এস ইউ সি আই (কমিউনিস্ট)-এর রাজ্য সম্পাদক চণ্ডীদাস ভট্টাচার্য রাজ্যে পঞ্চায়েত নির্বাচনকে সুষ্ঠু ও অবাধ করার দাবি জানিয়ে ১২ জুন রাজ্যের নির্বাচন কমিশনার রাজীব সিনহাকে একটি চিঠি দেন। চিঠিতে তিনি বলেন,
আগামী ত্রিস্তরীয় পঞ্চায়েত নির্বাচনের নির্ঘন্ট যে ভাবে ঘোষিত হয়েছে তা আমাদের বিস্মিত করেছে। ৯-১৫ জুন অর্থাৎ ১১ জুন রবিবার বাদ দিলে ৬ দিন এবং গড়ে প্রত্যহ ৪ ঘন্টা হিসাবে মোট ২৪ ঘন্টায় কয়েক লক্ষ প্রার্থীকে মনোনয়নের জন্য সময় দেওয়া হয়েছে। অথচ ঘোষণার পর দেখা গেছে বিডিও-এসডিও অফিস মনোনয়ন পত্র জমার কাজে প্রস্তুত নয়। বহু জেলায় প্রার্থীদের ফিরে যেতে হয়েছে। ফলে ঘোষিত কার্যকরী সময় পূর্ণ সদ্ব্যবহার সম্ভব হয়নি। মনোনয়ন পত্র জমা দেওয়াতে জেলায় জেলায় শাসক দলের গুন্ডাদের বাধার ফলে সংঘর্ষ চলছে, অস্ত্র হাতে বিডিও চত্বরে তাদের দেখা যাচ্ছে এবং ইতিমধ্যে একজনের প্রাণহানি ঘটেছে। এই অবস্থায় পঞ্চায়েত নির্বাচন অতীতের মতোই প্রহসনে পরিণত হতে চলেছে বলে আমাদের আশঙ্কা।
এই পরিপ্রেক্ষিতে আমাদের দাবি–
১) মনোনয়ন জমা দেওয়ার সময়সীমা আরও এক সপ্তাহ বাড়াতে হবে,
২) ডিএম দপ্তরে, রাজ্য নির্বাচন কমিশনের দপ্তরে এবং অনলাইনে মনোনয়ন জমা দেওয়ার ব্যবস্থা করতে হবে,
৩) সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণভাবে মনোনয়ন জমা দেওয়ার জন্য পর্যাপ্ত পুলিশের ব্যবস্থা করতে হবে,
৪) সিভিক পুলিশ ও অস্থায়ী কর্মীদের নির্বাচন পরিচালনার কোনও কাজে ব্যবহার করা চলবে না, ৫) ভোটকর্মীদের উপযুক্ত নিরাপত্তার ব্যবস্থা করতে হবে যাতে গত বছরের মতো নির্বাচন পরিচালনার দায়িত্ব পালন করতে গিয়ে কাউকে প্রাণ না দিতে হয়,
৬) বিরোধীরা যাতে শান্তিপূর্ণভাবে নির্বাচনী প্রচার করতে পারে তার জন্য ব্যবস্থা সুনিশ্চিত করতে হবে,
৭) ভোটের দিনে ভোটাররা যাতে শান্তিপূর্ণভাবে মতদান করতে পারে তার জন্য যথেষ্ট নিরাপত্তার ব্যবস্থা করতে হবে ও গোটা নির্বাচনে যাতে নিরপেক্ষতা বজায় থাকে তা সুনিশ্চিত করতে হবে।
ক্যানিংয়ে মনোনয়ন দাখিলে বাধা তৃণমূলের
১২ জুন দক্ষিণ ২৪ পরগণায় ক্যানিং বিডিও অফিসে গোপালপুর ও নিকারিঘাটা গ্রাম পঞ্চায়েতের ১৬ জন এসইউসিআই(সি) প্রার্থী মনোনয়ন জমা দিতে গেলে তৃণমূল আশ্রিত গুন্ডারা অফিসের মধ্যে পুলিশের উপস্থিতিতে তাঁদের কাগজপত্র কেড়ে নিয়ে ছিঁড়ে ফেলে এবং মারধর করে বের করে দেয়। পুলিশ কোনও হস্তক্ষেপ করেনি। বিডিওকে জানালে তিনি আবার মনোনয়ন জমা দিতে বলেন। দ্বিতীয়বার প্রার্থীরা বিডিও অফিসে মনোনয়ন দিতে গেলে তৃণমূলের আরও বড় গুন্ডাবাহিনী আক্রমণ করে এবং প্রার্থী আজিজুল শেখকে ব্যাপক মারধর করে।
তাঁকে হাসপাতালে ভর্তি করতে হয়। দলের কর্মী রনি আখন্দকে মারধর করে তাঁর মোবাইল কেড়ে নেয়। পুলিশ, বিডিও, এসডিও-কে বারবার জানানো সত্ত্বেও তাঁরা কোনও ব্যবস্থা নেননি। দলের ক্যানিং সাংগঠনিক জেলা সম্পাদক কমরেড বাদল সরদার এর তীব্র নিন্দা করে দাবি জানান, অবিলম্বে দলের সকল প্রার্থীর মনোনয়ন দাখিলের ব্যবস্থা প্রশাসনকে করতে হবে।