রাজ্য স্বাস্থ্য দপ্তরের অধীনে সিএইচজি, টিডি, লিংকম্যান ও ভ্যাকসিন ক্যারিয়াররা কাজ করেন। গ্রামীণ এলাকায় যখন কোনও স্বাস্থ্য পরিষেবার ব্যবস্থা ছিল না সে সময় কেন্দ্র ও রাজ্য সরকারের যৌথ উদ্যোগে গ্রামেরই কিছু বেকার যুবকদের গ্রামীণ স্বাস্থ্য পরিষেবার কাজে নিয়োগ করা হয়। তাঁদের নাম দেওয়া হয় কমিউনিটি হেলথ গাইড বা সিএইচজি। তাঁদের হাতে কিছু প্রাথমিক ওষুধপত্র দিয়ে গ্রামের স্বাস্থ্য পরিষেবা সচল রাখা হত। বর্তমানে তাঁদের বেতন/ভাতা দেওয়া হয় মাত্র ৪০০ টাকা।
গ্রামীণ এলাকায় গর্ভবতী মায়েদের বাড়িতে প্রসব কালে মা ও শিশুর মৃত্যুর হার দ্রুত বেড়ে যাচ্ছিল। এই সমস্যার সমাধানে নিরাপদ প্রসবের জন্য গ্রামের কিছু মহিলাকে ধাত্রীবিদ্যার প্রাথমিক ট্রেনিং দিয়ে প্রশিক্ষিত দাই হিসাবে নিয়োগ করা হয়। নাম দেওয়া হয় টিডি। এখন তাঁদের ভাতা দেওয়া হয় মাত্র ৫৫০ টাকা।
কেন্দ্রীয় সরকার দেশে জন্মহার কমানোর উদ্দেশ্যে পরিবার পরিকল্পনা কর্মসূচি রূপায়ণের জন্য গ্রামেরই পুরুষ-মহিলাদের লিংকম্যান হিসাবে নিয়োগ করে। তাঁদের কাজ গ্রামীণ এলাকার সক্ষম দম্পতিদের বুঝিয়ে বন্ধ্যাত্বকরণের উৎসাহ দেওয়া এবং ক্যাম্পে নিয়ে গিয়ে বন্ধ্যাত্বকরণ করানো। এই কাজের জন্য বর্তমানে দেওয়া হয় মাত্র ১৫০ টাকা। এরপর নিয়োগ হল ভ্যাকসিন ক্যারিয়ার। এঁদের কাজ গ্রামীণ এলাকায় ভ্যাকসিন বক্স পরিবহন। এঁদের দৈনিক দেওয়া হয় ৯০ টাকা!
রাজ্য স্বাস্থ্যদপ্তরের অধীন এই চার ধরনের ক্যাডারের অবস্থা অত্যন্ত শোচনীয়। এঁদের সরকার যা দেয় তা দিয়ে এক সপ্তাহের খাদ্যটুকুও সংগ্রহ করা যায় না। এঁরা সবাই অতি দক্ষ কর্মীর আওতায় পড়েন। রাজ্য সরকারের মজুরিনীতি অনুযায়ী এঁদের দৈনিক মজুরি ৪৭৩ টাকা হওয়া উচিত।
বেতন/ভাতা বৃদ্ধি সহ নূ্যনতম পেনশনের দাবিতে ৯ জানুয়ারি সল্টলেকের স্বাস্থ্যভবনে এই কর্মীরা বিক্ষোভ দেখান। নেতৃত্ব দেন পশ্চিমবঙ্গ আশা কর্মী ইউনিয়নের সভানেত্রী কৃষ্ণা প্রধান, শ্রমিক সংগঠন এ আই ইউ টি ইউ সি রাজ্য কমিটির সদস্য বিপুল ঘোষ ও নিখিল বেরা।
তাঁদের দাবি, সিএইচজি, টিডি, লিংকম্যানদের মাসিক ১২ হাজার টাকা ও ভ্যাকসিন ক্যারিয়ারদের দৈনিক ৫০০ টাকা মজুরি সহ সারা মাস কাজ, ন্যূনতম পেনশন, তিন লক্ষ টাকা অবসরকালীন ভাতা এবং কর্মীদের ক্যাডারভিত্তিক ইউনিফর্ম দিতে হবে।