এসইউসিআই(সি)-র সাধারণ সম্পাদক কমরেড প্রভাস ঘোষ ১৬ নভেম্বর এক বিবৃতিতে বলেন,
মণিপুরের জিরিবাম জেলার সাম্প্রতিক বীভৎস জাতিদাঙ্গা বহু মানুষের প্রাণ কেড়ে নিয়েছে। গুরুতর আহত অসংখ্য। গ্রামের পর গ্রাম দাঙ্গার আগুনে ভষ্মীভূত। গৃহহীন, খাদ্যহীন অবস্থায় দিন কাটাচ্ছেন শত শত মানুষ। ১৭ মাসের বেশি সময় ধরে এমন ভয়ঙ্কর জাতিদাঙ্গার আগুনে পুড়ছে মণিপুর। এক অংশের মানুষকে অপর অংশের বিরুদ্ধে লড়িয়ে দেওয়ার নেপথ্যে বিজেপিরই যে ভূমিকা আছে সেই অভিযোগ উঠছে। বাস্তবেও তারা এই সংঘর্ষে একটা পক্ষ হিসাবেই অবতীর্ণ হয়েছে। স্পষ্টতই, শোষণ নিপীড়নে দেওয়ালে পিঠ ঠেকে যাওয়া শ্রমজীবী মানুষের ঐক্যবদ্ধ গণআন্দোলনের তরঙ্গকে ঠেকাতে এবং ভোট রাজনীতিতে ফয়দা তুলতে তারা মানুষকে বিভাজিত করতে চাইছে।
খনি ও অন্যান্য ব্যবসায়িক স্বার্থে কর্পোরেট হাঙরদের কাছে মণিপুরের পার্বত্য ভূখণ্ড বিক্রির পথ প্রশস্ত করতে চাইছে তারা। এ জন্য আগেই আদিবাসী ও উপজাতীয়দের জমি অন্যদের কাছে বিক্রি করার পথ প্রশস্ত করতে সংশ্লিষ্ট আইনেও তারা সংশোধনী এনেছে। বাস্তবে কেন্দ্র-রাজ্য উভয় ক্ষেত্রেই ক্ষমতায় আসীন বিজেপি সরকার পরিস্থিতিকে ক্রমাগত খারাপের দিকে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করছে। আরও এক ভয়ঙ্কর ছক তারা করেছে। ধারাবাহিকভাবে দাঙ্গা বাধিয়ে এলাকাকে ‘অশান্ত এলাকা’ হিসেবে চিহ্নিত করে এই ভূখণ্ডে সশস্ত্র বাহিনী মোতায়েন করা ও ‘আফস্পা’র মতো দানবীয় আইন লাগু করার জমি প্রস্তুত করেছে তারা। আমরা দাবি করছি, ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলিকে উপযুক্ত ক্ষতিপূরণ দিতে হবে, বিনামূল্যে আহতদের চিকিৎসা পরিষেবা এবং ক্ষতিগ্রস্ত ঘরবাড়ির পুর্ননির্মাণের ব্যবস্থা সরকারকে করতে হবে। আমরা আরও দাবি জানাচ্ছি, কেন্দ্র ও রাজ্য সরকারকে দ্রুত কার্যকরী পদক্ষেপ নিয়ে রক্তস্নাত ভ্রাতৃঘাতী এই দাঙ্গা যা ইতিমধ্যেই যথেষ্ট মৃত্যু ও ক্ষতির কারণ হয়েছে, তা দমন করতে হবে।
মেইতেই ও কুকি দুই সম্প্রদায়েরই শান্তিপ্রিয় সাধারণ ভারতীয় নাগরিক ও অস্ত্র হাতে তুলে নেওয়া গোষ্ঠীর কাছে আমাদের আবেদন, পুঁজিপতিদের স্বার্থে রচিত ঘৃণ্য সাম্প্রদায়িক বিভাজনের ষড়যন্ত্রকে পরাস্ত করে মণিপুরের শ্রমজীবী সাধারণ মানুষের মধ্যে শান্তি ও সৌভ্রাতৃত্ব প্রতিষ্ঠা করুন।