সন্দেশখালিতে শাহজাহান এবং তার শাগরেদদের সন্ত্রাস, তোলাবাজি, নারীনিগ্রহ সহ নানা কুকর্মের প্রতিবাদে এবং সেখানকার প্রতিবাদী নাগরিকদের পাশে থাকার অঙ্গীকার নিয়ে ১৫ ফেব্রুয়ারি কলকাতায় রানুচ্ছায়া মঞ্চে অনুষ্ঠিত হল সংহতি সভা। মানবাধিকার সংগঠন সিপিডিআরএস সহ অধ্যাপক-আইনজীবী-চিকিৎসক সংগঠন, সামাজিক-সাংস্কৃতিক গোষ্ঠীগুলি এই সভায় মিলিত হয়। রাজ্যের বিশিষ্ট সমাজকর্মী, মানবাধিকার আন্দোলনের নেতৃত্ব, শিক্ষাবিদ, বুদ্ধিজীবী, শিল্পী সাংস্কৃতিক কর্মীরা সভায় বক্তব্য রাখেন। অধ্যাপক সুজাত ভদ্র, প্রাক্তন অ্যাডভোকেট জেনারেল বিমল চ্যাটার্জী, অধ্যাপিকা মিরাতুন নাহার, বিশিষ্ট নাট্যব্যক্তিত্ব কৌশিক সেন, সঙ্গীত শিল্পী পল্লব কীর্তনীয়া, ঋদ্ধি সেন, বিশিষ্ট সাংবাদিক দিলীপ চক্রবর্তী, বিশিষ্ট সাংবাদিক অর্ক ভাদুড়ি সহ প্রত্যেকেই তাঁদের বক্তব্যে সন্দেশখালি সহ রাজ্য জুড়ে বেড়ে চলা অন্যায়-অত্যাচারের প্রতিবাদে দাঁড়ানোর, রাস্তায় নামার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন। সুজাত ভদ্র প্রস্তাব দেন, সন্দেশখালিতে গিয়ে গণশুনানি করা হোক। সভায় উপস্থিত সকলেই তা সমর্থন করেন।
বিশিষ্ট নাট্যব্যক্তিত্ব কৌশিক সেন বলেন, ক্ষমতার অলিন্দে থাকা রাজনীতিকদের চাপে নাগরিকদের প্রতিবাদ করার জায়গাটা ক্রমশ সংকুচিত হয়ে আসছে। আমরা শিল্পী। তাই শিল্পের মাধ্যমে প্রতিবাদ করতে হয় আমাদের। বলেন, ছোটবেলায় বাবা-দাদাদের মুখে শুনেছি বরানগর, কাশীপুরে বহু বামপন্থী কর্মী কংগ্রেসের হাতে খুন হয়েছিল। তা হলে কোন মন্ত্রবলে কংগ্রেস সাংঘাতিক বন্ধু হয়ে গেল সিপিএমের? কোন কংগ্রেস? যারা এমার্জেন্সি, শিখ দাঙ্গার মতো ভয়াবহ ঘটনা ঘটিয়েছিল। তিনি বলেন, সন্দেশখালি নিয়ে যখন নাগরিকরা প্রতিবাদ করছেন, তখন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী স্মৃতি ইরানির ভয়ঙ্কর উক্তি—ওখানে ‘হিন্দু’ নারীদের উপর নির্যাতন করা হয়েছে। নারীর মর্যাদা, নারী নির্যাতন এই কথাগুলির গুরুত্ব তাদের কাছে নেই।
তৃণমূলের দিকে আঙুল তুলে তিনি বলেন, আপনি এবং আপনার শাগরেদরা সাম্প্রদায়িকতার বিরুদ্ধে রাজ্যবাসীকে লড়তে দিচ্ছেন না। আপনারা চুরি-দুর্নীতি করে এবং দুষ্কৃতীরাজ কায়েম করে ‘দায়িত্ব’ নিয়ে এই আন্দোলনকে পিছিয়ে দিচ্ছেন। তিনি বলেন, আমৃত্যু আমি এই ভেবে গর্ব বোধ করব যে সিঙ্গুর-নন্দীগ্রাম আন্দোলনে আমি যুক্ত ছিলাম।
মিরাতুন নাহার বলেন, শাসকরা বিরোধীদের সঙ্গে কাদা ছোঁড়াছুড়ি করবে, আর বিরোধীরা শাসকের ত্রুটি ধরে রাজনৈতিক স্বার্থে কাজে লাগানোর চেষ্টা করবে, শুধু এই-ই চলবে, নাকি জনস্বার্থ নিয়ে দলগুলি ভাববে? ঋদ্ধি সেন বলেন, বহু অনুষ্ঠান-উদ্বোধনে মুখ্যমন্ত্রী যাচ্ছেন, কিন্তু সন্দেশখালিতে তিনি যেতে পারলেন না। দিলীপ চক্রবর্তী বলেন, আমরা সিঙ্গুর-নন্দীগ্রামের আন্দোলনে ছিলাম, এই আন্দোলনেও আছি।