ছোট ফুলের সুগন্ধ
মুর্শিদাবাদ জেলায় এক রেজিস্ট্রি অফিসে ব্রিগেডের প্রচার নিয়ে গিয়েছিলেন দলের এক কর্মী। কপি রাইটারদের একটি বামপন্থী সংগঠনের সম্পাদকের কাছে গিয়ে যখন তিনি বলতে শুরু করলেন যে, ‘৫ আগস্ট আমাদের …।’ কথা শেষ করতে না দিয়েই ওই ব্যক্তি বলে ওঠেন, ‘শিবদাস ঘোষের জন্মশতবর্ষে ব্রিগেড সমাবেশ– ২৬টি রাজ্য থেকে আপনাদের কমরেডরা আসবেন, বিদেশ থেকেও প্রতিনিধি আসছেন– তাই তো?’ কর্মীটি বলেন, ঠিক তাই। কিন্তু এত বড় কর্মসূচি, অথচ আমাদের না আছে এমএলএ-এমপি, না আছে টাকা-পয়সা। আপনারাই একমাত্র ভরসা। তিনি সঙ্গে সঙ্গে বললেন, কিছু না থাকুক, একটা ছোট ফুল যেমন তার সুগন্ধ চতুর্দিকে ছড়িয়ে সবাইকে মুগ্ধ করে আপনাদের দলটিও ঠিক সেই রকম। এর পর তিনিই উদ্যোগ নিয়ে সবার কাছ থেকে অর্থ সংগ্রহ করে দেন।
সন্তানকে আনা উচিত ছিল
কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের এক কৃতী ছাত্রী, বর্তমানে অধ্যাপিকা, ব্রিগেডে এসেছিলেন। গোটা ব্রিগেড ঘুরে দেখেছেন। পরে এক কর্মীকে বললেন, ‘নিজের সন্তানকে আনা উচিত ছিল। একটা বড় আদর্শের টানে, এক জন বড় মানুষের টানে কেমন করে এত মানুষ শত কষ্ট উপেক্ষা করে এসেছেন! খালি পায়ে, অভুক্ত অবস্থায় কিন্তু হাসি মুখে এক স্বপ্ন নিয়ে সবাই উপস্থিত– এটা পরবর্তী প্রজন্মের কাছে পৌঁছে দেওয়া অভিভাবক হিসাবে আমাদের দায়িত্ব।’ বললেন, এই সমাবেশ একটা শিক্ষা দিয়ে গেল।
গভীর রাজনৈতিক বিশ্লেষণ
এক আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন চিত্র পরিচালক ব্রিগেডে দীর্ঘ সময় কমরেড প্রভাস ঘোষের বক্তব্য শোনার পর বলেন, এটা তো নিছক বত্তৃতা নয়, একটা গভীর রাজনৈতিক বিশ্লেষণ। তিনি কমরেড শিবদাস ঘোষের জীবনের উপর প্রদর্শনী দেখে আবেগের সাথে বলেন, ‘এই বড় মানুষের মৃত্যু হয় না, হতে পারে না। লক্ষ লক্ষ নতুন প্রাণে কেমন করে ওনার আদর্শ, ওনার শিক্ষা সঞ্চারিত হচ্ছে! এটা ইতিহাসের এক অধ্যায়।’ সভা শেষে আন্তর্জাতিক সঙ্গীত চলার সময় আবেগে তাঁর দু’চোখ বেয়ে নামল জলের ধারা।