৃণমূল সরকার ক্রমশ মেডিকেল কলেজগুলির স্বাধিকার খর্ব করছে। একমাত্র এআইডিএসও ছাড়া সমস্ত ছাত্র সংগঠন এ ব্যাপারে নীরব। ২০১২ সালে এসএসকেএম মেডিকেল কলেজে (আইপিজিএমআর) একই কায়দায় এআইডিএসও-র হাতে পরাজয়ের আশঙ্কায় তৃণমূল সরকার ছাত্র সংসদ নির্বাচন বানচাল করেছিল। পঞ্চায়েত নির্বাচনের আগে রাজ্যের ঐতিহ্যবাহী মেডিকেল কলেজে পরাজিত হয়ে ভাবমূর্তি হারানোর আশঙ্কায় তারা একই কায়দার আশ্রয় নিচ্ছে।
স্বভাবতই প্রচণ্ড ক্ষুব্ধ ছাত্রছাত্রীরা ৫ ডিসেম্বর থেকেই কর্তৃপক্ষকে ঘেরাও করে রাখে। পরদিন সকাল থেকে দফায় দফায় সরকারের ধামাধরা নার্স, কর্মচারী সংগঠন এবং তৃণমূল আশ্রিত দুষ্কৃতীরা হাসপাতালের পরিষেবায় বিঘ্ন ঘটার হাস্যকর অজুহাত তুলে আন্দোলন ভাঙতে চেষ্টা করে। সরকারের ধামাধরা মিডিয়া আন্দোলনের বিরুদ্ধে প্রচার চালাতে থাকে। কিন্তু তাতে আন্দোলন ভাঙা যায়নি। শেষপর্যন্ত ৫ জন ছাত্র অনশনে বসেছে এবং বাকিরা অবস্থান চালিয়ে যাচ্ছে। এআইডিএসও মেডিকেল কলেজ ইউনিটের ছাত্ররা আগাগোড়া আন্দোলনের সাথে যুক্ত রয়েছেন। শেষ পাওয়া খবর, একজন ছাত্র ইতিমধ্যে আশঙ্কাজনক অবস্থায় হাসপাতালে ভর্তি হয়েছে।
এআইডিএসও-র দাবি রাজ্য সরকার মেডিকেল কলেজগুলির স্বায়ত্তশাসনের উপর হস্তক্ষেপ বন্ধ করুক এবং অবিলম্বে ছাত্রদের দাবি মেনে নিয়ে ছাত্র সংসদ নির্বাচন ঘোষণা করুক। আন্দোলনকারী ছাত্রদের কোনও স্বাস্থ্যহানি ঘটলে তার জন্য দায়ী সম্পূর্ণ থাকবে রাজ্য সরকারের।