‘‘মালিক-মজুরের মধ্যে চলছে প্রতিনিয়ত সংঘর্ষ। অর্থনীতির ক্ষেত্রে লেবার এবং ক্যাপিটালের, (শ্রম ও পুঁজির) গ্রোয়িং প্রোডাক্টিভ ফোর্স (ক্রমবর্ধমান উৎপাদিকা শক্তি) আর এগজিস্টিং প্রোডাকশন রিলেশনের (প্রচলিত উৎপাদন সম্পর্কের) মধ্যে যে অ্যান্টাগনিস্টিক দ্বন্দ্ব (বিরোধাত্মক দ্বন্দ্ব), এই দ্বন্দ্বের থেকে সমাজচেতনায়, সমাজের ভাবগত উৎপাদনের ক্ষেত্রে সমাজ বিপ্লবের ধারণার সৃষ্টি হচ্ছে। সেই ধারণা আকাশে ঘুরে বেড়ায় না। সঙ্গে সঙ্গেই পারসোনিফায়েড (ব্যক্তিকৃত) হচ্ছে এই সমাজের কতকগুলো শিক্ষিত মানুষের মধ্যে। শিক্ষিত মানুষগুলো যে কোনও অবস্থায় থাকুক না কেন, তারা বুঝতে পারে এবং ফিল করতে পারে যে, আমি এক্সপ্লয়েটেড ও হিউমিলিয়েটেড (অপমানিত) কন্ডিশনে রয়েছি। আমার বিবেক, মনুষ্যত্ব পদদলিত হচ্ছে। আমার মধ্যে যে মানুষটা রয়েছে, সে মাথা উঁচু করে তার স্বাভাবিক বিকাশের রাস্তা পাচ্ছে না। এই উপলব্ধির জন্য দর্শন, বিজ্ঞান, ইতিহাস, অর্থনীতির জ্ঞান থাকা দরকার।
আবার এদের ডি-ক্লাসড (শ্রেণিচ্যুত) হতে হবে। এরাই শ্রমিক শ্রেণির মধ্যে বিপ্লবের চেতনা নিয়ে যাবে। এটাই লেনিন দেখিয়েছেন। এ ভাবে এই সব মানুষের মধ্যে মুক্তির চেতনা ধাক্কা দেয়, বিপ্লবের চিন্তাটা ধাক্কা দেয়। দেওয়ার পর সেইখান থেকে তৎক্ষণাৎ তারা সেটা সামাজিক আন্দোলন হিসাবে গ্রহণ করে।
এ ভাবেই সোসালিস্ট মুভমেন্ট, যাকে আমরা সমাজতান্ত্রিক আন্দোলন বা বিপ্লবী আন্দোলন বলি, সেই আন্দোলনের জন্ম হয়।”
বিপ্লবী জীবনই সর্বাপেক্ষা মর্যাদাময়– শিবদাস ঘোষ