রাজ্যের শিক্ষানীতি কেন্দ্রীয় নীতিরই কার্বন কপি

রাজ্যের নতুন শিক্ষানীতির বিরুদ্ধে মেদিনীপুর শহরে ছাত্রবিক্ষোভ। ৯ সেপ্টেম্বর

রাজ্যের তৃণমূল কংগ্রেস সরকারের শিক্ষানীতির বিরুদ্ধে তীব্র প্রতিবাদ জানিয়ে এস ইউ সি আই (কমিউনিস্ট)-এর রাজ্য সম্পাদক চণ্ডীদাস ভট্টাচার্য ৯ সেপ্টেম্বর এক বিবৃতিতে বলেন, রাজ্য সরকার কেন্দ্রের বিজেপি সরকারের জাতীয় শিক্ষানীতির বিরোধিতার বাগাড়ম্বর করে এবং রাজ্যের শিক্ষানীতি তৈরি করার জন্য দুটি কমিটি গঠনের পর যা ঘোষণা করেছে, তা ভাষার সামান্য হেরফের ছাড়া জাতীয় শিক্ষানীতি ২০২০-র কার্বন কপি ছাড়া আর কিছু নয়।

শৈশবে দু-বছর অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রে পড়ার পর, প্রাথমিক স্তরের বুনিয়াদি শিক্ষাকে ‘দক্ষ বাংলা’ নামে প্রচার করার কথা এতে বলা হয়েছে। অথচ বাস্তবে শিশুদের প্রাক-প্রাথমিক ও প্রাথমিক শিক্ষাকে উন্নত করার জন্য উপযুক্ত কোনও পরিকাঠামো গড়ে তোলার প্রস্তাব এই শিক্ষানীতিতে নেই। এই শিক্ষানীতিতে পঞ্চম থেকে অষ্টম শ্রেণিতে দ্বিতীয় ভাষা হিসাবে ইংরেজি বাধ্যতামূলক না করে বাস্তবে কেন্দ্রীয় সরকারের হিন্দি চাপানোর ষড়যন্ত্রকেই সাহায্য করা হবে। তা ছাড়া, অষ্টম শ্রেণি থেকে সেমিস্টার প্রথা চালু করার ফলে শিক্ষার বনিয়াদ দুর্বল হবে। প্রতিশ্রুতি দেওয়া সত্ত্বেও স্কুলস্তরে পাশ-ফেল প্রথা চালু করার কোনও প্রস্তাবও এতে নেই। অনলাইন, ডিজিটাল ও মিশ্র পদ্ধতির উপর জোর দিয়ে গরিব ছাত্রদের শিক্ষার সুযোগ কেড়ে নেওয়া হচ্ছে এবং শিক্ষক নিয়োগের দায়ও ঝেড়ে ফেলা হচ্ছে। কর্মমুখী শিক্ষার নামে মৌলিক শিক্ষার সুযোগকে নষ্ট করা হচ্ছে। দুর্বল পরিকাঠামোর স্কুলগুলির উন্নতি না করে কয়েক কিলোমিটার ব্যাসার্ধের মধ্যে থাকা স্কুলগুলির পরিকাঠামোয় সবার অংশীদার হওয়ার কথার দ্বারা চরম নৈরাজ্য সৃষ্টি করা হবে। আগে থেকেই রাজ্য সরকার পরিকাঠামো তৈরি না করে চার বছরের ডিগ্রি কোর্স চালু করেছে। বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের তথাকথিত উন্নতির উদাহরণ দিয়ে শিক্ষার বেসরকারিকরণ ও বাণিজ্যিকীকরণকে উৎসাহ দেওয়া হয়েছে।

আমরা অবিলম্বে এই সর্বনাশা শিক্ষানীতি প্রত্যাহার করার দাবি করছি। পাশাপাশি বিশ্ববিদ্যালয়গুলিতে উপাচার্য নিয়োগকে কেন্দ্র করে যে অভূতপূর্ব পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে, তার বিরুদ্ধে ১৪ সেপ্টেম্বর কলকাতা ও শিলিগুড়িতে বিক্ষোভ মিছিলে সামিল হওয়ার জন্য শিক্ষানুরাগী জনসাধারণকে আহ্বান জানাচ্ছি।